এই মোটরবাইকেই বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কনভয়ের একটি গাড়ি ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কনভয়ের একটি গাড়ির আঘাতে আহত হলেন এক মহিলা। অভিযোগ রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের মদ দোকান মোড় এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, আহত মহিলার নাম হেনা বিবি। তাঁকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ, ধাক্কা লাগা সত্ত্বেও কনভয় দাঁড়ায়নি। তাই ক্ষোভে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ উঠে যায়। এ নিয়ে এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ করা হয়নি।
যদিও দিলীপ বলেন, ‘‘কেউ ধাক্কা মারেনি। বাইকে করে দু’জন আসছিলেন। ঘাবড়ে গিয়ে পুলিশের গাড়িতে বাইকের হ্যান্ডেলটা লাগিয়ে দেয়। যিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন তাঁর কিছু হয়নি। যিনি পিছনে ছিলেন তিনি পড়ে যান। কোনও চোট লাগেনি। তৃণমূল মুখ দেখানোর জায়গা পাচ্ছে না বলে অকারণ বিষয়টাকে জটিল করতে চাইছে। রাস্তা আটকাতে গিয়েছিল। পুলিশ সামনে ছিল। পুলিশ সরিয়ে দিয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মে-তে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে বিধানসভায় বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে থাকা একটি গাড়ির ধাক্কায় এক সাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। এ দিনের ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে গেল দিলীপের কনভয়ের একটি গাড়ি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ এ দিন, হেনা স্বামীর সঙ্গে মোটরবাইকের পিছনে বসে গোপালপুর থেকে সিউড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। তখন বক্রেশ্বর থেকে আমোদপুর যাচ্ছিল দিলীপের কনভয়। মদ দোকান মোড়ে ওই কনভয়ের একটি গাড়ি মোটরবাইকের গায়ে ধাক্কা মারলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হেনা রাস্তার উপর পড়ে যান বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের ক্ষোভ, ঘটনা ঘটার পরে না থেমে, কনভয় বেরিয়ে যায়। এর পরে বেশ কিছুক্ষণ সিউড়ি-রাজনগর রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
হেনার স্বামী শেখ মোতাহার বলেন, “দিলীপ ঘোষের সঙ্গে পুলিশের যে গাড়িটি ছিল, সেটাই আমাকে পিছন থেকে এসে ধাক্কা মারে। প্রচণ্ড জোরে গাড়ি চলছিল। আমি স্বাভাবিক গতিতে আমার স্ত্রীকে নিয়ে সিউড়ি সদর হাসপাতালে এক রোগীকে দেখতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎই আমাকে ধাক্কা মারে। আমার স্ত্রী পড়ে গিয়ে চোট পান। কিন্তু ধাক্কা লাগার পরেও ওদের গাড়ি দাঁড়ায়নি।”
দুর্ঘটনার পরেই দ্রুত আহত হেনাকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতের হাতে, পায়ে ও কোমরে কয়েকটি জায়গায় কেটে গিয়েছে এবং ধাক্কা লেগেছে। তবে আঘাত খুব একটা গুরুতর নয় বলেই জানা গিয়েছে। তবে এ দিন সন্ধ্যা এ নিয়ে সিউড়ি থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
এই ঘটনায় স্থানীয়দের সঙ্গে পথ অবরোধে শামিল হন কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিজেপির নেতারা কথায় কথায় তৃণমূল সরকারের তথা মুখ্যমন্ত্রীর খুঁত খোঁজেন, মানবিকতার পাঠ দেন। কিছু নিজেদের ক্ষেত্রে সেই মানবিকতা কোথায় যায়? আমরা চাই, নজর-ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে ওই গাড়ির চালক এবং দিলীপ ঘোষকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক।”