প্রতীকী ছবি।
বছর ঘুরলেই পুরসভা নির্বাচন। খড়্গপুরে উপ-নির্বাচনে জয় দিয়ে সেই পুরভোটের জমি তৈরির কাজে কয়েক কদম এগিয়েই গেল তৃণমূল।
‘ভোট ফর ডেভেলপমেন্ট’— উপ-নির্বাচনে এই স্লোগান সামনে রেখেই লড়েছিল রাজ্যের শাসকদল। তুলে ধরা হয়েছিল পুরপ্রধান হিসাবে তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকারের সাফল্য। বিরোধীরা পাল্টা অনুন্নয়নের অভিযোগ তুলেছিল। ভোটের ফল বলছে, তা দাগ কাটেনি। বরং উন্নয়নের অস্ত্রেই বিধানসভায় যাওয়া পাকা করে ফেলেছেন রেলশহরের পুরপ্রধান। শহরের ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৪টিতেই ফুটেছে ঘাসফুল।
২০১৫ সালে ১১টি আসন পাওয়া তৃণমূল বিরোধী কাউন্সিলর ভাঙিয়ে ম্যাজিক ফিগার ১৮তে পৌঁছেছিল। পুলিশ-মাফিয়া যোগের অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। সে বারও পুরপ্রধান হয়ে শেষ হাসি হেসেছিলেন প্রদীপ। তবে দলে বিরোধের মুখে পড়তে হয়েছিল। ক্রমে বাড়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। সে সবের মধ্যেই পথবাতি, ফুটপাত, শ্মশানঘাটের উন্নয়ন, রেল এলাকায় পার্ক, অসমাপ্ত জল প্রকল্পের উদ্বোধন, ওয়াটার এটিএম, স্টেডিয়াম-সহ নানা উন্নয়নে জোর দিয়েছিল পুরসভা। সেই উন্নয়নের ‘কারিগর’ প্রদীপকে প্রার্থী করেই বাজিমাত করেছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, “মানুষ যে বিজেপির কুৎসাকে ভাল চোখে নেননি তা এই জয়ে বোঝা গেল। তৃণমূলের আরেক নাম উন্নয়ন। তা থেকে বিচ্যুত না হয়ে আমরা নতুন পরিকল্পনা সাজাব।” প্রদীপ নিজেও বলছেন, “খড়্গপুরের মানুষ প্রদীপ সরকারকে ভোট দিয়েছেন উন্নয়ন ও সবসময়ে আমারে কাছে পাওয়ার জন্য। আমি না জিতলে পুরবোর্ড ধরে রাখা যাবে না এটা সবাই বুঝেছে। এ বার আমি পুরপ্রধান ও বিধায়ক হিসাবে আরও বেশি উন্নয়ন করে এই জয়ের মাটি আরও শক্ত করব।”
তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, বিধানসভা উপ-নির্বাচনের প্রচারের ফাঁকে পুরভোটের জমি মেপে নিয়েছে টিম পিকে-ও। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার এক কর্মী মানছেন, ‘‘খড়্গপুরে পুর- নির্বাচনে আমাদের কাজ করাটা অনেক সহজ হবে।’’ খড়্গপুরে তৃণমূলের কোন্দল অজানা নয়। একদিকে প্রদীপ সরকার, জওহরলাল পাল, শেখ হানিফরা। অন্যদিকে রবিশঙ্কর পান্ডে, দেবাশিস চৌধুরীরা। তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, শহরে এসে এই পাঁচ নেতার সঙ্গেই আলাদা আলাদা ভাবে দেখা করেন পিকে’র টিমের কর্মীরা। শুরুতে ঠিক ছিল, এই পাঁচ নেতার ওয়ার্ডে টিম-পিকে’র তরফে প্রচার সারা হবে না। প্রচারের কাজ ওই নেতারা নিজেরাই করবেন। পরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে খড়্গপুরে সবক'টি ওয়ার্ডেই তৃণমূলের প্রচারে ছিলেন টিম- পিকে'র কর্মীরা। প্রচারের ফাঁকে ওয়ার্ডস্তরে তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তিও যাচাই করে নেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডেও মানছেন, ‘‘ওই টিমের লোকজন ওঁদের কাজ করেছেন। আমরা আমাদের কাজ করেছি।"
জানা যাচ্ছে, ভোটের ফল বেরোনোর পরে তৃণমূলের অনেক কাউন্সিলর যোগাযোগ করেছেন ওই টিমের কর্মীদের সঙ্গে। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনুমান, শুভেচ্ছা জানানোর মোড়কে আসলে পুরভোটের টিকিট নিশ্চিত করে নিতে চাইছেন ওই কাউন্সিলরেরা।
সব মিলিয়ে রেলশহরের জয় তৃণমূলের পুর-ভোটের মাটি শক্ত করেছে। দলের জেলা সভাপতি অজিতের কথায়, “এই জয়ে আমাদের পুরসভা জয়ের মাটি পক্ত হল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy