Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

প্রত্যাশা ‘অপূর্ণ’, হাওয়া  কাড়তে মরিয়া সবাই

আবার গত বছরের পঞ্চায়েত ভোটেই বলরামপুর ব্লকে পাশা বদলে গিয়েছে। এ বার সাতটি পঞ্চায়েত ও দু’টি জেলা পরিষদ আসনের সবগুলিই দখল করেছে তৃণমূল।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

প্রশান্ত পাল 
বলরামপুর শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২৪ ০৯:০১
Share: Save:

বহু আন্দোলনের ধাত্রীভূমি বলরামপুর এ বার কী দিক নির্দেশ করছে? জানতে আগ্রহী সব মহল।

রাজ্যে পালাবদলের পরে তৃণমূলের খাসতালুক হয়ে ওঠা বলরামপুরই ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় গেরুয়া ঝড়ের ইঙ্গিত দিয়েছিল। সে বার বলরামপুর ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েত ও দু’টি জেলা পরিষদ আসনের সবগুলিই দখল করেছিল বিজেপি। পঞ্চায়েত সমিতির ২০টির মধ্যে ১৭টি আসন ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। তারপরে লোকসভা থেকে বিধানসভা ভোট— এই জেলায় বিজেপির ধারাবাহিক উত্থান দেখা গিয়েছে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

আবার গত বছরের পঞ্চায়েত ভোটেই বলরামপুর ব্লকে পাশা বদলে গিয়েছে। এ বার সাতটি পঞ্চায়েত ও দু’টি জেলা পরিষদ আসনের সবগুলিই দখল করেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত সমিতির ২১টি আসনের (এ বার একটি আসন বেড়েছে) ১৯টিই তৃণমূলের দখলে এসেছে। এর প্রভাব কি এ বার পুরুলিয়ায় লোকসভা ভোটে পড়বে, চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে।

ইতিহাস সাক্ষী, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা, বিহার, ওড়িশার দেওয়ানি লাভের পরে জমি জরিপ করে খাজনা নির্ধারণ করায় কৃষক বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল বলরামপুর, বরাবাজার, কুইলাপাল, মানবাজার এলাকায়। যা পরে চুয়াড় বিদ্রোহ নামে পরিচিত।মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনকে কেন্দ্র করে লাক্ষা শিল্পে ধর্মঘটের জেরে জেলায় কমিউনিস্ট পার্টির সূচনাও হয় এই এলাকাতেই।

বিজেপির কাছেও বলরামপুরের গুরুত্ব অনেকখানি। ২০১৯ সালের পঞ্চায়েত ভোটের ফল প্রকাশের পরে ক’দিনের ব্যবধানে বলরামপুরের সুপুরডি ও ডাভা গ্রামে দুই বিজেপি কর্মী ত্রিলোচন মাহাতো ও দুলাল কুমারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনাকে ঘিরে তৃণমূলকে নিশানা করে জেলা জুড়ে আন্দোলনে নামে গেরুয়া শিবির। ঘটনার পরে বলরামপুরে আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। লোকসভা ভোটে বলরামপুরেই সভা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

গত বিধানসভা ভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে তৃণমূলের শান্তিরাম মাহাতোকে ৪২৩ ভোটে বিজেপির কাছে হারতে হয়। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বলরামপুর এ বারও তাদের ফেরাবে না।

কিন্তু বলরামপুর বিধানসভার বাসিন্দারা কী বলছেন?

এক সময় লাক্ষা শিল্প বলরামপুরকে পরিচিতি দিয়েছিল। এই শিল্পের হাত ধরে আসত বিদেশি মুদ্রা, ফুলেফেঁপে উঠেছিল এলাকার অর্থনীতি। কিন্তু সেই শিল্প বাম আমল থেকেই ধুঁকছে। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, লাক্ষা শিল্পকে ঘিরে ক্লাস্টার গড়ে তোলা হয়েছে। যদি তাতে এই শিল্প কতটা লাভবান হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

বিজেপি নেতৃত্ব বলরামপুরকে রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্ব দেওয়ায় এখানকার মানুষের প্রত্যাশা ছিল, বরাভূম স্টেশনে আরও ট্রেন মিলবে। তাতে এলাকার চাষিরা আরও বেশি জাযগায় আনাজ রফতানি করতে পারবেন। রাঙাডি লেভেল ক্রসিংয়ে উড়ালপুল গড়ে উঠবে। সর্বোপরি লাক্ষা শিল্প আগের জায়গায় ফিরবে। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। উল্টে চালু ট্রেন কোভিডের সময় থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভাড়া বেড়েছে লোকাল ট্রেনের। বরাভূম মডেল স্টেশন করার কথা ঘোষণা হলেও হয়নি।

অন্য এক পক্ষের দাবি, রাজ্য সরকারই বা কতটা প্রত্যাশা পূরণ করেছে? অভিযোগ, বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের সংযোগ দিতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ চলছে। সে কারণে নলবাহিত জল সরবরাহও বন্ধ রয়েছে। বলরামপুরের নিকাশি ব্যবস্থা, পাড়াগুলির রাস্তাঘাট, দৈনিক বাজারের অবস্থা বেহাল। কমিউনিটি হল নিরাপত্তা বাহিনীর দখলে। নতুন কমিউনিটি হল গড়ার দাবি উপেক্ষিতই। বলরামপুর-জয়পুর সীমানায় কংসাবতী নদীর উপর সেতু গড়ার দাবি শিলান্যাসেই আটকে রয়েছে প্রায় আট বছর। দলে দ্বন্দ্বের চোরাস্রোতও তৃণমূলের দুশ্চিন্তার অন্যতম কারণ।

তবে তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি তথা দলের লোকসভা নির্বাচন কমিটির সদস্য সুষেণচন্দ্র মাঝির দাবি, ‘‘আমাদের সরকারই বলরামপুরে শান্তি ফিরিয়েছে। উন্নয়ন করে যাচ্ছে। আঠারোর পঞ্চায়েত বা ঊনিশের লোকসভা ভোট অতীত। পঞ্চায়েত ভোটে আমরা বলরামপুরে ২০ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছি। এ বার তার থেকে বেশি ভোটে এখানে এগিয়ে থাকবে তৃণমূল।’’

পাল্টা বলরামপুরের বিজেপি বিধায়ক বাণেশ্বর মাহাতোর দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট কী ভাবে হয়েছিল, মানুষ তা জানেন। সেই ভোটে কি মানুষের রায়ের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটেছিল? আমরা নিশ্চিত, এখানে ২০ হাজারের বেশি ভোটে বিজেপি এগিয়ে থাকবে।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 balarampur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE