ঘন ঘন বিড়িতে টান দিলে ফুসফুসের প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমতে শুরু করে।
শহর জুড়ে দূষণের মাত্রা বেড়েই চলেছে। যানবাহনের দূষিত ধোঁয়া তো আছেই, তার উপর যুক্ত হয় বিড়ি–সিগারেটের ধোঁয়েও। ধোঁয়ায় থাকাদূষিত ক্ষতিকর রাসায়নিকের প্রভাবে ফুসফুসে ক্ষতি হয়। যার ফল ‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ’ বা সিওপিডি নামের শ্বাসকষ্টের অসুখ।
ফুসফুসের ক্ষতকতটা হচ্ছে, কত দিনে পর আপনার উপর প্রভাব ফেলতে পারে তার সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলা যায় না। দিনে যদি ১০–১২টার বেশি সিগারেট খাওয়া হয়, তবে ৫–৭ বছরের মধ্যে সিওপিডি-তে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ঘোর৷ ঘন ঘন বিড়িতে টান দিলে শরীরের উপর খারাপ রাসায়নিক প্রভাব বেশি পরতে পারবে।
শুরুর দিকে ঘুম থেকে ওঠামাত্র কাশি হতে থাকে, কাশতে কাশতে কিছুটা কফ উঠলে কষ্ট খানিকটা কমে। এর পর যত দিন যায় ফুসফুসের দুটো–চারটে কোষ অকেজো হতে শুরু করে। ফুসফুসের মধ্যে দিয়ে বাতাস চলাচলে বাধাঘটলেই দেখা দেয় সিওপিডি-র মতো রোগ। যে সব কোষ অকেজো হয়ে যায় তা আর পুণরায় ঠিক হয় না৷ ফলে রোগ যতখানি এগিয়ে গিয়েছে, তাকে আর ঠিক করার সম্ভাবনা থাকে না। তবে যদি বিড়ি–সিগারেট ছেড়ে ভাল করে চিকিৎসা করানো যায়, তবে রোগ নিয়ন্ত্রণএ থাকে।
সিওপিডি–র শুরুতে লাগাতার কাশি ও অল্পস্বল্প শ্বাসকষ্টশুরু হয়। বেশি খাটাখাটনি করলে তা আরও বাড়ে যায়। পরের দিকে কাজকর্ম না করলেও দমের ঘাটতি হতে থাকে। ফুসফুসের প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমতে শুরু করে। ঋতু পরিবর্তনের সময় ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বেড়ে যায়, বুকে কফ বসলে শুরু হয় প্রবল শ্বাসকষ্ট। প্রথম দিকে সে কষ্ট ওষুধে কমে৷ কিন্তু পরে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করতে হয়।
সিওপিডি–র শুরুতে লাগাতার কাশি ও অল্পস্বল্প শ্বাসকষ্টশুরু হয়
অসুখ সারাতে মেনে চলুন
•ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে হলে নিয়মিত হাঁটাচলা ও হালকা ব্যায়াম মধ্যে থাকতে হবে। বেশিকরে ব্রিদিং এক্সারসাইজ করতে হবে।
•রোগ ধাপ যদি এগিয়ে যায় তবে পাঁচ বছর অন্তর নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন নিন। এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন নিন অক্টোবর–নভেম্বর মাসে।
•যেহেতু এই রোগ আপনার শরীরকে ক্ষত করছে ফলে এতে আপনার ওজন কমতে পারে। কাজেই খাদ্য তালিকায় রাখুন প্রোটিনসমৃদ্ধ সুষম খাবার। সঙ্গে খান ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার— যেমন, টাটকা রঙিন শাকসব্জি ও ফল, শুকনো ফল, বাদাম।
•ধোঁয়া, ধুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করুন। বিড়ি–সিগারেট থেকে দূরে থাকুন। কোনও ভাবেই প্যাসিভ স্মোকিংও চলবে না। রাস্তাঘাটে কেউ ধূমপান করলে হয় তাকে এড়িয়ে চলুন বা নাকে চাপা দিন।