গোলমালে নিহত সঞ্জিত প্রামাণিকের মা। নিজস্ব চিত্র।
বাবা-মা দায়ী করছেন তৃণমূলের বিধায়ককে। বিধায়ক দায়ী করছেন বিরোধীদের। কিছু প্রশ্নের মীমাংসা কিন্তু বাকিই রয়ে গিয়েছে।
তার মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, কারা মারল সঞ্জিতকে? এর মধ্যে কি কারও অদৃশ্য হাত ছিল?
সোমবার সকালে শান্তিপুরের বাবলা সর্দারপাড়া হাইস্কুলের বুথে গিয়ে গণপিটুনিতে মারা যান সঞ্জিত প্রামাণিক। তাঁর শরীরে একাধিক গুলি, তির ও আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের বড় অংশের দাবি, তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী নিরঞ্জন দাস কিছু যুবককে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন বুথ দখল করাতে। তা জেনে তির-ধনুক নিয়ে হাজির হন বেশ কিছু স্থানীয় লোকজন। তাড়া খেয়ে পালানোর সময়ে সঙ্গীদের ছোড়া গুলি লাগে সঞ্জিতের গায়ে। মাসুদ মল্লিক, তাপস বিশ্বাস ও সৌমেন্দ্রনাথ বিশ্বাস নামে তিন জনকে কলকাতায় এনআরএস হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শান্তিপুরের তৃণমূল বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য অবশ্য বুথ দখলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেন, ‘‘নিরঞ্জন দাস ওই সময়ে ওখানে ছিলেনই না। সঞ্জিতরা গিয়েছিল বুথে এজেন্টদের কাগজপত্র দিতে। সুযোগ বুঝে বিরোধীরা চড়াও হয়।’’
বিরোধী বলতে কারা? সিপিএম, বিজেপি আর কংগ্রেস? নাকি দলেরও কারও মাথা ছিল পিছনে? সরাসরি কারও নাম না-করে অরিন্দম বলেন, ‘‘নানা চক্রান্ত তো কাজ করছেই।’’ শান্তিপুরের দীর্ঘদিনের নেতা অজয় দে-র সঙ্গে ‘বহিরাগত’ অরিন্দমের সম্পর্ক যে সুবিধের নয়, তা দলের সকলেই জানেন। প্রার্থী বাছাই নিয়েও দু’জনের টানাপড়েন চলেছে। অনেক জায়গায় অজয়-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ‘নির্দল’ হিসেবে লড়ছেন। ফলে, তাঁকেও সন্দেহের বাইরে রাখছেন না বিধায়ক-শিবিরের কেউ-কেউ। অজয় দে অবশ্য বলেন, “আমরা শান্তি চাই বলেই শান্তিপুরে এত কাল শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। কী কারণে এখন এমন হল তা স্থানীয়েরা বলতে পারবেন।”
স্থানীয় বাসিন্দারা যা বলছেন, তাতে কিন্তু তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ স্পষ্ট। অভিযোগ, তিন-চার দিন ধরে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল তৃণমূলের বাইক-বাহিনী। বিরোধীদের বাড়িতে ঢুকে হামলাও করা হচ্ছিল। দিন কয়েক আগে ঘোড়ালিয়ায় এক বিজেপির প্রার্থীর জা-কে ধর্ষণেরও অভিযোগ ওঠে বিধায়ক-ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে। পুলিশ কাউকে গ্রেফতার না করায় ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল। তা কাজে লাগাতে বিরোধীরা তলায়-তলায় এককাট্টা হয়। তার মধ্যে তৃণমূলের গোঁজ প্রার্থীরাও ছিল বলে খবর। সব পক্ষই অবশ্য ‘স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ’-এর কথা বলছে। রাতে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে। তবে রাত পর্যন্ত তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy