Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

তাঁর হাতেই জন্ম, সুভাষের ডাকে সাড়া নতুনদের

তাঁর হাত দিয়ে জন্ম নেওয়া ছেলেমেয়েরা এখন নতুন ভোটার। ডাকে চিঠি পাঠিয়ে সেই নতুন ভোটারদের আমন্ত্রণ জানিয়ে রীতিমতো সভা করে ভোট চাইলেন বাঁকুড়া কেন্দ্রের বিজেপি-র ডাক্তার-প্রার্থী সুভাষ সরকার।

নতুন প্রজন্মের ভোটারদের সঙ্গে সুভাষ ডাক্তার।—নিজস্ব চিত্র।

নতুন প্রজন্মের ভোটারদের সঙ্গে সুভাষ ডাক্তার।—নিজস্ব চিত্র।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:০৩
Share: Save:

তাঁর হাত দিয়ে জন্ম নেওয়া ছেলেমেয়েরা এখন নতুন ভোটার। ডাকে চিঠি পাঠিয়ে সেই নতুন ভোটারদের আমন্ত্রণ জানিয়ে রীতিমতো সভা করে ভোট চাইলেন বাঁকুড়া কেন্দ্রের বিজেপি-র ডাক্তার-প্রার্থী সুভাষ সরকার।

রবিবার বাঁকুড়া শহরের একটি লজে ওই সভা হয়। ডাক্তারবাবুর ডাক পেয়ে জঙ্গলমহলের সিমলাপাল, রাইপুর, সারেঙ্গা থেকে শুরু করে বাঁকুড়া শহর লাগোয়া বিভিন্ন গ্রামের কমবয়সী ভোটাররা চলে আসেন। অনেকেই সঙ্গে আনেন বন্ধুদেরও। প্রায় তিন ঘণ্টার সভায় তাঁরা শুনলেন জেলা বিজেপি নেতাদের কথা। তরুণ প্রজন্মের মন বুঝে প্রজেক্টরের মাধ্যমে নরেন্দ্র মোদীর ভাষণও শোনানো হয়। কথা বলার সুযোগ ছিল নতুন ভোটারদেরও। তাঁদের অনেকে আগামী দিনে দেশকে কী ভাবে দেখতে চান তা বলেন। শেষে যখন সুভাষবাবু বলতে ওঠেন উছ্বাসের বাঁধ ভাঙে সকলের।

নতুন ভোটারদের কাছে বেশি রাজনীতির কথা বলেননি বিজেপি প্রার্থী। তুলে ধরেন হিন্দি ছবি ‘নায়ক’-এর কথা। ওই ছবিতে নায়ক অনিল কপূরকে রাজনীতিতে নিয়ে আসতে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিবের চরিত্রে অভিনয় করা পরেশ রাওয়ালের (তিনিও গুজরাতের আমদাবাদ-পূর্ব কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী) কিছু সংলাপ আওড়ান সুভাষবাবু। যার অর্থ, দেশের খারাপ পরিস্থিতি নিয়ে ঘরে বসে নেতাদের সমালোচনা না করে, নিজে দেশের কাজে যোগ দিয়ে একটা সুন্দর দেশ গড়ো। ডাক্তারবাবুর মুখে সংলাপ শুনে হাততালিতে ফেটে পড়ে গোটা হলঘর। সমবেত ‘বন্দে মাতরম’ গানের পরে সভা শেষ হয়। ডাক্তারবাবুর আশীর্বাদ নিতে ভিড় করেন সভায় আসা তরুণ-তরুণীরা।

প্রণাম করে সিমলাপালের যুবক আলোক সহিস সুভাষবাবুকে বলেন, “মা-বাবার মুখে শুনেছি, আপনি না থাকলে আমি সুস্থ ভাবে জন্মাতেই পারতাম না। আপনার চিঠি পেয়ে তাই ছুটে এলাম।” হলঘর থেকে বেরিয়ে বাঁকুড়ার রামপুরের যুবক নিশান বারুই বলেন, “বাইরের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে কী হবে, তাঁরা তো বাইরেই থাকবেন। তাই আমাদের শহরের মানুষ সুভাষবাবুকেই ভোট দেব। আমার জন্ম ওঁর হাতেই।” আবার অনূদিতা দাস, শোভনা তিওয়ারি, সৌভিক দে-র মতো কয়েক জন জানান, ভোট দেওয়া নিয়ে বিশেষ আগ্রহ ছিল না। কিন্তু সুভাষবাবুর চিঠি পেয়ে তাঁরা বুথে যাবেন বলে ঠিক করেছেন।

স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ সুভাষ ডাক্তার আগেই জানিয়েছিলেন, এই ভোট যুদ্ধে রোগীরাই তাঁর আসল ভরসা। ৩৪ বছরের ডাক্তারি পেশায় কমবেশি ৩০ হাজার দম্পতির সন্তান তাঁর হাত দিয়ে জন্ম নিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। নতুন ভোটার টানতে তাই ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তাঁর নার্সিংহোমে যারা জন্মেছে তাদের মা-বাবার ঠিকানায় চিঠি পাঠান সুভাষবাবু। সুভাষবাবুর কথায়, “নার্সিংহোমের খাতা থেকে ঠিকানা নিয়ে বহু পরিবারকে পোস্টকার্ডে চিঠি পাঠাই। খুব ভাল সাড়া পেয়েছি।”

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ গতবার বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়ে সর্বসাকুল্যে ভোট পান ৪২ হাজার ৬৬০টি। গত পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় বিজেপি-র অস্তিত্ব অণুুবীক্ষণ যন্ত্রেও চোখে পড়েনি। কিন্তু এ বার সুভাষবাবু প্রচার থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া কিংবা এই সভা সব ক্ষেত্রেই বুঝিয়ে দিচ্ছেন এ বারের ভোট-যুদ্ধে তিনিও সমানে লড়বেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্রও স্বীকার করেছেন, “সব জায়গাতেই এখন বিজেপি-র রমরমা। এ রাজ্যেও তারা নিজেদের জমি তৈরি করছে।” বিজেপিকে অবশ্য প্রতিদ্বন্দ্বীর তকমা দিতে নারাজ তৃণমূল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy