নেই-ছাদ: গাছতলায় বসেই পড়াশোনা। লালগোলায়। নিজস্ব চিত্র
কালবৈশাখী ঝড়, বর্ষার মুষলধারে বৃষ্টি, শীতের হাড়হিম করা ঠান্ডা— কোনও কিছু থেকেই রেহাই নেই ওদের।
লেখাপড়ার নামে গবাদি পশুর সঙ্গে খোলা আকাশের নীচে বসে ঝড়-বৃষ্টি সবই সইতে হয় লালগোলার বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’টি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের খুদে পড়ুয়াদের। সইতে না পারলে ঈশান কোণে মেঘ দেখলেই মিড-ডে মিলের রান্না ছেড়ে চটের আসন আর বই-এর ব্যাগ নিয়ে বাড়ির দিকে দে ছুট।
ওই দুটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের একটি রয়েছে পাহাড়পুর গ্রামে। অন্যটি কৃষ্ণপুর-সারাপড়ায়। পাহাড়পুর শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের প্রধান সহায়িকা দিপালী চট্টোপাধ্যায়, কৃষ্ণপুর-সারাপাড়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের প্রধান সহায়িকা শুভ্রা মৈত্র এবং লালগোলা বিডিও অফিসের এক আধিকারিক জানান, নিজস্ব জমি না থাকায় ওই দু’টি শিক্ষাকেন্দ্রের ঘর নির্মাণের জন্য প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা এসে ফেরত গিয়েছে।
পাহাড়পুর শিশুশিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা হয় ২০০০ সালে। তখন পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ১১৩ জন। এখন সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ৫২-তে। কৃষ্ণপুর-সারাপাড়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্র শুরু হয় ২০০২ সালে। সেই সময় চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১২৫ জন। এখন সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে
শুধু ২৫-এ।
দিপালী চট্টোপাধ্যায় ও শুভ্রা মৈত্র দু’ জনেই বলছেন, ‘‘মাথার উপর ছাদ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কয়েক বছরের মধ্যে সেই প্রতিশ্রুতি ফাঁকা আওয়াজে পরিণতি হয়। ক্রমে শিশুরা চলে যেতে শুরু করে। মাথার উপরে দ্রুত ছাদ না জুটলে এই ক’জন শিশুও থাকবে না। ছাদ পেলে ফের শিশুতে ভরে যাবে শিক্ষাকেন্দ্র।’’
কৃষ্ণপুর-সারাপাড়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের দ্বিতীয় শ্রেণির মৌপিয়া সরকার, তৃতীয় শ্রেণির রাজকুমার দাস ও চতুর্থ শ্রেণির সুমন হালদার বলে, ‘‘খোলা মাঠে ক্লাস চলে। শীতে খুব কষ্ট হয়। হু হু করে হিমেল বাতাস বয়। মাথায় ছাদ না থাকায় মেঘ ডাকলেই আমরা বাড়ি চলে যাই। অনেক দিন দুপুরে খবার সময় ঝড়ের ধুলোয় নষ্ট হয়ে যায় মিড-ডে মিল।’’
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের শিশুশিক্ষা কেন্দ্র পরিচালনার জন্য একটি কমিটি রয়েছে। ওই কমিটির বিধায়কের প্রতিনিধি স্থানীয় উপপ্রধান কংগ্রেসের যদুরাম ঘোষ এবং বিডিও-র প্রতিনিধি স্থানীয় পঞ্চায়েতের সচিব অসিত দাস।
তাঁরা দু’জনেই বলেন, ‘‘পাহাড়পুর শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের জন্য পাশের শিকারপুর গ্রাম সংসদে ও কৃষ্ণপুর-সারাপাড়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের জন্য পাশের কালমেঘা গ্রাম সংসদে জায়গা মিলেছে। ওই দু’টি জায়গায় পৃথক গ্রাম সংসদ এলাকায়। সেই কারণে ওই দু’টি জায়গায় শিক্ষাকেন্দ্রের ঘর নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসনের বিশেষ অনুমতি প্রয়োজন। সেই অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অনুমতি মিললেই ঘর তৈরির কাজ শুরু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy