ভোটের বিধিনিষেধের কারণে একশো দিনের কাজ বন্ধ। দীর্ঘদিন দাবদাহ আর অনাবৃষ্টি চলায় বাগানে পাতা তোলার কাজও বন্ধ। আর তাতেই বিপাকে বেরুবাড়ি এলাকার শ্রমিকেরা। একশো দিনের কাজ এবং পাতা তোলা দুই-ই বন্ধ থাকায় এলাকার অনেকেই কাজ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। জলপাইগুড়ির সদর ব্লকের নগর বেরুবাড়ি, খারিজা বেরুবাড়ি, দক্ষিন বেরুবাড়ি এবং গড়ালবাড়ি এলাকায় ছোট ও মাঝারি চা বাগানের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। এক বিঘা থেকে শুরু করে ১৫ একর পর্যন্ত চা বাগানগুলিতে মোট ৫ হাজার শ্রমিক কাজ করেন বলে জানা গিয়েছে। বাগানগুলিতে বেশির ভাগই অস্থায়ী শ্রমিক। পাতা তোলা থেকে শুরু করে, বাগান পরিচর্যার কাজ করে যখন কাজ থাকে না তখন অনেকেই একশো দিনের কাজ করেন বলে জানা গিয়েছে।
গত দু’মাস ধরে বৃষ্টি না থাকার ফলে চা গাছে পাতা আসেনি। এখন বৃষ্টি শুরু হলেওগাছে পাতা আসতে আসতে আরও একমাস সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ সময়ে একশো দিনের কাজও বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের আয়ের পথ বন্ধ। জলপাইগুড়ির জেলা শাসক পৃথা সরকার বলেন, “ভোটের বিধিনিষেধের জন্য নতুন পরিকল্পনার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। ভোট শেষ হওয়ার পরে এই বিধিনিষেধ উঠে গেলে নতুন পরিকল্পনার অনুমোদন দেওয়া হবে। তার পর নতুন আর্থিক বছরে ১০০ দিনের কাজ শুরু হবে।”
দক্ষিণ বেরুবাড়ির শ্রমিকদের সিটু নেতা আশরাফ আলি নিজেও এক জন অস্থায়ী চা শ্রমিক। তিনি বলেছেন, “দু’মাস ধরে কাজ নেই। কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে।” মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পাতা তোলা শুরু হলে ঠিকা শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। গত দু’মাস বিভিন্ন বাগানে হাতেগোনা ঠিকা শ্রমিক নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কংগ্রেসের প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র সম্পাদক দুলাল রায় বলেন, “চা বাগানে পাতা কম। ঠিকা শ্রমিকদের প্রয়োজন হচ্ছে না। তাই তারা কাজ পাচ্ছে না।”
বেরুবাড়িতে ৩২৩ জন ক্ষুদ্র চা চাষি মিলে গড়ে তুলেছেন নবজাগরণ চা কারখানা। এই সংগঠনের সম্পাদক দিলীপ দাস এ দিন বলেন, “আমাদের সংগঠনের সদস্যদের ১ বিঘা থেকে আরম্ভ করে ১২ একরের চা বাগান আছে। সেচের ব্যবস্থা নেই। এ বছর বৃষ্টি না হওয়াতে উৎপাদন কমেছে। সকলেই ঠিকা শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করান। চা বাগানে পাতা না থাকায় ঠিকা শ্রমিকের নিয়োগ কমেছে।”
এই চা শ্রমিকদের বিকল্প কাজের জায়গা ১০০ দিনের কাজ। এপ্রিল মাসে নতুন আর্থিক বছরে কাজের অনুমোদন না আসায় সেই কাজও বন্ধ আছে। চা বাগানে কাজ না থাকলে এই তাঁরা ১০০ দিনের কাজ করে থাকেন। সেই কাজ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন শ্রমিকেরা। এই পরিস্থিতিতে ফরওয়ার্ড ব্লকের জলপাইগুড়ির জেলা সভাপতি সারদাপ্রসাদ দাস বলেছেন, “দ্রুত ১০০ দিনের কাজ চালু করা উচিত।” একই দাবি করেছেন নগর বেরুবাড়ির কংগ্রেস নেতা নতিবর রহমান এবং তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ বেরুবাড়ির সভাপতি নৃপতিভূষণ দাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy