এ ভাবেই সারা দুপুরের খাবার।
দূর থেকে স্কুল বাড়িটাকে দিব্যি লাগে। কিন্তু হতশ্রী চেহারাটা বেরিয়ে পড়ে টিফিন পিরিয়ডে।
মিড ডে মিলের থালা হাতে ছেলেময়েরা খোলা আকাশের নীচে বসে পড়ে। সেখানে যারা বসতে পারে না তারা স্কুলের পাঁচিলে থালা রেখে দাঁড়িয়ে খায়। ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে থালা হাতে একছুটে স্কুলের বারান্দায়। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হাজার-বারোশো পড়ুয়ার ওই মেঝেটুকুতে ঠাঁই হয় না। কিন্তু সেখানেই হুড়োহুড়ি করে বসতে গিয়ে সে এক মস্ত ঝঞ্ঝাট। নেই বিশুদ্ধ পানীয় জল, রান্নাঘরের দশাও তথৈবচ। জিয়াগঞ্জ-মুর্শিদাবাদ ব্লকের এই স্কুলের নাম আমাইপাড়া উদ্বাস্তু বিদ্যাপীঠ।
সমস্যার কথা কবুল করে প্রধানশিক্ষক শিবেনচন্দ্র মণ্ডল বলছেন, ‘‘কী করব বলুন! মিড ডে মিলের খুবই করুণ দশা! প্রশাসনিক কর্তাদের কত বার জানিয়েছি। তাঁরা নিজে চোখেও সব দেখে গিয়েছেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।’’ তিনি জানান, স্কুলের দোতলার পূর্ব দিকের ১২টি ঘরের ছাদে ও বিমে ফাটল ধরেছে। ছাদ চুঁইয়ে ঘরের ভিতরে জল পড়ে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ওই ঘরগুলি বন্ধ। নাহলে সেখানেও মিড ডে মিল খাওয়ানো যেত।
স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক তথা তৃণমূলের জিয়াগঞ্জ-মুর্শিদাবাদ ব্লক সভাপতি দেবাশিস সরকার বলেন, ‘‘পানীয় জল, ডাইনিং শেড, নতুন ঘর তৈরির দায়িত্ব— সবই সরকারের। সরকারের কাছে অনেক দরবার করেছি। তারপরও সরকার কিছু না করলে তো আমরা অসহায়।’’
মুর্শিদাবাদ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পূরবী দে বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্কুল থেকে এমন কোনও আবেদন আমার কাছে পৌঁছয়ইনি। ফলে স্কুল থেকে সমস্যার কথা না জানালে সমস্যার সমাধান হবে কী করে!’’ তিনি লালগোলা এম এন অ্যাকাডেমির মিড ডে মিলের প্রশংসা করে বলেন, ‘‘লালগোলা কী করে পারছে? শিক্ষকরা সক্রিয়, সচেতন ও উদ্যোগী না হলে স্কুলের উন্নতি অসম্ভব।’’ সহকারি শিক্ষক পলাশকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে পরিচ্ছন্ন হয়ে খেতে নির্দেশ দেওয়ার পরে তাদের ধুলো ময়লার মাঠে খেতে পাঠাচ্ছি। স্বচ্ছ ভারত, নির্মল বাংলার জমানায় এর চেয়ে আর বড় প্রহসন কী হতে পারে!’’
—নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy