Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
অনাবৃষ্টিতে উদ্বেগ উত্তরের দু’জেলায়

ডুয়ার্সে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ধান চাষে

একটা সময় ছিল যখন বর্ষার মরসুমে লাগাতার বৃষ্টি বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াত ডুয়ার্সবাসীর কাছে। নাগারে দুই তিন সপ্তাহ বিরামহীন বৃষ্টিতে স্তব্ধ হয়ে যেত জনজীবন। এবছর সেই ছবিটা পুরোপুরি উধাও সবুজে মোড়া ডুয়ার্স-সহ কোচবিহারে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, “বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হলেও এখন পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না ডুয়ার্সে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৪ ০১:২২
Share: Save:

একটা সময় ছিল যখন বর্ষার মরসুমে লাগাতার বৃষ্টি বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াত ডুয়ার্সবাসীর কাছে। নাগারে দুই তিন সপ্তাহ বিরামহীন বৃষ্টিতে স্তব্ধ হয়ে যেত জনজীবন। এবছর সেই ছবিটা পুরোপুরি উধাও সবুজে মোড়া ডুয়ার্স-সহ কোচবিহারে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, “বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হলেও এখন পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না ডুয়ার্সে।”

ভরা বর্ষায় কোচবিহার ও ডুয়ার্সে এই অনাবৃষ্টি রীতিমত চিন্তায় ফেলে দিয়েছে পরিবেশবিদ, কৃষি বিজ্ঞানী, রাজ্যের মন্ত্রী থেকে সাধারণ চাষিদের। আমন ধানের রোয়া বোনার সময় পার হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় জমি খটখটে। সে জন্য এখনও পর্যন্ত রোয়া বুনতে পারছেন না চাষিরা। পুকুর, খাল, বিলে সেভাবে জল না থাকায় ও নতুন জল না মেলাতে পাটের মানও পড়ে গিয়েছে অনেকটাই।

আমন ধান চাষে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলা ব্যাপক মার খাবে বলে আগাম জানিয়ে দিয়েছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। গত বারের তুলনায় ধান উৎপাদন প্রায় ২৫ শতাংশ কমে যাবে বলে ধারণা উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের। কৃষি বিজ্ঞানী অশোক সাহা বলেন, “বহু জমি ফেটে যাচ্ছে। জলের অভাবে রোয়া বুনতে পারছেন না চাষিরা। বৃষ্টি না হলে ধানের ফলন অস্বাভাবিক হারে কমে যাবে। সরকারি ভাবে ও কৃষকরা নিজেরা সেচের মাধ্যমে জলের চাহিদা পূরণ করলে ফলন কিছুটা রক্ষা হতে পারে।”

রাজ্যের কৃষি মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু অবশ্য বলেছেন, “এখনও পর্যন্ত বিষয়টি বড় ধরণের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়নি। আংশিকভাবে চাষাবাদে অসুবিধা হচ্ছে ঠিকই। তা ছাড়া বর্ষা এখনও শেষ হয়নি। আমরা লক্ষ রাখছি। যদি আমন ধানের ফলন কমে তবে কম সময়ে অধিক উৎপাদন হয় এমন ধানের বীজ কৃষকদের সরবরাহ করে ঘাটতি মেটানো হবে।”

বৃষ্টির অভাবে উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় শিল্প চা গাছ থেকেও সেভাবে পাতা মিলছে না। উল্টে অনাবৃষ্টির কারণে চা গাছে পোকার আক্রমণে দুশ্চিন্তা বেড়েছে বাগান কর্তৃপক্ষের।

অগস্ট মাসের এই সময়ে ডুয়ার্স ও কোচবিহারের মাছের বাজারে কই, সাটি, পুঁটি, কালবোস-সহ নানা মাছ মিললেও এবার তা বাজারে অমিল। নদীতে সে ভাবে জল না থাকায় মাছ কমছে বলে মৎস্য বিশেষজ্ঞরা জানান। বৃষ্টিপাতের অভাবে নানা মাছ লুপ্ত হওয়ারার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের কথায়, “ডুয়ার্সের সবুজে ঘেরা মোড়ক হারিয়ে যাওয়ার কারণে বৃষ্টি কমে যাচ্ছে। সেখানে কাঠ চেরাই কল গজিয়ে ওঠা, প্রতিনিয়ত সবুজ ধ্বংসের জন্য এই অবস্থা।” রাজ্যের বনমন্ত্রী সুভাষবাবুর সঙ্গে একমত। তাঁর কথায়, “ডুয়ার্স তরাই সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় একসময় ব্যাপক হারে বৃষ্টি হত। ব্যাপক হারে গাছ কাটায় এই পরিস্থিতির শিকার হয়েছি।” তিনি জানান, এ বছর ২ কোটি ৬৪ লক্ষ চারা লাগানো হয়। সেগুলি যাতে নষ্ট না হয় দেখা হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

dooars paddy cultivation lack of rainfall
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy