সীতাভোগ-মিহিদানার পর এ বার ভাগ্য ফিরতে পারে নকুলদানা-বাতাসারও!
বর্ধমান শহর ঘেঁষা বামচাঁদাইপুরে ‘মিষ্টি বাংলা হাব’ গড়ে তোলার জন্য ইতিমধ্যে উদ্যোগী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শক্তিগড়ের ল্যাংচা, বর্ধমানের সীতাভোগ, মিহিদানা ছাড়াও ওই মিষ্টি হাবে আশপাশের জেলার প্রসিদ্ধ সব মিষ্টি যেমন তৈরি হবে, তেমনই তার বিপণন ও রফতানির ব্যবস্থাও করবে সরকার। ঠিক একই রকম ধাঁচে এ বার বাতাসা, নকুলদানা, বড়ি ও মোরব্বা তৈরির জন্য শিল্প তালুক গড়ে তুলতে চায় রাজ্য। উদ্দেশ্য এই ব্যবসায় যুক্ত ব্যবসায়ী-কারিগরদের এক ছাদের তলায় আনা। উৎপাদন বাড়াতে সরকারি সাহায্যে তাঁরা উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারও করতে পারেন। সেই সঙ্গে বিপণনের দরজাও প্রসারিত হতে পারে।
সরকারের এই ভাবনার কথা জানিয়ে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ শুক্রবার জানান, এ ব্যাপারে তাঁর দফতর ইতিমধ্যেই একটি সমীক্ষা করেছে। তাঁর কথায়, বাতাসা, নকুলদানা, ডালের বড়ি, মোরব্বা তৈরির সঙ্গে বাংলায় কয়েক হাজার কারিগর ও তাদের পরিবার জড়িত। কিন্তু উৎপাদন কম হওয়া এবং বিপণনের অভাবে তাদের রোজগার একেবারেই নামমাত্র। অথচ বাস্তব হল, শুধু বাংলায় নয়, বাংলার বাইরেও এ সবের চাহিদা প্রচুর। এমনিতে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। তা ছাড়া পুজো, উৎসবের সংখ্যাও বেড়েছে। ফলে বাতাসা, নকুলদানার মতো প্রসাদ সামগ্রীর চাহিদাও বেড়েছে। ইদানিং বিদেশেও প্যাকেজিং করা বাতাসা, নকুলদানা, বড়ি, মোরব্বা রফতানি করছে বহুজাতিক রিটেল সংস্থাগুলি। প্রযুক্তি ব্যবহার করে এগুলির উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করতে চায় সরকার। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রীর কথায়, হিসাব করে দেখা গিয়েছে, এই ভাবনার বাস্তবায়ন হলে কর্মসংস্থানের সুযোগ যেমন তৈরি হবে, তেমনই এই সব শিল্পের কারিগরদের দিনে অন্তত সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা রোজগার হবে।
কিন্তু কোথায় হবে ওই শিল্প তালুক?
স্বপনবাবু জানান, প্রাথমিক ভাবে বর্ধমানের কথাই তাঁর মাথায় রয়েছে। কারণ, নকুলদানা, বাতাসা বা ডালের বড়ি তৈরির জন্য রাজ্যের যে কোনও এলাকাতেই শিল্পতালুক গড়া যায়। কিন্তু সেখানে মোরব্বা তৈরির ব্যবস্থা রাখতে গেলে চালকুমড়োর চাষ হয়, এমন এলাকা বাছতে হবে। সে দিক থেকে শক্তিগড়, রসুলপুর এলাকা বেছে নেওয়া যেতে পারে।
দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া বামচাঁদাইপুরে মিষ্টি বাংলা হাব গড়ে তোলার কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। গোড়ায় এই হাবের নাম বাছা নিয়ে সমস্যা ছিল। তখন নাম দেওয়া হয়েছিল, ‘ল্যাংচা তীর্থ’। তা ছাড়া প্রস্তাবিত এই হাবের জমি নিয়েও সমস্যা হয়েছিল। কিন্তু এখন জোর কদমে কাজ চালিয়ে আগামী মাসের ১৪ তারিখ উদ্বোধনের দিন স্থির করা হয়েছে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রী শুক্রবার জানান, বাতাসা-নকুলদানার জন্য শিল্প তালুক গড়ে তুলতেও তাঁরা বদ্ধপরিকর!
এখানেই অবশ্য শেষ নয়, বাংলার আরও এক কুটির শিল্পকে সংগঠিত ভাবে ব্যবসার সুযোগ করে দিতে চায় তাঁর দফতর। সেটা কী?
স্বপনবাবু এ দিন হেসে বলেন, ‘‘আজই বলে দেব? আচ্ছা বলছি। বিয়ের টোপর!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy