ঝামেলার পরে পুলিশের টহল। শনিবার সাঁইথিয়ার তিলপাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র
অবৈধ ভাবে বালি তোলার প্রতিবাদ করায় গ্রামবাসীদের লক্ষ করে গুলি ও বোমাবাজি করার অভিযোগ উঠল বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে বীরভূমের সাঁইথিয়া থানার তিলপাড়া এলাকার ঘটনা। গুলি-বোমায় কেউ হতাহত না হলেও ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের একাংশ ঘটনার প্রতিবাদে প্রায় এক ঘণ্টা সাঁইথিয়া-লাভপুর রাস্তা অবরোধ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বীরভূমের পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খান বলেন, “খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। তবে, এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কেউ কোনও লিখিত অভিযোগ জানাননি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, সাঁইথিয়ার তিলপাড়া লাগোয়া ময়ূরাক্ষী নদীবাঁধ লাগোয়া এলাকায় বিস্তীর্ণ চাষজমি আছে। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি নদীর উত্তর পাড়ে ময়ূরেশ্বর থানার বৈপুরে একটি বালিঘাট আছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বালিঘাট কর্তৃপক্ষ নদী থেকে বালি তুলতে তুলতে একেবারে এলাকার চাষিদের জমির কাছাকাছি বালি তোলা শুরু করেছে। তার জেরে নদীবাঁধের অবস্থা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে বারবার আপত্তি জানানো হলেও বালিঘাট কর্তৃপক্ষ তাতে কান দেননি। তাঁদের আরও দাবি, ওই এলাকা থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলার বিষয়টি বহুবার ব্লক প্রশাসন এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। মাঝে ভোট থাকায় এই উপদ্রব বন্ধ ছিল। কিন্তু শুক্রবার ভোটের ফল ঘোষণা হতেই বালি মাফিয়ারা ফের বিপজ্জনক ভাবে বালি তুলতে শুরু করে বলে অভিযোগ।
এ দিনের ঘটনার জেরে গ্রামবাসীরা এতটাই আতঙ্কে যে, কেউ নিজের নাম বলতে চাইছেন না। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, তিলপাড়া গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ মাঠের খেতজমিতে কাজ করার সময় বাসিন্দাদের একাংশ দেখতে পান মেশিন দিয়ে ফের বালি তোলার কাজ শুরু হয়েছে। প্রথমে তাঁরাই সেখানে গিয়ে আপত্তি জানান। অভিযোগ, বালি মাফিয়ারা তাঁদের আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে তাড়িয়ে দেয়। তাঁরা গ্রামে ফিরে ঘটনার কথা জানান। খবর পেয়ে তিলপাড়া গ্রামের প্রায় ৭০-৮০ জন মানুষ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বাসিন্দাদের অভিযোগ, “কাছাকাছি যেতেই শ’খানেক দুষ্কৃতী বোমাবাজি শুরু করে। পালাতে গেলে ওরা গুলি চালায়।” পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি চলে। সব জেনেও পুলিশ-প্রশাসন কিছু করছে না বলে তাঁদের দাবি। গ্রামেরই বাসিন্দা, স্থানীয় পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য তমাল দাস বাসিন্দাদের সুরেই বলেন, “বালি তোলায় আপত্তি নেই। কিন্তু অবৈধ ভাবে বালি তুলতে দেব না।” অভিযুক্ত বালিঘাট মালিক, সিউড়ির বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ মণ্ডলের পাল্টা দাবি, “আমি বৈধ ভাবেই বালি তুলি। এলাকার মানুষ আমাদের কাছে টাকার দাবি করছেন। তা দিইনি বলেই বাধা দেওয়া হচ্ছে।” এ দিন বাসিন্দাদের একাংশই বালিঘাটের কর্মীদের উপরে চড়াও হয়ে মারধর, বোমাবাজি করে বলে তাঁর অভিযোগ।
এ নিয়ে বারবার ফোন করা হলেও সাড়া দেননি জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক নীলকমল বিশ্বাস। মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল সাঁইথিয়ার ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক পার্থপ্রতিম সাহার। সাঁইথিয়ার বিডিও জাহিদ সাহুদ বলেন, “ঘটনার কথা জানতে পেরেই পুলিশে খবর দিয়েছি। এ নিয়ে আগেও ভূমি দফতরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। ফের বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy