অত্যাধুনিক সশস্ত্র ড্রোনের মালিক হল পাকিস্তান। সৌজন্যে সম্ভবত চিন। যদিও ইসলামাবাদের দাবি, এই নতুন ড্রোন ‘বারাক’ পুরোপুরি পাক প্রযুক্তিতেই তৈরি। কিন্তু তা মানতে নারাজ পশ্চিমি দেশগুলির প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। তবে যে কারখানাতেই ‘বারাক’ তৈরি হয়ে থাক, তার দৌলতে কিন্তু ড্রোন সমরকৌশলের অভিজাত ক্লাবে ঢুকে পড়ল ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার আফগান সীমান্তের কাছে সশস্ত্র ড্রোন ‘বারাক’ জঙ্গি ডেরায় হামলা চালিয়েছে। বারাক থেকে ছোড়া লেসার-নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র তিন জন জঙ্গির প্রাণও নিয়েছে। বারাকের মতো অত্যাধুনিক ড্রোন হাতে আসার কথা পাকিস্তান অবশ্য আগেই জানিয়েছিল। গত মার্চেই ইসলামাবাদ ঘোষণা করে, বারাক থেকে নিক্ষেপ করা হবে ‘বার্ক’ ক্ষেপণাস্ত্র। আঘাত হানা হবে নির্ভুল লক্ষ্যে। আর জানানো হয়েছিল, সব ধরনের আবহাওয়াতেই কাজ করতে সক্ষম বারাক। এর বাইরে বারাকের ক্ষমতা বা প্রযুক্তিগত খুঁটিনাটি নিয়ে আর একটি শব্দও খরচ করতে চায়নি পাকিস্তান। রবিবারের অভিযানে বারাকের সাফল্যের কথা তুলে ধরলেও, এর প্রযুক্তিগত বিষয় নিয়ে পাক সেনার মুখপাত্ররা এখনও স্পিকটি নট।
চালকহীন বিমান এখন আর বিশ্বের কাছে নতুন কিছু নয়। অনেক দেশের হাতেই এই প্রযুক্তি রয়েছে। তবে নজরদারির কাজেই তা মূলত ব্যবহৃত হয়। হাতে গোনা কয়েকটি দেশ যুদ্ধে হামলা চালানোর কাজে ড্রোন ব্যবহার করে। সশস্ত্র ড্রোন ব্যবহারকারীদের তালিকায় এতদিন ছিল শুধুমাত্র আমেরিকা, ইজরায়েল, ব্রিটেন এবং নাইজিরিয়া। এ বার পঞ্চম দেশ হিসেবে সেই ক্লাবে যোগ দিল পাকিস্তান। সে দেশের তরফে বার বার দাবি করা হচ্ছে, পাক বিজ্ঞানীরাই তৈরি করেছেন বারাক। কিন্তু, বারাকের প্রযুক্তিগত বিষয় নিয়ে পাকিস্তানের ঢাক ঢাক গুড় গুড় সন্দেহ বাড়িয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা বিশষজ্ঞদের। লন্ডনের রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর এলিজাবেথ কুইন্টানা খুব আত্মবিশ্বাস নিয়ে বললেন, “পাকিস্তান নিশ্চিত ভাবে চিনের সাহায্য নিয়েছে।” চিন তাদের সশস্ত্র ড্রোন সিএইচ-৩ যে বিদেশে রফতানি করছে, তা আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল। গত জানুয়ারিতে নাইজিরিয়ার বোর্নো প্রদেশে একটি সিএইচ-৩ ড্রোন ভেঙে পড়ে। ওই ড্রোনটির সাহায্যে নাইজিরিয়ার সরকার বোকো হারাম জঙ্গিদের ঘঁটিতে আক্রমণ চালাচ্ছিল। তখনই দুর্ঘটনা ঘটে। তাতেই জানা যায়, চিন নাইজিরিয়াকে সশস্ত্র ড্রোন বিক্রি করেছে।
গত মাসে চিনের তরফে সে দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম জিনহুয়াতে জানানো হয়, কিছু উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন রফতানি করা সরকার বন্ধ করবে। কারণ, তা চিনের জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে। এর থেকেই স্পষ্ট অগস্টের আগে পর্যন্ত চিন উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন অন্য দেশকে বিক্রি করেছে। আর পাকিস্তান গত মার্চেই জানিয়েছিল, তাদের অস্ত্রাগারে বারাকের অন্তর্ভুক্তির কথা।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ স্বাভাবিক ভাবেই দু’য়ে-দু’য়ে চার করেছে। চিনের সঙ্গে পাকিস্তানের এই ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতাও তারা ভালো চোখে দেখছে না। সেন্টার ফর আ নিউ আমেরিকান সিকিওরিটি-র কর্তা কেলি সেলার বললেন, “যদি ড্রোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনও সীমারেখা না থাকে, বিশেষত সীমান্ত পার হয়ে অভিযান চালানোর ক্ষেত্রে, তাহলে বিষয়টি স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy