প্লাস্টিক থাকছেই। (উপরে) ক্যারিব্যাগের বিরুদ্ধে অভিযানে গিয়ে বিরোধিতার মুখে পুলিশও। (নীচে) প্রকাশ্যে এ ভাবেই চলছে প্লাস্টিকের ব্যবহার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে পড়ে ফিরে আসতে হল পুর কর্মীদের। মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়ি শহরের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে বোতল কোম্পানি বাজারে ওই ঘটনা ঘটে। অন্য দিকে এ দিনই শিলিগুড়ির সুভাষপল্লি বাজার, লাগোয়া রথখোলা-রবীন্দ্রনগর বাজারে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। মেয়র, পরিবেশ বিভাগের মেয়র পারিষদ, স্থানীয় কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে অভিযানের সময় ব্যবসায়ীরা জানিয়ে দেন তাঁরা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বর্জন করেছেন। ক্রেতাদের তা দিচ্ছেন না।
শিলিগুড়ির বিধানমার্কেট, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের বোতল কোম্পানির বাজার-সহ কয়েকটি বাজারের ব্যবসায়ীদের একাংশ কেন প্লাসটিকের ক্যারিব্যাগ বন্ধ করছেন না সেই প্রশ্ন উঠেছে। এ দিন ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে বোতল কোম্পানি বাজারে পুর কর্মীরা অভিযান চালানোর সময় মাঝপথে বাধা দেয় ব্যবসায়ীদের একাংশ। তা নিয়ে পুরকর্মীদের সঙ্গে বচসা শুরু হয়। পরে ভক্তিনগর থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। পুলিশ চলে গেলে ওই বাজারে এ দিন আর অভিযান চালানো যায়নি। অথচ পুর কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এ দিন কোনও অভিযোগ না করায় প্রশ্ন উঠেছে। পুর কর্তৃপক্ষের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ অনেকেই।
ঘটনার পর পুলিশের তরফে পুরকর্মীদের জানানো হয় যে ব্যবসায়ীরা বাধা দিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই মতো পুর কর্মীরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। তার পরেও এ দিন পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হল না কেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন পুর কর্মীদের অনেকেই।
মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা এখনও চোরাগোপ্তা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করছেন। সমস্ত ধরনের প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ। পুরসভার তরফে লাগাতার অভিযান চলবে। যারা নিষেধাজ্ঞা মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’’ পুরসভার পরিবেশ বিভাগের মেয়র পারিষদ মুকুল সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘সমস্ত ধরনের প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ। পুলিশে অভিযোগের বিষয়গুলি পুর আধিকারিকরা দেখছেন।’’ পুর সচিব সপ্তর্ষি নাগ জানান, এ ব্যাপারে এখনও কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি। বিষয়টি তিনি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন।
গত শনিবার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের যে কোম্পানির গুদাম থেকে ১৫ টন প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বাজেয়াপ্ত হয়েছে তার মালিকের বিরুদ্ধেও পুরসভার তরফে কোনও অভিযোগ করা হয়নি বলে সরব হয়েছেন ৩ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলর সুজয় ঘটক। তিনি বলেন, ‘‘ওই গুদাম মালিকের বিরুদ্ধে কেন এখনও অভিযোগ না করায় রহস্য থেকেই গিয়েছে। ওই কোম্পানির ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা উচিত। তা ছাড়া এ দিন বোতল কোম্পানির বাজারে যা ঘটেছে তাতে পুর কর্তৃপক্ষের ভূমিকা যে যথাযথ নেই তা কর্মীরাও বুঝতে পারছেন। তাদের নিরাপত্তাটুকুও বর্তমান পুর কর্তৃপক্ষ দেখছেন না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে তাদের ব্যর্থতা বারবার প্রকাশ পাচ্ছে।’’ বিরোধী দলনেতা নান্টু পালও পুর কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন।
অন্য দিকে রথখোলা-রবীন্দ্রনগর ব্যবসায়ী কমিটির সহকারি সম্পাদক বাসুদেব ভাওয়াল, লাগোয়া সুভাষপল্লি বাজারের সম্পাদক পীযূষ বিশ্বাসরা জানান, কোনও ব্যবসায়ী যাতে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ক্রেতাদের না দেন তা তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন। গত কয়েক বছর ধরে তাদের বাজারে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বন্ধ। বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী কমিটির সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাস জানান, তাঁরা ব্যবসায়ীদের বারবার বলছেন। তাঁর পরেও যাঁরা ব্যবহার করছেন সে ক্ষেত্রে পুরসভা কড়া ব্যবস্থা নিক। প্রয়োজনে জরিমানা বাড়িয়ে, মামলা করে তাদের বিরুদ্ধে পুরসভাকেই ব্যবস্থা নিতে হবে বলে জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy