কর্মীর অভাবে বিপর্যস্ত ট্রাফিক ব্যবস্থায় নাকাল শহরবাসী। — মোহন দাস
পুলিশ এবং প্রশাসনের প্রতিশ্রুতিই সার। ট্রাফিক ব্যবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি আরামবাগ শহরে। যানজট ও দুর্ঘটনার জেরে হামেশাই অচল হচ্ছে শহর। এই পরিস্থিতির প্রতিবাদে গাড়ি ভাঙচুর এবং রাস্তা অবরোধও রুটিন হয়ে গিয়েছে। অগ্নি সংযোগের ঘটনাও ঘটে। আরামবাগ শহরে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ এবং সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থার আয়োজনে দিশেহারা পুলিশ-প্রশাসন।
শহরের এই ‘জটিলতা’র কথা স্বীকার করে মহকুমাশাসক প্রতুলকুমার বসু বলেন, “অসুবিধাগুলি খতিয়ে দেখছি। সেই অনুযায়ী শীঘ্রই জেলাশাসকের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে।”
জেলা ট্রাফিক বিভাগই নিয়ন্ত্রণ করে আরামবাগের ট্রাফিক ব্যবস্থা। আরামবাগের অসুবিধাগুলি মূলত কী?
ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জয়ন্তকুমার বাগের অভিযোগ, “প্রয়োজনের তুলনায় ট্রাফিক পুলিশ নেই। স্থানীয় থানা থেকে সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে সহযোগিতা করার কথা ছিল, তা নিয়মিত পাওয়া যায় না। এ ছাড়াও পুরসভা থেকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য যে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের তুলে নেওয়া হয়েছে। খুব কঠিন অবস্থার মধ্যে পরিষেবা টিকিয়ে রাখতে হচ্ছে আমাদের।”
বাম আমল থেকে চালু করা পুরসভার চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের কেন তুলে নেওয়া হল প্রশ্নে আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, “সরকার থেকে নিয়োগ করা সিভিক ভলান্টিয়াররা ওই কাজ করছেন বলে তাঁদের তুলে নেওয়া হয়েছে।” এ দিকে সিভিক ভলান্টিয়ারদের অধিকাংশকেই ব্যাঙ্ক বা অন্যত্র ডিউটি দেওয়ার কারণে তাঁদের অধিকাংশ সময়ই পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ। তা ছাড়াও তাঁদের প্রশিক্ষণ না থাকায় যান নিয়ন্ত্রণের বদলে বেশি যানজট সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছিল বলেও স্থানীয় মানুষের অভিযোগ।
জেলা ট্রাফিক দফতর সূত্রে জানা যায়, আরামবাগ এবং গোঘাটের কামারপুকুরের জন্য ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা বলতে এক জন সাব-ইন্সপেক্টর এবং ৮ জন কনস্টেবল। তাঁদের মধ্যে আবার এক থেকে দু’জন পালা করে বিভিন্ন কারণে ছুটি নেন। এ দিকে, গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্র শুধু আরামবাগেই ৬টি। সেগুলি হল কালীপুর মোড়, পল্লিশ্রী মোড়, বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন কোর্ট মোড়, হাসপাতাল মোড়, বসন্তপুর মোড়, গৌরহাটি মোড় এবং বাসুদেবপুর মোড় আর গোঘাটের ২টি হল কামারপুকুর চটি ও কামারপুকুর লাহাবাজার।
আরামবাগ শহর এবং কামারপুকুর ট্রাফিক ডিউটির নির্দিষ্ট সময় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকেল ৪টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে বিশেষত দুপুর ১২টে থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কোর্ট মোড় এ দিকে, আরামবাগ শহর বাঁকুড়া, বর্ধমান, দুই মেদিনীপুর এবং হাওড়া জেলার কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় সারা দিনে কয়েক হাজার গাড়ি চলে। ফলে, কলকাতা বা তারকেশ্বর যেতে কোর্ট মোড়, হাসপাতাল মোড় এবং গৌরহাটি মোড়ের মতো অতি ব্যস্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পথচারীরাও রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়েন। গাড়ি-চালকদের মধ্যে রেষারেষি করতে গিয়ে মারপিট হয়। এই সব সমস্যা নিয়ে নাগরিক কমিটি এবং অন্যান্য অনেক সংগঠনের পক্ষে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ক্ষোভ-বিক্ষোভও দেখানো হয়েছে বহু বার। কিন্তু ট্রাফিক আইন নিয়ে পুলিশ বা প্রশাসন এখনও কার্যকর কোনও ব্যবস্থাই নিতে পারেনি। এই পরিস্থিতে আদৌ ট্রাফিক-জট কাটবে তো! দ্বিধায় রয়েছেন শহরবাসী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy