গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে চিনের আর্জিতে সাড়া দিয়ে শুক্রবার রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসতে চলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। এ দিন নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের কার্যালয়ে স্থানীয় সময় সকাল ১০টা অর্থাৎ ভারতীয় সময়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ওই বৈঠক হবে বলে জানা গিয়েছে। ১৯৬৫ সালের পর এই নিয়ে দ্বিতীয় বার রুদ্ধদ্বার বৈঠক হতে চলেছে।
কাশ্মীর নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠকের বিষয়টিকে তাদের কূটনৈতিক জয় হিসেবেই দাবি করেছে পাকিস্তান। পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেন, “চার দশক পর নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর প্রসঙ্গ নিয়ে যে বৈঠক হতে চলেছে তা নজিরবিহীন।” কুরেশির মন্তব্যকে উদ্ধৃত করে পাক সরকারি সংবাদমাধ্যম পিটিভি জানিয়েছে, এটা দু’দেশের জমি সংক্রান্ত বিষয় নয়, এটা মানবিকতার বিষয়। বিশ্বকে এটা বুঝতে হবে।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ এবং তাকে দু’ভাগ করার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদকে চিঠি দিয়েছিল পাকিস্তান। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদে যায় চিনও। অগস্ট মাসের জন্য পরিষদের সভাপতিত্বকারী দেশ পোল্যান্ডকে চিন চিঠি দিয়ে জানায়, এই বিষয়ে তাঁরা গোপন বৈঠক চায়। রাষ্ট্রপুঞ্জের কূটনীতিবিদ প্রথমে জানিয়েছিলেন, এখনই ওই বৈঠকের দিন ক্ষণ বলা সম্ভব নয়। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ও অস্থায়ী অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অবশেষে শুক্রবার ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয় নিরাপত্তা পরিষদ। নিরাপত্তা পরিষদের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সিরিয়া ও মধ্য আফ্রিকার বিষয় নিয়ে আলোচনা চলাকালীন পাকিস্তানের চিঠির প্রসঙ্গটা তোলে চিন।
আরও পড়ুন: তিন সামরিক বাহিনীর সমন্বয়ে নয়া পদের ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে নির্বিঘ্নে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান, শ্রীনগরে ‘ভিড়’ আমলাদেরই
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০অনুচ্ছেদ বিলোপ নিয়ে প্রথম থেকেই তীব্র আপত্তি জানিয়ে আসছে পাকিস্তান। এটা ভারতের একতরফা সিদ্ধান্ত, এই অভিযোগ তুলে নিরাপত্তা পরিষদের দ্বারস্থ হয় তারা। পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মহম্মদ কুরেশি নিরাপত্তা পরিষদে চিঠি দেন। চিঠিতে রীতিমতো হুমকির সুরে বলা হয়, ‘আমরা কোনও দ্বন্দ্ব চাই না। কিন্তু ভারত যেন আমাদের সংযমকে দুর্বলতা না ভাবে।’
অন্য দিকে, আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন আদায়ের জন্য জোরদার চেষ্টাও চালান পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কিন্তু খালি হাতেই ফিরতে হয় তাঁকে। আমেরিকা তো বটেই, ফ্রান্স, রাশিয়া, ব্রিটেন কোনও দেশই এ ব্যাপারে নাক গলাতে চায়নি। এটা ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলেই সকলে একযোগে জানায়। বিষয়টি নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় তাদের সংযত থাকার পরামর্শও দেয় তারা। সংযত থাকার কথা বলেন রাষ্ট্রপুঞ্জ প্রধান অ্যান্তোনিও গুতেরেসও। ফলে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের বিরুদ্ধে গিয়ে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি পাকিস্তান। নিরাপত্তা পরিষদের চার সদস্যকে পাশে না পেলেও, চিন কিন্তু এ ব্যাপারে পাকিস্তানের পাশেই দাঁড়িয়েছে। কয়েক দিন আগেই চিনের সমর্থন পেতে সে দেশে যান পাক বিদেশমন্ত্রী। পরে তিনি দাবি করেন, চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই পাকিস্তানের পক্ষে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। অন্য দিকে, ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও চিনের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক পক্ষে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কাশ্মীর ইস্যু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy