সম্মানিত: প্রেমবিহারী ঠাকুর। —নিজস্ব চিত্র।
এসেছিলেন বিহার থেকে। তারপর বাংলার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গাঢ় হয়েছে প্রতিদিন। সেই বাংলাতেই শিক্ষায় অনবদ্য অবদানের জন্য ‘বঙ্গরত্ন’ পাচ্ছেন ইসলামপুর হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক প্রেমবিহারী ঠাকুর।
ইসলামপুরে এই প্রথম কেউ এই সম্মান পাওয়ায় গর্বিত এলাকাবাসী। বছর ছিয়ানব্বইয়ের ওই শিক্ষক এলাকার মানুষের কাছে একজন আদর্শ শিক্ষক হয়েই রয়েছেন আজও। এই বয়সেও প্রাক্তনীরা সকলে তাঁকে এখনও মনে রেখেছেন। ইংরেজিতে তাঁর দখলের তারিফ এখনও মুখে মুখে ফেরে। সাধারণ মানুষের সুরেই উচ্ছ্বসিত রাজনীতিবিদেরাও। রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেন, ‘‘আমিও ওনার ছাত্র ছিলাম। স্যারের মতো আর্দশ শিক্ষক জীবনে পাওয়া কঠিন।’’ ইসলামপুরের বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘উনি বঙ্গরত্ন পাওয়ার মতোই আদর্শবান ব্যক্তিত্ব। বঙ্গরত্নই সম্মানিত হবে ওনাকে দিলে।’’
১৯২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি জন্ম প্রেমবিহারীর। স্কুলজীবন কাটিয়েছেন বিহারের কাটিহার হাইস্কুলে। তারপর ১৯৪৫ সালে ভাগলপুর থেকে ইংরেজিতে স্নাতক হন তিনি। স্নাতকোত্তর পড়েন পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এমনকী দার্জিলিং থেকে বিএডও করেছেন। প্রেমবিহারীবাবু জানান, পড়াশোনা সম্পূর্ণ করে কিছুদিন কাটিহারে করণিকের পদে ও পরে সোনালিতে একটি হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক পদে ছিলেন তিনি।
পারিবারিক প্রয়োজনে একবার তাঁদের ইসলামপুরের পাটাগড়া এলাকাতে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তাঁর ভাই জীতেন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক থেকে চাকরি বদলের জন্য স্কুল ছাড়লেন, তখন জোর করেই প্রধানশিক্ষক পদে বসানো হয় প্রেমবিহারীবাবুকে। ইসলামপুর বিহার থেকে এই রাজ্যে সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর ইসলামপুর হাইস্কুলে প্রধানশিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তিনি। অবসর নেওয়ার পরেও বসে থাকেননি তিনি। নিজেদেরই বেসরকারি স্কুল রাজা রামমোহন চিলড্রেনস অ্যাকাডেমিতে অধ্যক্ষ হিসেবে ২০১৫ পর্যন্ত ছিলেন তিনি। সেই স্কুলে ‘দাদু স্যার’ হিসেবেই খ্যাত ছিলেন তিনি।
৮ জানুয়ারি শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সকালে তাঁকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন তাঁর নাতি, স্কুলশিক্ষক অমিতাভ ঠাকুর। দুপুরে সরকারি নির্দেশ বাড়িতে আসে। এ দিন ইসলামপুরের মেলা মাঠের বাড়িতে বসে স্মৃতি চারণ করেছেন প্রেমবিহারী। তিনি বলেন, ‘‘শেষ বয়সে এসে মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে এই ধরনের সম্মান পাওয়াটা খুবই সম্মানের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy