ক্যাম্পাসে বারবার বহিরাগতরা ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির করছে। অথচ কর্তৃপক্ষের তরফে বছরের পর বছর ধরে কেন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বুধবার বৈঠকে উপাচার্যের সামনে সেই প্রশ্ন তুলেছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ছাত্রীরা।
দু’দিন আগে ফের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনা নিয়ে এ দিন ছাত্র-শিক্ষক-আধিকারিক, কর্মচারী প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসেন উপাচার্য। ঠিক হয়েছে ছাত্র-শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সকলকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। দু-তিন দিনের মধ্যে কমিটি গঠন হওয়ার পর তাঁরা রিপোর্ট দেবেন। দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। পুলিশের সঙ্গে কথা বলে কমিটিতে তাদের প্রতিনিধিদেরও রাখতে চান কর্তৃপক্ষ।
সমস্যা যে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে তা উপাচার্যের কথাতেও স্পষ্ট। উপাচার্য সোমনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘দু দিন আগে যা ঘটেছে তা অনভিপ্রেত। সমস্যা বহু দিনের। ব্যবস্থা নিতে একটি কমিটি গঠন করা হবে। শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষাকর্মী, আধিকারিক সকল প্রতিনিধিরাই থাকবেন। ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ডের আধিকারিকরা থাকবেন। প্রয়োজনে কোঅপ্ট পদ্ধতিতে অন্য কাউকে সদস্য রাখতে চাইলে নেওয়া যাবে। পুলিশের তরফে প্রতিনিধি থাকার জন্য বলা হবে। স্থানীয় পঞ্চাযেত প্রশাসনের কেউ কমিটিতে থাকবেন কি না পরবর্তীতে ঠিক করা হবে।’’ উপাচার্য জানিয়েছেন, বর্তমান সমস্যা মেটানো ছাড়াও পরবর্তীতে যাতে এই ধরণের সমস্যা রোখা যায় তা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কমিটি পরামর্শ দেবে।
পড়ুয়ারা অবশ্য বৈঠক শেষে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। গবেষক ছাত্রছাত্রীদের তরফে নিশিকা যোশী, প্রিয়ঙ্কা ভট্টাচার্যরা বলেন, ‘‘শুধু কমিটি করলেই হবে না। কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সেটাই দেখার। কিছু ঘটলে প্রতিবারই একই জিনিস বলা হচ্ছে। অথচ কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি ঘটছেই। আমরা তিন দিন দেখব। তার মধ্যে কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু না হলে বড় ধরনের আন্দোলন হবে।’’ ছাত্রীদের অভিযোগ, নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসে সিসিটিভি বসানো কথা থাকলেও তা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পিছনের দিকে সীমানা প্রাচীর অন্তত চার জায়গায় ভেঙে যাতায়াতের রাস্তা করে নিয়েছে গ্রামবাসীরা। ফলে বহিরাগতদের যাতায়াত অবাধ হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাসে। তা নিয়ন্ত্রণের জন্য বলা হলেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। তা ছাড়া রসায়ন বিভাগের পিছনের অংশে যে মাঠ রয়েছে সেখানে সন্ধ্যার পরই মদের আসর এবং আপত্তিকর কাজকর্ম চললেও কর্তৃপক্ষের হুঁশ নেই বলে অভিযোগ।
সোমবার দুপুরে পদার্থবিদ্যা বিভাগের কাছে বাইকে করে এসে বহিরাগত যুবক এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। এর প্রতিবাদে রাতে বিক্ষোভ দেখান গবেষক ছাত্রছাত্রীরা। মঙ্গলবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে অবস্থান আন্দোলন শুরু করে গবেষক ছাত্রছাত্রীরা। শিক্ষক, আধিকারিকদের তারা ভবনে ঢুকতে না দিলে প্রশাসনিক কাজকর্ম অচল হয়ে পড়ে। উপাচার্য বাইরে থাকায় রেজিস্ট্রার, শিক্ষক সমিতির সম্পাদক, ক্যাম্পাস ইনচার্জরা তাদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এ দিন উপাচার্য ফিরলে বৈঠক ডাকার কথা জানানো হয়েছিল। ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছে, কোনও রাজনৈতিক ছাত্রছায়ায় তারা নেই। নিজেরাই আন্দোলন করবেন। টিএমসিপি নেতা তথা রিসার্চ স্কলার সংগঠনের সভাপতি বাদল রায় জানান, তাঁরা পড়ুয়াদের পাশে রয়েছেন।
অন্য দিকে সোমবার রাতেই পরীক্ষা নিয়ামক বিভাগের এক কর্মীর স্ত্রী ক্যাম্পাসের মধ্যে ইভটিজিংয়ের শিকার হন বলে অভিযোগ। নিরাপত্তা রক্ষীরা অভিযুক্তদের ধরলেও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কেন তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনা তদন্ত করে দেখার দাবি উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy