আদালতে বসে আইনজীবীরা। —নিজস্ব চিত্র
বিচারককে অপদস্থ করার অভিযোগে, সোমবার কান্দি মহকুমা আদালতে দিনভর কর্মবিরতি পালন করলেন আইনজীবীরা।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে, বিল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মহকুমা ট্রেজারিতে এক মুনসেফকে সঙ্গে নিয়ে ওই আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বিচারক অশোক হালদার।
অভিযোগ, দেখা করা তো দূরের কথা, বরং ওই বিচারকের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন ওই আধিকারিক। খবর ছড়িয়ে পড়তেই, কান্দি আদালতে কর্মবিরতি শুরু করে দেন আইনজীবীরা। তাঁদের দাবি— বিচারককে অপমান করে কার্যত আইন ব্যবস্থাকেই ছোট করা হয়েছে।
তাঁদের দাবি, মহকুমা ট্রেজারির ওই আধিকারিককে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে জানাতে হবে— ভুল করেছেন তিনি। না হলে, তাঁদের কর্মবিরতি যে দীর্ঘায়িত হবে বলেও জানিয়ে রেখেছেন তাঁরা।
আর, দিনভর এই কর্মবিরতির ফল— দূর দুরান্ত থেকে বিবিধ কাজে আদালতের ভরসায় আসা গ্রামীণ মানুষ জনের ভোগান্তি।
আইনজীবীদেরই একাংশ সে কথা মেনেও নিচ্ছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘কথায় কথায় আইনজীবীদের এই কর্মবিরতি রাজ্যের কর্মনাশা সংস্কৃতিকেই সামনে এনে ফেলছে।’’
প্রতিবাধের এই সহজ পন্থা (কর্মবিরতি) যে সাধারন মানুষের কাছে ঘোর বিড়ম্বনা এ দিন কান্দি আদালত ঘুরেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। দিনে অন্তত ৬০ টি মামলা ওঠে ওই আদালতে। এ দিন তার একটিও এজলাশে-মুখো না হওয়ায় ভুগতে হয়েছে সাধারণ মানুষ থেকে জেলা প্রশাসন, সকলকেই।
এ দিন যেমন প্রত্যন্ত গ্রাম তেকে এসেছিলেন বিনয় হালদার। তিনি বলেন, ‘‘আমার গাড়ির কাগজ পুলিশ পাঠিয়েছে এই আদালতে। তিন দিন ধরে নাগাড়ে ঘুরছি কোনও কাজ হচ্ছে না। আজ আবার আইনজীবীদের কর্মবিরতি। একটা সামান্য কাগজ পেতে হলে গ্রাম থেকে ঠেঙিয়ে দিনের পর দিন আসা সম্ভব!’’
স্ত্রী-নির্যাতনে অভিযুক্তের এক আত্মীয় জামির শেখ বলছেন, “ভাগ্নেটা জামিন হচ্ছে না প্রায় সাত দিন হয়ে গেল। কোনও না কোনও ছুতোয় আটকে যাচ্ছে। আজও হল না। এর পরে আইন-আদালতের উপরে ভরসা থাকে?’’
কান্দি জয়েন্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সত্যব্রত ঘোষ অবশ্য সে সব কথায় তেমন আমল দিতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দাবি জেলা আদালত এমনকী হাইকোর্টের কাছে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কোন পদক্ষপ নেওয়া হচ্ছে না। আদালতে আনজীবীরা যদি দিনের পর অপমানিত হন, সেটাও তো ভেবে দেখার বিষয়।’’ কিন্তু প্রধান বিচারপতি তো বার বার এই কর্মবিরতির সংস্কৃতি বন্ধ করার আবাদেন জানাচ্ছেন?
তার কোনও স্পষ্ট উত্তর অবশ্য মেলেনি বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির কাছে। এ দিন দফায় দফায় আইনজীবিরা আদালত চত্বরে মিছিল করে বিক্ষোভ দেখান। আদালত চত্বরে অবস্থান বিক্ষোভও করেন তাঁরা।
তবে আধিকারিকের কাছে ‘অপমানিত’ হওয়ার সঙ্গেই আইনজীবীরা জুড়ে দিয়েছেন, কান্দি আদালতেরই খোদ এক বিচারকের দুর্ব্যবহারের প্রসঙ্গও। তাঁদের দাবি, বিচার চাই তার-ও। কী সেই অভিযোগ? আইনজীবীদের অভিযোগ, মাস কয়েক আগে, কান্দির অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতের এক বিচারক, মামলা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এক আইনজীবীকে ‘অকথ্য ভাষায়’ গালিগালাজ করেন। কান্দি মহকুমা আদালতের ২২০ জন আইনজীবী একত্রিত হয়ে ওই বিচারককে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি তুলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy