প্রতীকী ছবি।
নিজস্ব সংবাদদাতা
সুতি
দিদিমাকে খুনের ঘটনায় নাতির দিকে সন্দেহের আঙুল উঠেছিল শুক্রবারই। রবিবার সকালেই সন্দেহবিদ্ধ ছেলেকেই সুতি থানার পুলিশের হাতে তুলে দিলেন মা আকতারা বিবি। পুলিশ অবশ্য তাকে এখনও গ্রেফতার না করলেও এ দিন সকাল থেকেই টানা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে আকবর নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে সুতি থানার ডিহিগ্রামে ৬৯ বছরের বৃদ্ধা মেহেরজান বেওয়াকে তাঁর বাড়িতে ঘরের মধ্যে বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ঘর থেকে চুরি যায় বেশ কিছু সোনার গহনা ও টাকা। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা যায় শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে মহিলাকে। পরিবার ও পুলিশের সন্দেহ, পরিচিত কেউ এই খুন ও লুঠপাটের ঘটনায় জড়িত। কারণ ঘরের দরজা ছিল খোলা। ঘরের মধ্যে মেলে এক যুবকের ছবিও। যাতে সন্দেহ গিয়ে পড়ে তার উপর। তাকে ডেকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদও করে পুলিশ। পরে ছেড়ে দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই বৃদ্ধার ৬ ছেলেমেয়ে। তিন ছেলে তাঁদের পরিবার নিয়ে থাকেন আশপাশেই নিজেদের বাড়িতে। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন আশপাশের গ্রামেই। বৃদ্ধার সঙ্গে থাকতেন তার এক সত্তরোর্ধ্ব দিদিও। বৃদ্ধা ঘুমোতেন ঘরের মধ্যে, বাইরে সিঁড়ির নীচে ঘুমোতেন দিদি। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতেন তাঁরা।
কিন্তু এদিন বৃদ্ধা মেহেরজান ঘুম থেকে না ওঠায় ঘরে ঢুকে ডাকাডাকি করতে গিয়ে তার পরিবারের লোকেরা দেখেন ঘরের জিনিস পত্র চারিদিকে ছড়ানো। সোনার গহনা ও টাকা পয়সা উধাও। এমনকি বৃদ্ধার কানের দুলও ছিড়ে নেওয়া হয়েছে। মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন বৃদ্ধা।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ওই বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল পাশেই গাজিপুরে বিয়ে হওয়া বৃদ্ধার ছোট মেয়ের ছেলে আকবরের। নাতিকে খুব ভালবাসতেন দিদিমাও। এরপরই পুলিশের সন্দেহ গিয়ে পড়ে সেই নাতির উপরই। পরিবারের লোকজন থেকে প্রতিবেশীরাও সকলেই সন্দেহ করতে থাকেন নাতিকেই।
তার মাসতুতো ভাই আবু তাহের বলেন, “দিদিমার মৃতদেহ মিলতেই আকবরকে ফোন করি। সে জানায় সে গুয়াহাটি যাচ্ছে। এখন তাই বাড়ি ফেরা সম্ভব নয়। সন্দেহ আরও বাড়ে। এমনকী ওই ছেলের মা (মৃতার ছোট মেয়ে) আকতারার মনেও সন্দেহ দেখা দেয় মায়ের মৃত্যু নিয়ে।”
শনিবার গভীর রাতে সুতির গাজিপুরে বাড়িতে ফেরে আকতারার ছেলে। মা তাকে জেরা শুরু করেন রাতেই। কিন্তু ঘটনার কথা অস্বীকার করে সে।
সকালেই আকতারা ফোন করেন আবু তাহেরকে। ছেলের বাড়ি ফেরার কথা জানিয়ে সুতি থানায় খবর দিতে বলেন। এরপর পুলিশ আকবরকে তাঁদেরই নিয়ে আসতে পরামর্শ দেয়। এরপরই আকতারা ছেলেকে পুলিশের কাছে সুতি থানায় পৌঁছে দেন।
আকতারা বলেন, “জানি না ছেলে এই কাণ্ডে জড়িত কি না। মা নাতিকে চরম ভালবাসত। ডিহিগ্রামে দিদিমার বাড়িতেও নিয়মিত যেত ছেলে। পুলিশকে বলেছি যদি মনে হয় আমার ছেলে এই ঘটনায় জড়িত থাকে তাহলে সে যেন কঠিন শাস্তি পায়। রবিবার সকালেই ছেলেকে সুতি থানার হাতে তুলে দিয়েছি।”
সুতি থানার পুলিশ জানিয়েছে, সকাল থেকেই টানা জিজ্ঞাসাবাদ চলেছে। তার পরে রাতে আকবরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy