Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

দুষ্কৃতী দমনে পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন 

কেন পুলিশ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে পাচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

বোমা: দু’টি তাজা বোমা উদ্ধার হল ভেটাগুড়ির শাকদল ও ব্রহ্মাণীরচৌকি থেকে। নিজস্ব চিত্র

বোমা: দু’টি তাজা বোমা উদ্ধার হল ভেটাগুড়ির শাকদল ও ব্রহ্মাণীরচৌকি থেকে। নিজস্ব চিত্র

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:১৮
Share: Save:

ডিজি এসে পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র থেকে শুরু করে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব পর্যন্ত নানা বিষয় নিয়ে বৈঠক করেছেন। কিন্তু তার পরেও স্বাভাবিক হল না কোচবিহার। ডিজি ফিরে যাওয়ার পরে পরিস্থিতির সুরাহা হয়নি। উল্টে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশকেও রেয়াত করছে না তারা। শনিবার রাতেই পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ভেটাগুড়িতে গুলি-বোমা ছুড়েছে দুষ্কৃতী দল। কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন পুলিশকর্মীরা। তার পরেও রাতভর বোমাবাজির অভিযোগ উঠছে। রাজনৈতিক মদতে দুষ্কৃতীদের দাপটে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রামে গ্রামে।

কেন পুলিশ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে পাচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সোমবার পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বলকরের উপস্থিতিতে কোচবিহার জেলা পুলিশের কর্তাদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য নিয়ে আলোচনা হয়। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের গাড়িতে হামলার ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আরও ১৮ জনের খোঁজ চলছে।”

দিন চারেক আগেই কোচবিহার সফরে এসেছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন রাজ্য পুলিশের আরেক কর্তা সুরজিৎ পুরকায়স্থ। উত্তরবঙ্গের আইজি আনন্দ কুমার, জেলা পুলিশ সুপার সহ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। সেখানেও জেলার অপরাধ-দমনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন ডিজি।

গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হাত থেকে কোচবিহার আসন ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। তার পর থেকেই রাজনৈতিক গন্ডগোল শুরু হয়। গত দেড় মাস থেকে জেলার অবস্থা ভয়াবহ হয়ে ওঠে। এক দিকে তৃণমূল হারানো জমি পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। অপর দিকে, বিজেপি জেলা নিজেদের দখলে আনতে ময়দানে নেমে পড়ে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে শীতলখুচি, মাথাভাঙা, তুফানগঞ্জ থেকে কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র, দিনহাটা উত্তপ্ত হয়ে উঠে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে ব্যাপক বোমাবাজি ও গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। অনেকেই অভিযোগ করেন, রাতভর সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা একাধিক এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায়।

ডিজি-র সফরের পর ওই অবস্থা পাল্টাবে বলে আশা করেছিলেন সবাই। আদতে তা হয়নি। গত শনিবার রাতে ভেটাগুড়িতে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে দুষ্কৃতীরা। ছোড়া হয় বোমাও। দুষ্কৃতীরা এতটা বেপরোয়া হয়ে ওঠার সাহস পাচ্ছে কী করে? কেন পুলিশ মদতদাতাদের গ্রেফতার করছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

বামেদের অভিযোগ, কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না বলেই মনে করেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে দুষ্কৃতীরা। তৃণমূল ও বিজেপি অবশ্য বামেদের অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেছে। তারা একে অপরের বিরুদ্ধে দুষ্কৃতীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ করেছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। প্রত্যেকটি অপরাধেই ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।”

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Violence Bomb Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy