Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

৩ মাস মাথাহীন মাদ্রাসা পর্ষদও

মাথাভারী পরিচালন ব্যবস্থার সমস্যা এক রকম। আর মাথাহীন অবস্থায় কাজকর্ম কী ভাবে চলে কিংবা চলে না, হাড়ে হাড়ে বুঝছে রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেমন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নেই দীর্ঘদিন।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৭ ০৩:০৯
Share: Save:

মাথাভারী পরিচালন ব্যবস্থার সমস্যা এক রকম। আর মাথাহীন অবস্থায় কাজকর্ম কী ভাবে চলে কিংবা চলে না, হাড়ে হাড়ে বুঝছে রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেমন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নেই দীর্ঘদিন। সেখানে শীর্ষ স্তরের অন্য বেশ কিছু পদও ফাঁকা। একই ভাবে রাজ্য মাদ্রাসা পর্ষদে তিন মাস ধরে কোনও সভাপতিই নেই!

মাদ্রাসা পর্ষদের আগের সভাপতি অবসর নিয়েছেন গত ৩১ ডিসেম্বর। তার পর থেকে ওই পদের জন্য নাকি যোগ্য লোকই খুঁজে পায়নি রাজ্য সরকার! বর্তমানে পর্ষদ-সভাপতির অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মাদ্রাসা শিক্ষা অধিকর্তা। এবং দু’টি গুরুত্বপূর্ণ দফতর এক ব্যক্তিকে দিয়ে সামাল দিতে গিয়ে পর্ষদের বিভিন্ন কাজকর্ম লাটে উঠেছে বলে অভিযোগ।

‘‘মাদ্রাসা পর্ষদের স্থায়ী সভাপতি না-থাকায় নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরলেই পুরো বিষয়টি তাঁকে জানাব,’’ বলছেন রাজ্যের মাদ্রাসা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী গিয়াসুদ্দিন মোল্লা।

কী ধরনের সমস্যা হচ্ছে?

মাদ্রাসা শিক্ষা অধিকর্তার দফতর সল্টলেকের বিকাশ ভবনে। আর মাদ্রাসা পর্ষদের অফিস তালতলার হাজি মহম্মদ মহসিন স্কোয়ারে। মাদ্রাসা পর্ষদের খবর, বিকাশ ভবনে কাজ সামলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিকর্তা আবিদ হোসেন নিয়মিত পর্ষদের অফিসে যেতে পারেন না। পর্ষদের যে-কোনও সিদ্ধান্ত সচিবকে ছুঁইয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সভাপতির কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু সভাপতি নিয়মিত না-আসায় ফাইল জমছে।

মাদ্রাসা পর্ষদের এক কর্তা জানান, রাজ্যের অনুমোদিত ৬১৪টি মাদ্রাসার মধ্যে অর্ধেকেরই পরিচালন সমিতির মেয়াদ ফুরিয়েছে ডিসেম্বরে। ওই সব সমিতির পুনর্নবীকরণের জন্য পর্ষদ-সভাপতির সই লাগে। সভাপতি-পদে এখন স্থায়ী ভাবে কেউ না-থাকায় পরিচালন সমিতির পুনর্নবীকরণের কাজও থমকে গিয়েছে। তৃণমূল বিধায়ক ও মাদ্রাসা পর্ষদের সদস্য মহম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, ‘‘একই ব্যক্তিকে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব দেওয়ায় পর্ষদের কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে।’’

এপ্রিলে পরীক্ষা। অথচ বেশির ভাগ মাদ্রাসায় পাঠ্যবই পৌঁছয়নি। তার জন্যও পর্ষদ-সভাপতির পদ ফাঁকা থাকাটাই দায়ী বলে মনে করছেন অধিকাংশ মাদ্রাসা-শিক্ষক। ‘‘স্থায়ী সভাপতি না-থাকায় সমস্যা হচ্ছে যোগাযোগের। দুর্বল হয়ে পড়ছে মাদ্রাসা শিক্ষার পরিকাঠামো,’’ বললেন মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের তকিপুর হাইমাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু মোতালেব।

স্থায়ী সভাপতি না-থাকায় গত তিন মাসে পর্ষদের কোনও বৈঠকই হয়নি। মালদহের মিতনা মোমতাজিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক তথা পর্ষদ-সদস্য মহম্মদ আতাউর রহমান বলেন, ‘‘রাজ্যের মাদ্রাসাগুলির সার্বিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে যে-কোনও ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে গেলে মাদ্রাসা পর্ষদের বৈঠকে সদস্যদের সকলের সম্মতি লাগে। কিন্তু তিন মাস ধরে বোর্ডের বৈঠক না-হওয়ায় কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না।’’

কাজ আটকে থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাদ্রাসা শিক্ষা অধিকর্তা আবিদ হোসেন। তাঁর দাবি, ‘‘আমি নিয়মিত পর্ষদের অফিসে উপস্থিত হতে না-পারলেও সেখানে কোনও ফাইল জমে নেই।’’ মেয়াদ ফুরোনোর পরে কিছু মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির পুনর্নবীকরণ নিয়ে সমস্যা যে আছে, তা মেনে নিয়েও আবিদ হোসেনের বক্তব্য, এই ধরনের মাদ্রাসার সংখ্যা খুবই কম।

অন্য বিষয়গুলি:

Madrasah Council President
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy