Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
গাজায় নিহতের সংখ্যা ১৯০০ ছাড়াল

সাত ঘণ্টার শান্তি উধাও সাত মিনিটেই

সাত ঘণ্টার প্রতিশ্রুতি ভাঙতে লাগল মিনিট সাতেক! গাজায় আরও এক বার সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণা এবং তার অব্যবহিত পরেই ফের বোমাবর্ষণ। আজ আরও এক বার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের খেসারত দিতে হল গাজার আরও একটি ত্রাণশিবিরকে। গত কাল রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি স্কুলে মারণ হামলা করায় বিশ্ব জুড়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ইজরায়েলকে। শিশুহত্যা এবং শরণার্থীদের উপর হামলার ঘটনার পরে মুখরক্ষার খাতিরে আজ সকালে সাত ঘণ্টার সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করে আইডিএফ।

আকাশের ইজরায়েলি বিমানে নজর তিন কিশোরের। ছবি: এএফপি

আকাশের ইজরায়েলি বিমানে নজর তিন কিশোরের। ছবি: এএফপি

সংবাদ সংস্থা
গাজ়া শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৪ ০২:১৭
Share: Save:

সাত ঘণ্টার প্রতিশ্রুতি ভাঙতে লাগল মিনিট সাতেক! গাজায় আরও এক বার সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণা এবং তার অব্যবহিত পরেই ফের বোমাবর্ষণ। আজ আরও এক বার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের খেসারত দিতে হল গাজার আরও একটি ত্রাণশিবিরকে।

গত কাল রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি স্কুলে মারণ হামলা করায় বিশ্ব জুড়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ইজরায়েলকে। শিশুহত্যা এবং শরণার্থীদের উপর হামলার ঘটনার পরে মুখরক্ষার খাতিরে আজ সকালে সাত ঘণ্টার সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করে আইডিএফ। যদিও হামাসের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, তাদের না জানিয়েই বিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইজরায়েল। ইজরায়েলের টুইটার অ্যাকাউন্টে জানানো হয়, মানবতার খাতিরেই সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতির সিদ্ধান্ত। গত কালই প্যালেস্তাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, বিদ্যুৎ ও জলের অভাবে ধুঁকছে গাজা। ইজরায়েলি সেনার তৎপরতায় ত্রাণও ঠিকমতো পৌঁছচ্ছে না। নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯০০। বিদ্যুৎহীন গাজায় আহতদের চিকিৎসা কার্যত অসম্ভব হয়ে উঠেছে। পানীয় জলে মিশছে অস্ত্রের বিষ। সব মিলিয়ে গাজার ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। বিদ্যুৎ ছাড়া ধুঁকতে শুরু করেছে গাজার হাসপাতালগুলি। উপচে পড়ছে মর্গ। এই সঙ্কট কী ভাবে কাটবে তা নিয়ে চিন্তায় আপৎকালীন দফতর। জায়গার অভাবে শিশুদের মরদেহ রাখা হচ্ছে আইসক্রিম ফ্রিজারে।

আজ বিরতি ঘোষণার পরে যখন ত্রাণের খোঁজে মানুষ পথে নামতে শুরু করেন, ঠিক তখনই একটি ত্রাণ শিবিরে ফের হামলা চালায় আইডিএফ। সংঘর্ষবিরতি শুরুর সাত মিনিটের মাথায়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় আট বছরের একটি মেয়ে-সহ ১১ জন। আহত অন্তত ৩০। যদিও ইজরায়েলি সেনার এক মুখপাত্র দাবি করেছেন, ওই হামলা আদৌ আইডিএফ করেছে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নন তিনি। বিষয়টি খতিয়ে না দেখে এই নিয়ে মন্তব্যও করতে চাননি। তাঁর পাল্টা দাবি, রাফা ছাড়া অন্য কোথাও ইজরায়েলি সেনা এই মুহূর্তে সক্রিয় নয়। আর ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সীমান্ত থেকে গত পরশু থেকেই সেনা সরিয়ে নিতে শুরু করেছে তারা। হামলার প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে অস্বীকার করলেও ওই মুখপাত্রের দাবি, বিরতি ঘোষণার পরেও হামলা বন্ধ করেনি হামাস। তাঁর কথায়, “এই নিয়ে আট বার আমাদের বিরতি ঘোষণার পরেও হামলা জারি রাখল হামাস। ধৈর্য তো আমরাও হারাচ্ছি!”

এ দিকে, রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রিত স্কুলে ইজরায়েলি সেনার হামলার তীব্র নিন্দা করেছে আমেরিকা। ঘটনাটি অত্যন্ত ‘লজ্জার’ বলে মন্তব্য করে মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র জন সাকি বলেন, “আমরা আরও এক বার জানিয়ে দিচ্ছি, ইজরায়েল নিজেদের লক্ষ্য পূরণের দিকে মন দিক। এত নিরীহ মানুষের মৃত্যু বন্ধ হোক।” করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুনের পাশাপাশি স্কুলে হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও। আজ তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক নিয়ম খুব পরিষ্কার। ওই ঘটনা যদি সত্যি হয়, তবে তা ভুল এবং নিন্দনীয়।” গাজা-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আন্তর্জাতিক মহলকে এ বার সক্রিয় হতে হবে বলে আজ মন্তব্য করেন ফ্রান্সের বিদেশমন্ত্রী লরেন ফেবিয়াস।

গাজার রাস্তায় দু’দিন ধরে ছেলেকে আগলে বসে আছেন নাফোজ মহম্মদ। জানালেন, ত্রাণ শিবিরে তিল ধারণের জায়গা নেই। মরতে যখন হবেই, রাস্তায় বসে থাকবেন বরং। তাঁর কথায়, “ঘুটঘুটে অন্ধকার। আর আকাশে তারাবাজির মতো ছুটছে আগুনের গোলা। ছেলেটাকে আর কত ভুল বোঝাব? আমাদেরও জন্য তো মর্গেও আর জায়গা নেই!”

অন্য বিষয়গুলি:

gaza israel brief cease-fire declared
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy