প্রতীকী ছবি।
সেই ভোর থেকে অসুস্থ ছেলে কোলে হাসপাতালের আউটডোরের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন রামনগরের আমিনা বিবি।সকাল সকাল টিকিট করে ছেলেকে ডাক্তার দেকাবেন বলে। বেলা বাড়তে কাউন্টার খুলতেই জানিয়ে দেওয়া হয়, বৃহস্পতিবার কোনও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ থাকেন না রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে। অগত্যা অন্য চিকিৎসককে দেখিয়ে ফিরে যান তিনি।
শুধু তিনিই নন, শিশু বিশেষজ্ঞ নাথাকায় ফিপতে হয়েছে অনেককেই। কারণ, বুধবার এবং বৃহস্পতিবার এই হাসপাতালের আউটডোরে কোনও শিশু বিশেষজ্ঞ থাকেন না।
বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে গাংনাপুরের আঁইশমালির বাসিন্দা সাধনা হালদার বলেন, “আমার তিন বছরের ছেলের জ্বর হয়েছে। হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলাম। বহিঃবিভাগে কোন ডাক্তার না পেয়ে ফিরে এসেছি। বাধ্য হয়ে বাইরে ডাক্তার দেখাতে হয়েছে।”
সমস্যার কথা স্বীকার করে হাসপাতালের সুপার দেবদুলাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “এখানে মাত্র দু’জন শিশু চিকিৎসক রয়েছেন। চিকিৎসকের অভাবে বুধ ও বৃহস্পতিবার শিশু বিভাগের আউটডোর বন্ধ রাখতে হচ্ছে।” তিনি জানান, আরও একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চাওয়া হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত আড়াই বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালে মাত্র দু’জন শিশু বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। তাঁদের শিশু বিভাগ ছাড়াও আইসোলেশন এবং অন্যান্য ওয়ার্ড দেখভাল করতে হয়। ইনডোরে ৮০-১০০ জন শিশু ভর্তি থাকে। আউটডোরে কমবেশি ১০০ জন শিশু চিকিৎসা করাতে আসে।
ঋতু পরিবর্তনের সময় শিশু বিভাগে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়ে। আবার আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগীর বেশির ভাগই শিশু। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেখানকার এক চিকিৎসক বলেন, “এত বড় হাসপাতাল চালাতে অন্তত চার-পাঁচ জন শিশু চিকিৎসক হলে ভাল হয়। আরও এক জন শিশু বিশেষজ্ঞ এলে সপ্তাহে ছ’দিনই আউটডোর চালু রাখা যায়। ইনডোরের ক্ষেত্রেও সুবিধা হয়।’’
মাত্র দু’জন চিকিৎসককে দিয়ে ইনডোর-আউটডোর চালাতে সমস্যা হচ্ছে। হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, তাতে আউটডোর সপ্তাহে ছ’দিন খুলে রাখারই দরকার।’’ শিশু বিভাগ বন্ধ থাকলে জরুরী বিভাগে চাপ বেড়ে যায়। আবার অনেকে জানেন না, আউটডোর বন্ধ থাকলেও জরুরী বিভাগেও ডাক্তার দেখানো যায়। অনেকে বাড়ি ফিরে গিয়ে চিকিৎসা করাতে বাধ্য হন।”
সবথেকে মুশকিলে পড়েন রোগীর বাড়ির লোকেরা। কারণ বুধ এবং বৃহস্পতিবার যে আউটডোর বন্ধ থাকে তা অনেতেই জানেন না। জটির রোগীদের বাইরে কোনও চিকিৎসককে দেখাতে হয়। সেক্ষেত্রে হয়রানির সঙ্গে বেশি অর্থদণ্ড হয় তাঁদের।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, “রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy