Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

প্রচারের মাঝে খুনের হুমকি ফব বিধায়ককে

দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারের সময় কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক অক্ষয় ঠাকুরকে ঘিরে ধরে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা খুনের হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঊত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কোতোয়ালি থানার হাড়িভাঙার রাশিডাঙ্গায়। তৃণমূল অবশ্য ওই ঘটনাকে ‘জনরোষ’ বলে দাবি করেছে।

পুলিশকে অভিযোগ জানাচ্ছেন অক্ষয়বাবু। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

পুলিশকে অভিযোগ জানাচ্ছেন অক্ষয়বাবু। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৪৭
Share: Save:

দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারের সময় কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক অক্ষয় ঠাকুরকে ঘিরে ধরে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা খুনের হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঊত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কোতোয়ালি থানার হাড়িভাঙার রাশিডাঙ্গায়। তৃণমূল অবশ্য ওই ঘটনাকে ‘জনরোষ’ বলে দাবি করেছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, অক্ষয়বাবু এবং তাঁর সঙ্গে থাকা দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস বণিক, জেলার সিপিএম নেতা কামিনী রায় এক কর্মীর বাড়িতে ভিতরে আশ্রয় নেন। পরে নির্বাচন কমিশনের দল ও পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। তাঁদের অভিযোগ, “এই ঘটনার পিছনে এক ভিলেজ পুলিশের উস্কানি রয়েছে। এবং এক পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গেও তৃণমূল নেতাদের যোগাযোগ রয়েছে। তাঁরা ছক কষে হামলার পরিকল্পনা তৈরি করে।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সেখানে গিয়েছে। সমস্ত রিপোর্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অক্ষয়বাবু বলেন, “নির্বাচন কমিশন এবং পুলিশ কর্তাদের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছি। লিখিতভাবেও জানাচ্ছি। আমাদের ঘিরে ধরে হাত, পা, মাথা কেটে নেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হল। গালিগালাজ করা হয়। পুলিশ ঢোকার দুই মিনিট আগে তৃণমূল কর্মীরা এলাকা ছেড়ে দেয়। পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকলে এটা হয় না। এছাড়া একজন ভিলেজ পুলিশ উসকানি দিয়েছেন।”

দলের কোনও কর্মী ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, “ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক অক্ষয়বাবু ওই এলাকায় জনরোষের শিকার হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। মানুষ তাঁর কাছ থেকে জানতে যান, ৩৪ বছরে কেন উন্নয়ন হয়নি, রাস্তাঘাট কেন হয়নি? এখানে দলের কোনও ব্যাপার নেই। তৃণমূলের নামে মিথ্যে অভিযোগ করেছেন ওই বিধায়ক।”

হাড়িভাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক অক্ষয়বাবুর নিজের বিধানসভা এলাকার মধ্যে পড়ে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে ওই এলাকায় বামেদের ধস নামে। প্রায় প্রত্যেকটি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূল দখলে নেয়। হাড়িভাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতও তৃণমূলের দখলে রয়েছে। এদিন ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের রাশিডাঙ্গা এলাকায় পদযাত্রা-সহ নানা কর্মসূচি করতে যান বিধায়ক। অনুমতি নিয়েই তাঁর সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত প্রচার করার কথা ছিল।

পুলিশ সূত্রের খবর, বেলা ১১টা নাগাদ তিনি রাশিডাঙ্গার ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মী ভবানী রায়ের বাড়িতে যান। বাড়ির উঠোনে বসে কথা বলার সময় কয়েকজন তৃণমূল সমর্থকরা তাঁকে ঘিরে ধরেন বলে অভিযোগ। অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে দেখে তাঁরা ওই বাড়ির ঘরের ভিতরে ঢুকে যান। সে সময় বাড়ি ঘেরাও করে গালি দেওয়ার পাশাপাশি অক্ষয়বাবুকে খুনের হুমকি দেওয়া বলে অভিযোগ। বাম নেতাদের অভিযোগ, তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করেছিলেন।

বাম নেতারা কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের বিডিও স্বপন পাত্র এবং পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আধঘণ্টা পরে নির্বাচন কমিশনের কর্মীরা এবং পুলিশ সেখানে পৌঁছয়। ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা দেবাশিসবাবু বলেন, “নির্বাচন কমিশন অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থার কথা বলছে। এই যদি অবস্থা হয়, তাহলে মানুষ ভোট দেবেন কী ভাবে?” যাঁর বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে, সেই সিপিএম নেতা ভবানীবাবু বলেন, “অনেকক্ষণ ধরে নেতারা প্রচার করছিলেন। তাই তাঁদের চা খেতে আমন্ত্রণ করেছিলাম। সেই সময় ঘটনাটি ঘটে।” ওই ভিলেজ পুলিশ অবশ্য বলেন, ‘‘ঘটনার কথা জানি না। আমি কোনও পার্টি করি না। আমি ডিউটিতে ছিলাম। কেন এরকম অভিযোগ তোলা হচ্ছে বুঝতে পারছি না?”

অন্য বিষয়গুলি:

coach bihar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy