Advertisement
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিরাপত্তা বিধি শিকেয়

রাতের অন্ধকারে অথবা ভোরের আবছা আলোয় উপ-সংশোধনাগারের জানলার লোহার রড কেটে পালিয়ে গেল দুই কুখ্যাত দুষ্কতী। গুনতির সময় দেখা গেল তারা নেই। অথচ, কেউ টিকিটিও পেল না তাদের।

শান্তনু বেরা
কাঁথি শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৭ ০১:০০
Share: Save:

রাতের অন্ধকারে অথবা ভোরের আবছা আলোয় উপ-সংশোধনাগারের জানলার লোহার রড কেটে পালিয়ে গেল দুই কুখ্যাত দুষ্কতী। গুনতির সময় দেখা গেল তারা নেই। অথচ, কেউ টিকিটিও পেল না তাদের।

কী ভাবে জানলার রড কাটল দুষ্কৃতীরা, সেই ধারাল অস্ত্র তারা পেলই বা কোথা থেকে, সকলের নজর এ়ড়িয়ে এমন একটা ঘটনা ঘটিয়েই বা ফেলল কী করে, বন্দি পালালেও কেন বেজে উঠল না পাগলা ঘণ্টি— সে সব প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন উপ-সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। আর তা নিয়েই বেশ কিছু প্রশ্ন উঠছে কাঁথি উপ-সংশোধনাগারের নিরাপত্তা নিয়ে।

সংশোধনাগারের আশপাশের দোকানদারেরা জানিয়েছেন, পাগলাঘণ্টি শোনেনি তাঁরা। উপ সংশোধনাগারের জেলার ও কাঁথি উপ-মহকুমাশাসক কৌশিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সংশোধনাগারের সাইরেন দীর্ঘদিন খারাপ। তাই বাজেনি।’’ শুধু তাই নয়, কৌশিকবাবু জানিয়েছেন কাঁথি উপ-সংশোধনাগারে কোথাও কোনও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা নেই। ফলে এই দুই বন্দি পালানোর কোনও ছবিও কোথাও ধরা পড়েনি।

ফলে প্রশ্ন উঠছে সব কিছু জেনে কি আগে থেকেই ছক কষে রেখেছিল দাগি কর্ণ। কিন্তু বন্দি পালিয়েছে বোঝার পরেও কি সঠিক পদক্ষেপ করেছিলেন কর্তৃপক্ষ? প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।

মঙ্গলবারের ঘটনা জানতে পেরেই পলাতক কর্ণের সাম্প্রতিক একটি ছবি চেয়েছিল কাঁথি থানা। উপ-সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ তা দিতে পারেননি। নিয়ম মতো যে কোনও সংশোধনাগারে বন্দিরা ঢোকা ও বেরনোর সময় তার ছবি তুলে রাখতে হয়। কিন্তু কাঁথি উপ-সংশোধনাগারে তেমনটা হয়নি। এমনকী রাজ্য কারা দফতরের নির্দেশ মেনে বন্দির বুড়ো আঙুলের ছাপও নেওয়া হয় না। কেন হয় না? সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান না কর্তৃপক্ষ। উপ-মহকুমাশাসক কৌশিক চট্টোপাধ্যায়ের যুক্তি, ‘‘আমি কয়েক দিন হল এই দায়িত্বে এসেছি। এ সব বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারব না।’’ শুধু তাই নয়, সংশোধনাগার চত্বরে বেশ কয়েকটি গাছ রয়েছে। সে সব গাছ বেয়ে অনায়াসেই পালাতে পারে বন্দিরা। সে নিয়েও কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই। গোটা চত্বরটি আবর্জনায় ভর্তি। বছর কয়েক আগে এই আবর্জনার স্তূপেই মিলেছিল তাজা বোমা। তবুও হুঁশ ফেরেনি কারা দফতরের।

দফতরের অতিরিক্ত ইন্সপেক্টর জেনারেল (পশ্চিমাঞ্চল) বিপ্লব দাশগুপ্ত মঙ্গলবার জেল পরিদর্শন করেন। কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে এ সব প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sub-correctional home Miscreants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE