খাতা সাজাও
• সাজিয়ে-গুছিয়ে লিখলে খাতা দেখতে ভাল লাগে। পরীক্ষকের সুবিধা হলে সেই প্রশান্তির রেশ পড়ে প্রাপ্ত নম্বরে। নয়তো একশোর একশো সঠিক উত্তর দেওয়ার পরেও হাফ-হাফ করে কমতে-কমতে আটের ঘরে চলে যেতে পারে মোট নম্বর।
• মার্জিন অতি-অবশ্যই থাকবে বাঁ দিকে। একটা নয়, দু’টো। প্রথম ও দ্বিতীয় মার্জিনের মধ্যে প্রশ্নের নম্বর, বিভাগ ইত্যাদির উল্লেখ থাকবে। মার্জিন টানার সময় নেই অজুহাতটা বিরক্তিকর। এটা জীবন বিজ্ঞানের পরীক্ষা। ইতিহাস নয়।
• প্রতি প্রশ্নের শেষে অবশ্যই একটা দাগ টেনে দেবে। অনেক সময় একটা প্রশ্নের উত্তর শেষ করতে করতে একটা পাতার অর্ধেকের বেশি চলে যায়। ওই পাতায় নতুন করে কোনও প্রশ্নের উত্তর লেখার দরকার নেই। পরের পাতায় চলে যাও।
• উত্তরের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর তলায় দাগ দিলে (লাল ও সবুজ কালি ছাড়া) ভাল। সহজে চোখে পড়ে।
• সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানা থাকলে অনেক সময় কোনটার উত্তর দেবে, তা নিয়ে ধন্দে পড়ে পরীক্ষার্থীরা। পাঁচটির-পাঁচটি লেখার পরেও অন্য একটা প্রশ্নের উত্তর লেখার ইচ্ছে হয়। তখন আগেরটা কেটে নতুন করে লিখতে বসে পরীক্ষার্থী। আমরা কাটতে বারণ করি। পরে যেটা লিখছো, সেটার বিভাগ আর প্রশ্ন নম্বর উল্লেখ করে লিখে ফেলো। ওই উত্তরে বেশি নম্বর পেলে, সেটাই যোগ হবে। কমটা বাদ দেবেন পরীক্ষক নিজে। তুমি অতিরিক্ত উত্তরটা কাটবে না।
ছবিতে জোর
জীবনবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ছবি গুরুত্বপূর্ণ।
• ‘গ’ বিভাগে একটি ছবি আঁকা ও সংশ্লিষ্ট চিহ্লিতকরণ থাকে। পাঁচ নম্বর থাকে ছবিতে। তিন নম্বর থাকে ছ’টি চিহ্নিতকরণের জন্য। এক্ষেত্রে পুরো নম্বর পেতে হলে ছবি আঁকা যেমন বাড়িতে বারবার অভ্যাস করতে হবে, তেমনই চিহ্নিতকরণের বিষয়টিও অভ্যাস করতে হবে। তবে, অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, চিহ্নিতকরণের তিন নম্বর প্রায় সকলেই পেয়ে যায়। নম্বর কাটে ছবির পাঁচ নম্বরে। এই জন্য ছবি আঁকা অভ্যাস করার সময় বই দেখে আঁকার কথা বলি আমরা। স্মৃতি থেকে এঁকে গেলে অনেক ভুল থেকে যায়। বই দেখে চার-পাঁচ বার আঁকা অভ্যাস করার পরে না-দেখে এঁকো। শিল্পীর মতো না-আঁকলেও চলবে। কিন্তু আঁকতে বলেছে রুই মাছ, আর তুমি কাতলার মতো এঁকে পাঁচে-পাঁচ অাশা করছ, এটা উচিত নয়। খুব ভাল হয় পরীক্ষার খাতায় আঁকছো ষখন, বাইরে একটা বাক্স টেনে নিলে। চিহ্নিতকরণ করার সময় খেয়াল রাখতে হবে দু’টো লাইন যেন ক্রশ না করে। অনেকেই এই ভুলটা করে।
চেষ্টা করো, চিহ্নিতকরণগুলো এক দিকে রাখতে।
• আবার দু’তিন নম্বরের প্রশ্নের উত্তরেও সংশ্লিষ্ট ছবি এঁকে দিতে পারলে ভাল। প্রশ্নে চায়নি বলে খালি উত্তর লিখে এলাম, এটা ঠিক নয়। যেমন পদ্মের পুষ্পাক্ষের অভিযোজিত বৈশিষ্ট্য লিখতে বলা হয়েছে যখন, তখন উত্তরের পাশে পুষ্পাক্ষটা এঁকে এলে পুরো নম্বর পাওয়া সহজ হবে। প্রতিবর্ত ক্রিয়া কাকে বলে, উদাহরণ দাও—প্রশ্ন এলে, আমরা চাই উত্তরের পাশে যেন ছবিটাও থাকে।
ছোট প্রশ্নই ভাল
• কিছু প্রশ্ন আছে (জীবনের উৎপত্তি কী ভাবে হল), যার উত্তর কুড়ি পাতাতেও শেষ করা যায় না। মাধ্যমিকের বইয়ে হয়তো ছোট করে একটা উত্তর দেওয়া আছে। এই ধরনের প্রশ্নগুলো (্descriptive question) এড়িয়ে চলা ভাল।
• প্রশ্নপত্রের ‘খ বিভাগে’ পাঁচ নম্বরের প্রশ্নগুলিতে যত বেশি ভাগে ভাগ থাকবে, তত ভাল। মানে ২+৩ ভাগে যে প্রশ্ন রয়েছে, তার উত্তর না দিয়ে ১+১+১+২ ভাগে যে প্রশ্ন রয়েছে তার উত্তর দেওয়া ভাল। দুই বা তিন নম্বরের প্রশ্নে ঠিক উত্তর লিখলেও পরীক্ষকের সন্তুষ্টির ভিত্তিতে হাফ করে নম্বর কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এক নম্বরের প্রশ্নে ঠিক উত্তর লিখলে একে এক দিতেই বাধ্য হন পরীক্ষকরা।
মন দিয়ে পড়া
• কী প্রশ্ন আসতে পারে, জল্পনায় সময় নষ্ট না করে বইটা খুঁটিয়ে পড়ো।
• ভাইরাস, জীবাণু, রোগ এবং স্বাস্থ্যবিধি নামে শেষ অধ্যায়টি অধিকাংশ ছাত্রই ভাল করে পড়ে না। অথচ, ওই অধ্যায় থেকে বেশি এক নম্বরের প্রশ্ন থাকে, যাতে নম্বর তোলা সহজ হয়।
• ছাত্রদের আর একটা বদ অভ্যাস হল সম্পূর্ণ উত্তর না দেওয়া বা অর্ধেক জেনে লেখা। যেমন ইনসুলিনের কাজ কী প্রশ্নের উত্তরে অনেকে লিখে দেয়, এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়। সঠিক উত্তর হবে ইনসুলিন অতিরিক্ত শর্করাকে গ্লাইকোজেনে পরিণত করে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখে শরীরে।
• অনেক সময় প্রশ্ন একটু ঘুরিয়ে এলেই পরীক্ষার্থীরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে জনন ও বংশগতি অধ্যায়ে এই সমস্যাটা হয়। ভাল করে এই অধ্যায়টা পড়ার পরামর্শ দিই আমি। অন্য অধ্যায় থেকেও এই সমস্যা হয়। রেচনের অধ্যায়টি খুঁটিয়ে পড়ার পরেও বৃক্কের কাজ কী প্রশ্ন এলে ঘাবড়ে যায় পড়ুয়ারা।
• উপরের প্রতিটি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে একটা সহজ পদ্ধতি বলে রাখি। পুরনো প্রশ্নপত্র নিয়ে উত্তর লেখার অভ্যাস করার সময় আগে বই বা নিজের নোটে ওই প্রশ্নগুলোর উত্তর পড়ে নাও। এরপরে যা লিখলে তা শিক্ষককে দেখিয়ে নাও। এই ভাবে অভ্যাস করলে ছোটখাটো অনেক ভুল সংশোধন হয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy