Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
ভোটের মুখে দলবদল

ছেড়ে যাওয়া, ফিরে আসার নেপথ্য কথা

দল বদলের এই ঘোর ঘনঘটায় জেলায় যা অহরহ ঘটে চলেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ১৩:১৫
Share: Save:

বাড়ি বদলে যায়। রাজনীতির ঠিকানাও। আবার পুরনো ঘরের কথা মনে পড়ায় অনুশোচনা-অনুতাপ নিয়ে পুরনো ঠিকানায় ফিরেও আসেন কেউ। নির্বাচনের মুখে রাজনীতির চেনা উঠোনেও যেমন ফেরত আসেন ওঁদের কেউ।

দল বদলের এই ঘোর ঘনঘটায় জেলায় যা অহরহ ঘটে চলেছে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতির উপস্থিতিতে ওঁরা সকলেই হাতে তুলে নিয়েছিলেন পদ্ম-পতাকা। কয়েক মাসের মধ্যেই ভোটের মুখে বিজেপিমুখী সেই শ’পাঁচেক তৃণমূল কর্মী ফিরে এলেন পুরনো উঠোনে, তৃণমূলের ঘাস ফুলের ছায়ায়। একই রীতি মেনে কোথাও বা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে কোথাও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার চলাচলে খামতি কিন্তু কমেনি।

ভোটের মুখে চাকদহের শিলিন্দায় তৃণমুলের হাত ধরেছিলেন শতাধিক সিপিএম কর্মী। তেহট্টের সেই বাস চালকদের মতোই ঘর বদলের ছবিটা ক্রমান্বয়ে ঘুরছে চাকদহ থেকে শান্তিপুর, ফরাক্কা থেকে সাগরদিঘি।

মাস দুয়েক আগে, তেহট্টে বাস দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন ন’জন। সেই ঘটনায় পুলিশ বাসের চালককে গ্রেফতার করতেই প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন তৃণমূলের ওই বাস সংগঠনের শ’পাঁচেক কর্মী। তার পর পাশে কাউকে না পেয়ে এক সময়ে ভিড়েছিলেন বিজেপিতে।

দু’মাসের ব্যবধানে তাঁরা সকলেই ‘পুরনো বাড়ি’ তৃণমূলে ফিরে এসে বলছেন, ‘ভুল হয়েছিল, ভুল আমাদের ভেঙে গিয়েছে!’’

কোথাও ‘ভুল’, কোথাও বা স্পষ্ট অনুশোচনা। সাগরদিঘির দুই প্রবীণ বাম নেতা তাঁদের চল্লিশ বছরের বাম-পন্থা ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েও সারা রাত অনুতাপে দগ্ধ হয়ে পরের দিনই ‘ভুল করেছি’ বলে দলকে দীর্ঘ চিঠি দিয়ে ফিরে এসেছেন দলে।

কিন্তু ভুলটা কেন?

তৃণমূলের এক প্রবীণ জেলা নেতা বলছেন, ‘‘আমাকে দেখুন না কংগ্রেস করতাম। দল ছেড়ে আজ তৃণমূলে। আমার কি অনুশোচনা নেই! কেউ পারে কেউ আর পারে না ফিরতে।’’ তবে সিপিএমের এক এক নেতা ধরিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘ও সব ছেঁদো কথা। আদর্শ এমন একটা শব্দ যাকে ছাড়া যায় না। স্বপ্নভঙ্গ হয়, হতেই পারে, তা বলে দল ছেড়ে অন্য দলের কাছে সুবিধা নেব!’’ কি সুবিধা?

তার একটা লম্বা ফিরিস্তি দিয়েছেন কংগ্রেস-তৃণমূল দু’দলের হরেক নেতা।

তাঁরা খোলামেলা জানাচ্ছেন, আদর্শ আঁকড়ে থাকার চেয়ে হালের রাজনীতিতে পানি পেতে গেলে শাসক দলের ছায়ায় থাকা ঢের ভাল, উপযোগী। সদ্য কংগ্রেস থেকে শাসক দলে নাম লেখানো কৃষ্ণনগরের এক তাবড় তৃণমূল নেতা বলছেন, ‘‘রাজনীতিই সম্বল ভাই, করেকম্মে খেতে গেলে, অক্ষত শরীরে বাঁচতে গেলে দলবদল ছাড়া গতি কি!’’

তবে, পুরনো দল আঁকড়ে পড়ে থাকা বহরমপুরের এক কংগ্রেস নেতা বলছেন, ‘‘করে-কম্মে খাওয়ার জন্য তো রাজনীতিতে আসিনি, ‘মানুষের জন্য কাজ করা’ বললে যদি বড় কথা শোনায়, তা হলে এলাকার জন্য কাজ করতেই রাজনীতিতে আসা। আর সেটা করতে গেলে তো কখনওই দল বদল করতে হয় না।

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Elections 2018 Panchayat Poll
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy