রানাঘাট থেকে দলীয় নেতৃত্বকে একাধিক বার্তা দিলেন অভিষেক। পঞ্চায়েত ভোটের আগে সুর বেঁধে দিলেন নেতৃত্বের। —ফাইল চিত্র।
সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে নদিয়ার রানাঘাটে আমজনতার কাছে ‘ক্ষমা’ চাইলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধরে নেওয়ার জন্য সুযোগ চাইলেন তিনি।
শনিবার রানাঘাটের ‘মিলন মন্দির’ মাঠে জনসভায় লোক সমাগম দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘‘আমি সভায় আসার দু’ঘণ্টা আগে মানুষে ভর্তি হয়ে গিয়েছে।’’ বস্তুত, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে রানাঘাটে ভরাডুবির পর এটাই তৃণমূলের প্রথম বড় সভা। অভিষেকের সভা অন্তত দেড় লাখ মানুষ দিয়ে ভরানোর লক্ষ্য ছিল স্থানীয় নেতৃত্বের। সেই সূত্র ধরে বলতে গিয়ে অভিষেক টেনে আনলেন গত বিধানসভা এবং লোকসভা ভোটের খতিয়ানের কথা। কেন গত ভোটের ফলাফল খারাপ হল, সেই প্রশ্ন করে প্রথমে দলের নেতাকর্মীদের দাওয়াই দেন অভিষেক। বলেন, ‘‘আমরা এমন পঞ্চায়েত তৈরি করব যা শুধু মানুষের জন্য, আমাদের জন্য। যদি কেউ নিজের জন্য তৃণমূল করতে চান, দরজা খোলা আছে, বেরিয়ে যান। অন্যদের দলটা করতে দিন।’’ এর পরই জনতার কাছে ভুল শুধরে নেওয়ার জন্য সুযোগ চাইলেন তিনি।
রানাঘাটে শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দলের ছবি দেখা গিয়েছে বার বার। সে ব্যাপারে অভিষেক যে নীলনকশা তৈরি করেই এসেছেন, তা বোঝা গেল তাঁর মন্তব্যে। তিনি বলেন, ‘‘দলের কিছু লোকের জন্য মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।’’ তার পর স্থানীয় নেতৃত্বের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘তৃণমূল থেকে রানাঘাটের মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিল কেন? রানাঘাট লোকসভায় কেন ফল খারাপ হল?’’
এর পর সরাসরি জনতার দরবারে চলে গেলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। উপস্থিত কর্মী এবং সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁর সরাসরি প্রশ্ন, ‘‘আপনারা কি জেলার পঞ্চায়েত ব্যবস্থা নিয়ে খুশি? জোর গলায় বলুন, কোনও ভয় নেই। আপনাদের সুরক্ষার ভার আমার। আমার কাছে যা খবর আছে ঠিক না ভুল?’’ তাঁর সংযুক্তি, ‘‘আগামী পঞ্চায়েত ভোট অবাধ হবে। গণতান্ত্রিক ভাবে হবে। এটা আমার গ্যারান্টি। জোর খাটালে দল থেকে বের করে দেব। এক ঘণ্টায় দল থেকে বার করব। দু’ঘণ্টার মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা হবে।’’ তার পর জনতার উদ্দেশে অভিষেক বলেন, ‘‘আপনারা কথা দিন এখানে আমাদের শুধরানোর সুযোগ দেবেন। ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা করুন। কিন্তু মুখ ফিরিয়ে নেবেন না। যাঁরা বেইমানি করেছেন, তার হিসেব কড়ায়-গণ্ডায় মেটাব।’’
শনিবার অভিষেকের মন্তব্যে ভোটমুখী বাংলায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের অনুরণন শোনা গেল। পঞ্চায়েতের প্রার্থী চয়ন করার ভারও জনতাকে দিলেন তিনি। বললেন, ‘‘আপনারা বলুন কাকে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। মানুষকে দায়িত্বই দিয়ে যাচ্ছি। ৭৮৮৭৭৭৮৮৭৭— এই নম্বরে সরাসরি ফোন করবেন। যদি আপনার মনে হয় এলাকায় এক জন সজ্জন ব্যক্তি আছেন, যিনি দলের জন্য নয়, মানুষের জন্য কাজ করবেন, তাঁর নাম বলুন। কথা দিচ্ছি, তাকেই প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করব।’’ শেষে তাঁর সংযুক্তি, ‘‘আপনাদের যেমন অভিমান আছে, আমারও আছে। কিন্তু আমি বলছি আপনাদের দাবিকে মান্যতা দিয়েই দল কাজ করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy