প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির ভাই ও স্ত্রীর লড়াইয়ে প্রিয়রঞ্জনকেই হাতিয়ার করে তাঁর ভাইয়ের পক্ষে সওয়াল করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী সত্যরঞ্জন দাশমুন্সি প্রিয়বাবুর ভাই। ওই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি প্রিয়বাবুর স্ত্রী। ওই জেলায় গিয়ে বুধবার মমতার কথায় বারবার কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ প্রিয়বাবুর কথাই উঠে এল। তাঁর সোজাসুজি বক্তব্য, “প্রিয়দাকে আমি শ্রদ্ধা করি। প্রিয়দা যতদিন সুস্থ ছিলেন, আপনারা তাঁরই পাশে ছিলেন। এ বার তাঁর ভাইয়ের পাশে দাঁড়ান।” দীপার পাল্টা বক্তব্য, “তৃণমূল ভোটে জেতার জন্য যে দাশমুন্সি পদবি ব্যবহার করছে, তা প্রমাণ হল।”
মমতা এ দিন জানিয়েছেন, সত্যরঞ্জন জিতলে রাজ্য সরকারকেও পাশে পাবেন এলাকার মানুষ। মমতার ঘোষণা, “আপনারা আমার কাছ থেকেও যতটা সাহায্য পাওয়ার সব পাবেন। উন্নয়নে বঞ্চনা করা হবে না।” তাঁর দাবি, বর্তমান সাংসদ দীপার আমলে এই এলাকায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। দীপার নাম না করে মমতা বলেন, “কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে জয়ী হয়ে কেউ কেন্দ্রে মন্ত্রী হয়ে গেলেন। কিন্তু নিজের এলাকার কোনও উন্নয়নই করতে পারলেন না।” তাঁর অভিযোগ, উত্তর দিনাজপুরে পাটের চাষ ভাল হলেও এখানকার পাটচাষিরা লাভের মুখ দেখতে পান না। কেননা, এলাকার সাংসদ তথা মন্ত্রী এই ব্যাপারে উদ্যোগী নন। জাতীয় সড়ক মেরামতির কাজেও সাংসদের উদাসীনতায় কেন্দ্রের কাছ থেকে যথেষ্ট সাড়া মেলেনি।
লোকসভা ভোট ঘোষণা হওয়ার পরে বুধবারই মমতা প্রথম উত্তরবঙ্গে গেলেন। পাশাপাশি দুই জেলা দক্ষিণ দিনাজপুর ও উত্তর দিনাজপুরের দুই লোকসভা কেন্দ্র বালুরঘাট ও রায়গঞ্জের কর্মিসভা করলেন ইটাহারের দুর্গাপুরে। বিকেল চারটে দুর্গাপুর থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে আটঘড়িয়া এলাকায় হেলিকপ্টারে করে কলকাতা থেকে পৌঁছন তিনি। বেলা ১২টা থেকেই অবশ্য কর্মিসভা এলাকায় ভিড় করে ছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। কর্মিসভা ভিড়ে উপছে পড়ায় মমতার নির্দেশেই সেখানে সবাইকে আসার সুযোগ করে দেওয়া হয়। মমতা বলেন, “অন্য দলগুলি বন্ধ ঘরে সভা করে। আমরা যে তা করি না, মানুষকে সঙ্গে নিয়েই চলি, কর্মিসভায় এই ভিড় তারই প্রমাণ।”
এই এলাকাটি উত্তর দিনাজপুরের মধ্যে পড়লেও বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। উত্তর দিনাজপুরের খুব স্পর্শকাতর বিষয় এইমস ধাঁচের হাসপাতাল নির্মাণ প্রসঙ্গও তিনি এ দিন নিজেই তুলেছেন। তিনি আবার জানান, হাসপাতাল তৈরির জন্য তিনি কোনওমতেই চাষিদের কাছ থেকে জোর করে জমি নেবেন না। তবে সেই সঙ্গেই তাঁর প্রশ্ন, যারা এতদিন কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল, সেই কংগ্রেস কেন এইমসের জন্য রায়গঞ্জে জমি অধিগ্রহণ করাতে পারেনি? মমতার আশ্বাস, রায়গঞ্জে আধুনিক হাসপাতাল ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।
দীপা অবশ্য বলেন, “এই এলাকার উন্নয়নের সব থেকে বড় সুযোগ তৈরি হত, যদি এইমস তৈরি করতে দেওয়া হত। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তির কারণেই তা হচ্ছে না।” তাঁর দাবি, সে কারণে এলাকার উন্নয়নের প্রশ্নে সব থেকে বড় বাধা তো রাজ্য সরকারই। জাতীয় সড়ক মেরামতির জন্য কেন্দ্রে কাছ থেকে তিনি ৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ আদায় করে এনেছেন বলেও দাবি দীপার। তিনি জানান, পাট শিল্পের উন্নয়ন নিয়েও উদ্যোগী হয়েছিলেন প্রিয়রঞ্জনই। কিন্তু সব কাজে রাজ্য সরকারই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
দীপার দেওর সত্যরঞ্জনবাবু অবশ্য বলেন, “রাজ্য সরকার উন্নয়নই চায়। দিদির হাত ধরেই দাদার সব স্বপ্ন পূরণ করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy