মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে ময়না পৌঁছেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র ।
বিজেপি কর্মী বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়াকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগের ঘটনায় আরও উত্তপ্ত পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না। প্রতিবাদ জানাতে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে শামিল বিজেপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে ময়না পৌঁছেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ময়নায় ১২ ঘণ্টায় বন্ধের ডাকও দেন তিনি। বিক্ষোভস্থলে পৌঁছে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি কর্মীদের অপরাধ যে পদ্ম পতাকা হাতে তাঁরা রাস্তায় নামেন। এ জন্যই তাঁদের মরতে হয়। বাকচা এলাকার ১০০০-এর বেশি বিজেপি কর্মী তৃণমূলের মিথ্যা মামলার কারণে জেল খেটেছে। তৃণমূলের দুর্বৃত্তরা জঙ্গলের রাজত্বে পরিণত করেছে ময়নাকে। পুলিশকে দলদাসে পরিণত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের উপর ভরসা রাখুন। সমাধান হবে। পূর্ব মেদিনীপুরের বহু জায়গায় স্থায়ী শান্তি ফিরেছে। ময়নাতেও ফিরবে। বিজয়কৃষ্ণের হত্যাকে সাক্ষী রেখে বলে গেলাম আপনারাও স্থায়ী শান্তি পাবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা এবং তাঁর পুলিশকে কী ভাবে সাঁড়াশিতে আটকাতে হয়, সে বুদ্ধি শুভেন্দু অধিকারীর আছে। আমি তা করে দেখাব।’’
যদিও শাসকদলের তরফে বিজেপি কর্মীকে খুনের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। ময়নার ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা মনোরঞ্জন হাজরা বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে গোরামহল গ্রামের বাসিন্দা সরস্বতী মণ্ডলের বাড়িতে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় ময়না থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। সেই ঘটনার জেরেই সোমবার বিকেল নাগাদ বিজয়কৃষ্ণের সঙ্গে কয়েক জনের ঝামেলা বাধে। নিজেদের মধ্যে মারামারির ঘটনাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে এর পিছনে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’
মনোরঞ্জনের দাবি, ‘‘ঘটনাটিতে রাজনৈতিক রং লাগিয়ে বিজেপির লোকেরা রাতভর তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। তবে যে বা যাঁরা দোষী, তাঁদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’
প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে বিজেপি বুথ কমিটির সভাপতি বিজয়কৃষ্ণ (৬০)-কে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ময়নার বাকচা পঞ্চায়েতের গোরামহল এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। যার জেরে এলাকা জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, সোমবার বিজয়কৃষ্ণকে অপহরণ করা হয় এবং পরে তাঁকে খুন করা হয়। এ ছাড়াও সঞ্জয় তাঁতি নামে আরও এক বিজেপি কর্মীকে অপহরণ করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শাসক দল যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। গোটা ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার রাতভর বিজেপির নেতাকর্মীরা ময়না থানা ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। মঙ্গলবার সকাল থেকে ময়না বাইপাসের ধারে তিন রাস্তার মোড়ে দলীয় পতাকা হাতে গেরুয়া শিবিরের স্থানীয় নেতারা লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বেলা বাড়তেই সেখানে ভিড় জমতে শুরু করে। তৃণমূল এবং পুলিশের বিরুদ্ধে মাইকিং করতেও দেখা যায় বিক্ষুব্ধদের। অবস্থান বিক্ষোভে বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বচসাতেও জড়িয়ে পড়েন ময়নার বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্দা।
অশোক বলেন, ‘‘আমরা সাড়ে ৮টা থেকে অবরোধ শুরু করেছি। আস্তে আস্তে আমাদের কর্মীরা জমায়েত শুরু করেছে। বিরোধী দলনেতাও ঘটনাস্থলে এসেছেন। যত ক্ষণ না দোষীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, তত ক্ষণ আমাদের বিক্ষোভ চলবে। কলকাতার ভুয়ো চিকিৎসকদের দিয়ে ময়নাতদন্ত চাই না। যা হবে কেন্দ্রীয় ভাবে হবে। হাই কোর্টের দ্বারস্থ হব। এখনও মৃতদেহ পরিবারের সদস্যদের তুলে দেওয়া হয়নি। প্রথমে বিজয়কৃষ্ণ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের মারধর করা হয়। মারধরের পর তাঁকে বাইকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পুরোটাই হয়েছে প্রাক্তন বিধায়কের চক্রান্তে। আমাদের জানানো হয়নি যে বিজয়কৃষ্ণের দেহ কোথা থেকে উদ্ধার করা হল। দেহ তমলুকে লুকিয়ে নিয়ে চলে গিয়েছিল পুলিশ। আমাদের আরও এক কর্মীকেও অপহরণ করা হয়। বিজেপি কর্মীদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজিও চালানো হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy