গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পেরিয়ে গিয়েছে ছ’মাস। কিন্তু ইউক্রেনকে ‘শিক্ষা দিতে’ যুদ্ধে নেমে এখনও সাফল্য পায়নি রাশিয়া। ফলে প্রশ্ন উঠেছে ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনীর যোগ্যতা এবং পেশাদারি দক্ষতা নিয়ে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। তার ছ’মাস পরে বর্তমানে পরিস্থিতি ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে? আন্তর্জাতিক সামরিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, ইউক্রেনের ৩০ শতাংশ এলাকাও দখলে নিতে পারেনি রুশ ফৌজ। দক্ষিণের ওডেসা থেকে পূর্বে ডনবাস পর্যন্ত বিভিন্ন ফ্রন্টে সফল ভাবে মস্কোর বাহিনীর মোকাবিলা করছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অনুগত সেনারা। যুদ্ধের গোড়ায় ইউক্রেনের রাজধানী কিভের অদূরে পৌঁছে গেলেও প্রবল প্রতিরোধের জেরে পিছু হটতে হয়েছে রাশিয়ার সেনাকে। এমনকি, দখল করা খেরসন এলাকাতেও ইউক্রেন সেনার পাল্টা হামলায় চাপের মুখে পড়েছে মস্কো।
যদিও বিশ্বের অন্যতম সেরা রুশ বাহিনীর সঙ্গে ‘অসম লড়াইয়ে’ ইউক্রেনের এমন সাফল্য আঁচ করতে পারেনি আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়া। বরং যুদ্ধ শুরুর আগে আমেরিকা সেনার ‘জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ’ কমিটির চেয়ারম্যান মার্ক মিলি, সেনেট এবং ‘হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভস’-কে জানিয়েছিলেন, হামলা শুরুর ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই কিভের দখল নিতে পারে পুতিনের সেনা। কিন্তু ছ’মাস পরেও সেই ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ মেলার ইঙ্গিত নেই। পাশাপাশি, ছ’মাসের যুদ্ধে রুশ সেনার প্রায় দু’জন লেফটেন্যান্ট জেনারেল, মেজর জেনারেল স্তরের সেনা আধিকারিক ইউক্রেন ফৌজের পাল্টা হামলায় নিহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে মস্কোর ‘প্রকৃত শক্তি’ নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে শুরু হয়েছে আলোচনা।
স্কটল্যান্ডের সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামরিক কৌশল সংক্রান্ত বিভাগের অধ্যাপক ফিলিপস ও’ব্রায়েন বুধবার বলেন, ‘‘আমেরিকা তো নয়ই, নেটো জোটের অনেক মাঝারি দেশের সমকক্ষও নয় রাশিয়ার বাহিনী। ইউক্রেন যুদ্ধ বুঝিয়ে দিয়েছে, ব্রিটিশ, ফরাসি বা ইজরায়েলের যে ভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জটিল সামরিক অভিযান চালাতে সক্ষম, রাশিয়া তা পারে না। এমনকি, তারা এখন দ্বিতীয় স্তরের সামরিক শক্তিও নয়।’’
গত ৪ জুন যুদ্ধের ১০০ দিনে জেলেনস্কি আন্তর্জাতিক দুনিয়াকে জানিয়েছিলেন, তাঁদের দেশের ২০ শতাংশ রাশিয়া দখল করেছে। এর পর পুতিন পূর্ব ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল (যাদের একত্রে ‘ডনবাস’ বলা হয়) সামরিক অভিযান কেন্দ্রীভূত করেন। যুদ্ধ ঘোষণার আগেই রুশ জনগোষ্ঠী-গরিষ্ঠ ওই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন তিনি। গত কয়েক বছর ধরে সেখানে মস্কো-পন্থী সশস্ত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলি সক্রিয়। কিন্তু এখনও ডনবাসে নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি মস্কো।
চলতি সপ্তাহে পেন্টাগন প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দাবি, যুদ্ধের প্রথম ছ’মাসে ৭০ থেকে ৮০ হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছেন। দৈনিক গড়ে প্রায় ২০০ জন! আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়ার পাঠানো অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম ইউক্রেন সেনা সঠিক ভাবে ব্যবহারে সক্ষম হয়েছে বলেও ওই রিপোর্টে দাবি। যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার জেরে ধাক্কা খেয়েছে রাশিয়ার অর্থনীতিও। এই পরিস্থিতিতে পুতিন আর কত দিন সামরিক অভিযান চালিয়ে যেতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy