শিলিগুড়ি: এসএফআইয়ের দুই নেতা রক্তাক্ত হলেন। অভিযোগের তির টিএমসিপির দিকে।
মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হতেই বিভিন্ন কলেজে মারধর শুরু হয়ে গিয়েছিল। সোমবার ফের রক্তও ঝরল। অভিযোগের তির বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তৃণমূলের দিকে। কোথাও তাদের হাতে আক্রান্ত হয়েছে এসএফআই, কোথাও এবিভিপি। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
• আহত পুলিশও
এ দিন লকশালবাড়িতে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া নিয়ে পুলিশের সামনেই টিএমসিপি এবং এসএফআইয়ের সংঘর্ষ হয়। সকালেই পুলিশের সামনে দু’পক্ষ বাঁশ, পাথর এবং ইঁট নিয়ে জড়ো হতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোনও পক্ষকেই সকাল থেকে পুলিশ অফিসারেরা নিরস্ত করার চেষ্টা করেননি। তাই মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় শুরু হতেই সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। টিএমসিপির সমর্থকেরা কলেজের গেটটিও ভেঙে ফেলে বলে অভিযোগ। পুলিশের দিকে ঢিল বৃষ্টি শুরু হয়। ইটের ঘায়ে জখম হন সার্কেল ইন্সপেক্টর কল্যাণ গুরুঙ্গ-সহ ৩ জন পুলিশকর্মী। পুলিশ তিন রাউন্ড কাঁদানো গ্যাসের শেল ফাটানোর পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। তবে এলাকার দখলকে ঘিরে বিকাল অবধি গোলমাল চলে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন দখম হয়েছেন। এসএফআইয়ের দাবি, তাদের এক ছাত্রীর হাত ভেঙেছে। এক ছাত্রের পায়ে গুরুতর চোট লেগেছে। কয়েকজনকে নকলবাড়ি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। টিএমসিপি’র জেলা সভাপতি নির্ণয় রায় বলেন, ‘‘বহিরাগতদের নিয়ে এসএফআই কলেজে মনোনয়ন জমা করতে গিয়েছিল। আমাদের ছাত্রদের উপর ওরা হামলাও চালিয়েছে।’’ এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক সৌরভ দাসের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘এ বারও জিতব বুঝতে পেরে পুলিশের একাংশ, বহিরাগতদের নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায় টিএমসিপি। আমাদের বহু মনোনয়নপত্র ছিঁড়ে দিয়েছে।’’ দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘পুলিশ পর্যাপ্তই ছিল। বিভিন্ন দিক থেকে পুলিশকে লক্ষ করে ঢিল, ইট ছোড়া হয়েছে। পুলিশকর্মীরাই জখম হয়েছেন।’’ নকশালবাড়ি কলেজের অধ্যক্ষ সমীরেন্দ্র সরকার জানান, আজ, মঙ্গলবার বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছে। এই কলেজের ২২ অাসনে এ দিন ৩৭টি মনোনয়ন জমা পড়েছে।
• ক্যান্টিনে ওয়ার-রুম
সোমবার আলিপুরদুয়ার জেলার সাতটি কলেজের নির্বাচনের মনোনয়ন তোলার দিন ছিল। শহরের আলিপুরদুয়ার কলেজের ক্যান্টিনে ঢুকে কার্যত ‘ওয়ার-রুম’ খুলে জেলার কলেজগুলির খবরাখবর নিলেন নেতারা। জয়গাঁ কলেজে এসএফআইয়ের সদস্যের মনোনয়ন পত্র ছেঁড়ার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ অবশ্য জানান, আলিপুরদুয়ার শহরের তিনটি কলেজে কোনও অভিযোগ তাঁদের কাছে নেই। এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ দেখা যায় আলিপুরদুয়ার শহর সংলগ্ন বিবেকানন্দ কলেজের বাইরে দাঁড়িয়ে বহিরাগতদের কলেজে না ঢোকার নির্দেশ দিচ্ছেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সমর ভট্টাচার্য। কিছুক্ষণ পরেই কলেজের ভেতের নিজে ঢুকে কলেজের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। সেখান থেকে দলবল নিয়ে চলে যান আলিপুরদুয়ার কলেজের ক্যান্টিনে। সমরবাবু জানান, তিনি বিবেকানন্দ কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য। এ দিন তিনি কলেজে একাই ঢোকেন কলেজের উন্নয়ন নিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে। ক্যান্টিনে বসে চা খেয়েছেন মাত্র। মহিলা কলেজের বারান্দার বাইরে দাড়িয়ে ছাত্রীদের কুশল জেনে ফিরে এসেছেন।
• হেলমেট দিয়ে মার
সোমবার শিলিগুড়ি কলেজে এসএফআই’য়ের দুই নেতা রক্তাক্ত হন। হেলমেট দিয়ে মেরে সাগর শর্মা নামে এক নেতার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রহৃত হন বিমান ভট্টাচার্য নামে আর এক নেতাকেও। সেখানে যান মেয়র পারিষদ তথা ডিওয়াইএফ নেতা শঙ্কর ঘোষ, জয় চক্রবর্তী, রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ সমন পাঠক। এসএফআই’য়ের জেলা কমিটির সদস্য সাগর শর্মা বলেন, ‘‘ ধাক্কা দিয়ে নিয়ে গিয়ে হেলমেট দিয়ে মেরেছে টিএমসিপি।’’ গোলমালের পর অবশ্য এসএফআই প্রার্থীরা দল বেঁধে কলেজে ঢুকে মনোনয়ন তুলেছেন। ৫৪টি আসনে এ দিন ১০২টি মনোনয়ন পত্র তোলা হয়েছে। এসএফআই-এর দাবি তারা ১২টি মনোনয়ন পত্র তুলেছেন। ছাত্র পরিষদ এ দিন ১৪টি মনোনয়ন পত্র তুলেছে। বাকি সমস্ত মনোনয়ন তুলেছে টিএমসিপি’র দুটি গোষ্ঠী। টিএমসিপি’র গোষ্ঠী কোন্দল অবশ্য মানতে চাননি নির্ণয়। তাঁর দাবি, ‘‘জমা করার আগে আলোচনা করা হবে।’’
• ভোজালির কোপ
ফালাকাটা কলেজ এলাকায় এবিভিপির প্রার্থীদের নিয়ে মনোনয়ন তুলতে যাওয়ার পথে কলেজের কাছেই টিএমসিপির সমর্থকদের ভোজালির কোপে মাথা ফাটল এবিভিপির ব্লক সভাপতি সুজিত ঘোষের। এবিভিপির দাবি টিএমসিপির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানো হবে। টিএমসিপি নেতা অনন্ত সরকার অবশ্য বলেন, “আমরা ভিতরে শান্তিপূর্ণ ভাবে মনোনয়ন তুলছিলাম। বাইরে কিছু হয়েছে কি না বলতে পারব না।” ফালাকাটা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রদীপ অধিকারী বলেন, “কলেজের ভিতরে কোনও অশান্তি হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy