Advertisement
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দুই থানায় ঠেলাঠেলি

রবিবার সকালে ওই বধূ মামনি দাস তাঁর মায়ের ‘ডেথ সার্টিফিকেট ও ভোটার কার্ড’ এক ব্যক্তি দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ জমা দিতে গিয়েছিলেন।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২৫
Share: Save:

প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে শিলিগুড়ি ও প্রধাননগর এই দুই থানায় ঠেলাঠেলির পরেও এক গৃহবধূর অভিযোগ নথিভুক্ত না করায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রবিবার সকালে ওই বধূ মামনি দাস তাঁর মায়ের ‘ডেথ সার্টিফিকেট ও ভোটার কার্ড’ এক ব্যক্তি দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ জমা দিতে গিয়েছিলেন। প্রথমে শিলিগুড়ি থানা সব শুনে জানিয়ে দেয়, তাদের আওতায় থাকা হাসপাতালে মৃত্যু হলেও যে হেতু অভিযোগকারিণীর মা প্রধাননগর থানা এলাকায় থাকতেন, সেখানে অভিযোগ দিতে হবে। মামনির দাবি, প্রধাননগর থানার ডিউটি অফিসার সব জেনে অভিযোগপত্র নিতে চাইলেও অন্য এক অফিসার তাঁকে জানিয়ে দেন, তদন্তের পরেই তা নথিভুক্ত করা হবে।

এক গৃহবধূর অভিযোগ জমা নেওয়া নিয়ে ঠেলাঠেলি, হয়রানির অভিযোগ শুনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘কেউ অভিযোগ জানাতে গেলে তা জমা নিতে কোনও সমস্যা নেই। কেন এমন হয়েছে তা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে। ওই মহিলার অভিযোগও নথিভুক্ত করা হয়েছে।’’

মামনি মাথাভাঙা এলাকার বাসিন্দা শিলিগুড়ির বাঘা যতীন পার্ক এলাকায় পরিচারিকার কাজ করেন। তাঁর স্বামী রিকশাচালক। গত ২৬ ডিসেম্বর বড়দিনের ছুটি উপলক্ষ্যে মামনি স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে কোচবিহারের মাথাভাঙায় যান। ঘটনাচক্রে, তিনি যাওয়ার পরেই তাঁর মা সন্ধ্যা সাহা (৬১), অসুস্থ হয়ে পড়েন। শিলিগুড়ি হাসপাতালে তাঁকে পড়শিরাই ভর্তি করান। মামণি কোচবিহার থেকে ২ জানুয়ারি রাতে ফেরেন। পরদিন মাকে ফোন করেন। সে সময়ে একজন তাঁকে জানান, তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়েছে। মামণির অভিযোগ, ‘‘তখনই জানতে পারি, সমরনগরের বাসিন্দা নৃপেন সরকার মায়ের অন্ত্যেষ্টি করেছেন। পরে পুরসভা থেকে ডেথ সার্টিফিকেটও তুলেছেন তিনি। সেটাই লিখিত ভাবে পুলিশকে জানাতে গিয়েছিলাম। যাতে তদন্ত হয় এবং আমি ডেথ সার্টিফিকেট ও মায়ের ভোটার কার্ড পাই। কিন্তু, শুধুই হয়রানি হল।’’

বেলা ১১টা থেকে প্রায় ৩টে পর্যন্ত ওই বধূর সঙ্গে দুই থানায় ছোটাছুটি করেছেন কবি সেবন্তী ঘোষও। তাঁর বাড়িতেই মামণি কাজ করেন ও সপরিবারে থাকেন। সেবন্তী বলেন, ‘‘একটা অভিযোগ নথিভুক্ত করা নিয়ে দুই থানা যেভাবে ঠেলাঠেলি করে হয়রান করল তার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আমি স্তম্ভিত! আশা করি পুলিশের শীর্ষকর্তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri Police শিলিগুড়ি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE