আমেরিকার মাটিতে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মেনে নিলেন, তাঁর দেশে এখনও ৩০ থেকে ৪০ হাজার জঙ্গি রয়েছে। এই জঙ্গিদের অধিকাংশই আফগানিস্তান বা কাশ্মীরে লড়াই করেছে। জঙ্গি সংগঠনগুলির উপস্থিতি নিয়ে আগের কোনও পাক সরকার আমেরিকাকে সঠিক তথ্য দেয়নি বলেও দাবি তাঁর।
আজ মার্কিন কংগ্রেসের পাকিস্তান সমর্থক সদস্যদের আয়োজিত অনুষ্ঠানে যান ইমরান। তার পরে যান একটি মার্কিন বিশেষজ্ঞ সংস্থার অনুষ্ঠানে। দু’টি অনুষ্ঠানেই তিনি পাকিস্তানে জঙ্গি সক্রিয়তা বৃদ্ধি ও তা নিয়ে আমেরিকাকে তথ্য না-দেওয়ার দায় চাপাতে চেয়েছেন আগের পাক সরকারের উপরে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পাকিস্তানে এখনও ৩০ থেকে ৪০ হাজার জঙ্গি রয়েছে। তাদের অনেকেই আফগানিস্তান ও কাশ্মীরে লড়াই করেছে। ২০১৪ সালে পাকিস্তানে সেনা স্কুলে জঙ্গি হামলার পরে সব রাজনৈতিক দল জঙ্গি-বিরোধী জাতীয় নীতিতে স্বাক্ষর করেছিল। কিন্তু আমাদের সরকারই প্রথম জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির নিরস্ত্রীকরণের কাজ শুরু করেছে।’’ ইমরানের দাবি, ‘‘আমরা জঙ্গি সংগঠনগুলির মাদ্রাসা, প্রতিষ্ঠানের দখল নিয়েছি। সেখানে প্রশাসক বসানো হয়েছে।’’
ইমরানের কথায়, ‘‘আগের পাক সরকার আমেরিকাকে জঙ্গি সক্রিয়তা নিয়ে সঠিক তথ্য দেয়নি। এক সময়ে পাকিস্তানে ৪০টি জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় ছিল। তখন আমেরিকা চেয়েছিল আমরা সন্ত্রাস-বিরোধী লড়াইয়ে তাদের আরও বেশি সাহায্য করি। কিন্তু আমরা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে লড়াই করছিলাম। তৎকালীন পাক সরকার দেশের সব শক্তিকে নিয়ন্ত্রণও করতে পারেনি।’’
মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের অনুষ্ঠানে আফগানিস্তান নিয়েও মুখ খুলেছেন ইমরান। তিনি বলেন, ‘‘আফগান শান্তি প্রক্রিয়ায় তালিবানকে শামিল করতে আমরা সব রকম চেষ্টা করব। এখনও অবধি আফগান সরকারের সঙ্গে তালিবান সরাসরি কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে আমাদের উদ্যোগের ফল মিলছে। তবে ওই প্রক্রিয়া সহজ হবে না।’’
ভারতীয় কূটনীতিকদের মতে, আফগানিস্তানে সাহায্যের পরিবর্তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে কাশ্মীরে হস্তক্ষেপ করতে অনুরোধ করে থাকতে পারেন ইমরান। তার জেরেও ট্রাম্প কাশ্মীরে মধ্যস্থতা নিয়ে মুখ খুলে থাকতে পারেন। কিন্তু ভারত কড়া প্রতিক্রিয়া জানানোর পরে পরিস্থিতি সামলাতে মার্কিন বিদেশ দফতর কিছুটা সুর বদলেছে। কাশ্মীরে মধ্যস্থতা থেকে কাশ্মীরে সন্ত্রাস-দমনের দিকে চলে যাওয়ার ইঙ্গিত দেখা গিয়েছে ওয়াশিংটনের ওই বিবৃতিতে। এ দিনও ইমরানের সঙ্গে বৈঠকের পরে বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়োর তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে ধারবাহিক ভাবে পদক্ষেপ করা হবে বলে আশা আমেরিকার। ফলে ইমরানও বোঝানোর চেষ্টা করছেন, জঙ্গি-দমনে তিনি সত্যিই আন্তরিক। তবে পাক প্রধানমন্ত্রীর তরফে এখনও কাশ্মীরে সন্ত্রাস-দমনে তেমন আন্তরিকতার সম্ভাবনা দেখছেন না ভারতীয় কূটনীতিকেরা। কারণ, গত কালই ইমরান দাবি করেছেন পুলওয়ামা হামলা ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ’ গোলমালের ফল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy