এ বার বাড়িতেই হলুদ আর কয়েকটি ঘরোয়া উপাদান দিয়ে বানিয়ে ফেলুন চমৎকার ফেসপ্যাক।
কলকাতায় বাড়ছে দূষণ। শহরের দূষণের জেরে ত্বকের উপর আপনার অজান্তেই হয়ে চলেছে দেদার অত্যাচার। শত ব্যস্ততার মাঝে বাড়িতে রূপচর্চার জন্য সময় বার করা কঠিন। তাই পার্লারমুখী হতেই হয়। সতেজ, কোমল ত্বক পেতে খরচ করতে হয় হাজার হাজার টাকা। অথচ উপায় জানলে বাড়িতেই সামান্য কিছু ঘরোয়া উপাদান দিয়ে চটজলদি বানিয়ে ফেলতে পারেন দারুণ সব ফেসপ্যাক।
ত্বকের পরিচর্যায় হলুদের ব্যবহার দীর্ঘদিনের। ত্বককে উজ্জ্বল করতে, র্যাশ-ব্রণর সমস্যা দূর করতে হলুদের কোনও জবাব নেই। সুন্দর, নমনীয় ও মসৃণ ত্বক পেতে ভরসা রাখতে পারেন হলুদের উপর।পার্লারে নয়, এ বার বাড়িতেই হলুদ আর কয়েকটি ঘরোয়া উপাদান দিয়ে বানিয়ে ফেলুন চমৎকার ফেসপ্যাক।
হলুদ,মধু এবং দুধের প্যাক: ১/৪ চামচ হলুদ গুঁড়ো, এক চামচ মধু আর দু’চামচ কাঁচা দুধ মিশিয়ে একটা ফেসপ্যাক তৈরি করে নিন। প্রথমে ক্লিনসার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। তারপর বানিয়ে রাখা প্যাকটি আলতো হাতে সারা মুখে লাগিয়ে নিন। দশ থেকে পনেরো মিনিট অপেক্ষা করুন। প্যাকটি শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মধু ত্বককে হাইড্রেট রাখে। হলুদের অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল উপাদান ত্বকের ব্রণ হওয়ার প্রবণতা হ্রাস করে। দুধে প্রচুর পরিমাণ মিনারেল এবং ভিটামিন থাকায় তা ত্বকের মৃত কোষকে দূর করে, ত্বককে কোমল করে তোলে। এই ফেসপ্যাক ত্বকের বলিরেখা দূরকরতে বিশেষ কার্যকর। সপ্তাহে এক বার এই প্যাক ব্যবহার করুন, উপকার মিলবে হাতেনাতে।
আরও পড়ুন:ফাস্ট ফুডের জামানায় শরীরে মেদ জমছে টিনএজেই, কী করে আটকাবেন ক্ষতি?
ত্বককে উজ্জ্বল করতে, র্যাশ-ব্রণর সমস্যা দূর করতে হলুদের কোনও জবাব নেই
হলুদ, অ্যাভোকাডো এবং টক দইয়ের প্যাক: ১/৪ চা চামচ হলুদের গুঁড়ো, এক টেবিল চামচ অ্যাভোকাডার পেস্ট এবং এক চা চামচ টকদই একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। প্যাকটি ত্বকে ব্যবহার করুন। ১০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। অ্যাভোকোডার ভিটামিন-ই, ন্যাচারাল অয়েল এবং ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বককে হাইড্রেট করেতে সাহায্য করে। এর অ্যান্টিইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টিএজিং উপাদান ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে বিশেষ কার্যকর। অ্যাভোকোডো এখন প্রায় সব সুপার মার্কেটেই পাওয়া যায়।
হলুদ, বেসন এবং গোলাপ জলের প্যাক: বেসন ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে ত্বককে রাখে ব্যাকটিরিয়ামুক্ত রাখে। ব্রণ হওয়ার প্রবণতাও হ্রাস করে।১/৪ চামচ হলুদ গুঁড়ো,২ টেবিল চামচ বেসন, আর খানিকটা গোলাপ জল একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। প্যাকটি ব্যবহারের আগে মুখটি জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তারপর পেস্টটি ত্বকে ব্যবহার করুন। ১০-১৫ মিনিট পর ফেসপ্যাকটি শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক সপ্তাহে দু’বার ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের ব্রণর প্রবণতা হ্রাস করতে বিশেষ উপকারী।
আরও পড়ুন: শহরে ফাস্টফুডের অবাধ হাতছানিতে বেড়েছে ওজন? এখন কী ডায়েটে কমবে মেদ?
হলুদ, লেবুর রস এবং মধু: লেবুর রস ত্বকের কালো দাগ, ব্রণর দাগ দূর করতে সাহায্য করে। ত্বকের রোমকূপ সংকুচিত করে থাকে। মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। শুধু তাই নয়, মধু ব্রণ হওয়ার প্রবণতাও রোধ করে।১/৪ চা চামচ হলুদের গুঁড়ো, ১ চা চামচ লেবুর রস এবং ১ টেবিল চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এই প্যাকটি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম জলে দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।এই প্যাকটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন। নিয়মিত ব্যবহারে এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে।
হলুদ, টকদই এবং টমেটো মাস্ক: ত্বকের সানবার্ন দূর করতে এই প্যাকটি বেশ কার্যকর। ত্বকের ঔজ্বল্য ফিরিয়ে আনতে হলে এই প্যাক ভীষণ কার্যকর। ১/৪ টেবিল চামচ হলুদের গুঁড়ো, ১ টেবিল চামচ টকদই, ১ টেবিল চামচ টমেটোর পিউরি মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। এটি ত্বকে ব্যবহার করুন। ১০-১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
হলুদ দিযে তৈরি প্যাক কখনওই ১৫ থেকে ২০ মিনিটের বেশি লাগিয়ে রেখে দেবেন না। না হলে মুখ কালো হয়ে যাবে। এই ফেসপ্যাক লাগানোর পর মুখে ফেসওয়াশ ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে হলুদের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়।