নালিশ: পঞ্চায়েতের ভাঙা আলমারি। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত অফিসে তালা ভেঙে চুরি হয়েছে। অভিযোগ, লুট হওয়া জিনিসপত্রের অন্যতম আবাসিক শংসাপত্রের বয়ান ছাপানো দু’টি বই। বৃহস্পতিবার সকালে চুরির কথা জানাজানি হতে পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের কৃষ্ণা সর্দার বলেন, ‘‘আমাদের ধারণা, এনআরসি (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) সংক্রান্ত ভীতিকে কাজে লাগিয়ে কেউ শংসাপত্রের অপব্যবহার করে ফায়দা লুটতে চাইছে। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যাপারে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে।’’ বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর ব্লকের বেলশুলিয়া পঞ্চায়েতের এই চুরিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে প্রশাসন। চুরির তদন্তে নেমেছে পুলিশ। তবে বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষ বলেন, ‘‘এনআরসি নিয়ে মানুষকে ভয় পাওয়াতে চুরির নাটকও হয়ে থাকতে পারে। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’
বুধবার পর্যন্ত ছুটি ছিল পঞ্চায়েতে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা নাগাদ এক কর্মীর ফোন পেয়ে পঞ্চায়েতে পৌঁছন প্রধান। তিনি বলেন, “দেখি, পঞ্চায়েতের মূল গেট-সহ তিনটি দরজার তালা ভাঙা। আমার ঘরের দু’টি আলমারির মধ্যে একটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। আর একটি খুলে ফেলা হয়েছে। লন্ডভন্ড অবস্থা ভিতরে। বিশেষ কিছু চুরি না হলেও আবাসিক শংসাপত্রের বই দু’টি নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। কর আদায়কারীর আলমারি থেকে একটি বড় ফাঁকা রেজিস্টারও চুরি হয়েছে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের ওই শংসাপত্র স্কুল-কলেজে ভর্তির কাজে লাগে। এ ছাড়া, চাকরির জন্য মহকুমা শাসকের দফতর থেকে আবাসিক শংসাপত্র নিতে হয়। সে জন্য পঞ্চায়েতের শংসাপত্র নিয়ে গিয়ে আবেদন করতে হয়। পঞ্চায়েতের ছাপানো বয়ানের শংসাপত্র দিয়ে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, রান্নার গ্যাস বা বিদ্যুতের সংযোগ নেওয়া যায়। তবে সে সমস্ত ক্ষেত্রে ব্লক প্রশাসনের থেকেও একটি শংসাপত্র নিতে হয়। রেশন কার্ডের জন্য খাদ্য দফতরের আলাদা আবাসিক শংসাপত্রের বয়ান রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
প্রধানের দাবি, বেলশুলিয়া পঞ্চায়েতে এ ধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি। ওই পঞ্চায়েতে কোনও নৈশপ্রহরী নেই। খড়কাটা পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এই পঞ্চায়েত। ওই ফাঁড়ির পুলিশের দাবি, প্রতিদিন রাত ২টো পর্যন্ত পঞ্চায়েতের আশপাশে টহল দেওয়া হয়েছে। বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ কৌশিক কর বলেন, “পঞ্চায়েতে টাকা-পয়সা নেই। তার পরেও এ ভাবে চুরি হলে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন তথ্য লোপাটের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। অবিলম্বে পঞ্চায়েতে নজরদারি ক্যামেরা বসানো হোক। প্রতিটি পঞ্চায়েতে নৈশপ্রহরী রাখার জন্য ব্লক প্রশাসনকে অনুরোধ জানাব।’’ বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দেবনাথ বাউড়ি বলেন, “পরবর্তী বৈঠকে পঞ্চায়েতগুলিতে নজরদারি ক্যামেরা বসানো ও নৈশপ্রহরী রাখার বিষয়ে আলোচনা হবে। আমরা জেলা প্রশাসনকেও এ বিষয়ে জানাব।’’ বিডিও (বিষ্ণুপুর) স্নেহাশিস দত্ত জানিয়েছেন, আবাসিক শংসাপত্রের বয়ান ছাপানো বই চুরির ব্যাপারটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই শংসাপত্র বাতিল করা হয়েছে। নতুন বয়ানে ও অন্য কালিতে শংসাপত্র তৈরি করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy