বন্ধ: তালা ঝুলছে জীবিকা কেন্দ্রের কার্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র
বাড়ি সারানো হোক বা জলের কল মেরামতির মিস্ত্রি— যে কোনও কাজে শহরের বাসিন্দাদের প্রয়োজন মেটাতে খড়্গপুরে গড়ে তোলা হয়েছিল পুর জীবিকা কেন্দ্র। কথা ছিল, বিভিন্ন বিষয়ের মিস্ত্রিরা ওই কেন্দ্রে এসে তাঁদের নাম নথিভুক্ত করবেন। শহরের বাসিন্দারা পুরসভার কেন্দ্রে যোগাযোগ করলে তাঁর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে প্রয়োজন মতো মিস্ত্রি। যদিও সবই কথার কথা। আদতে প্রচারের অভাবে ধুঁকছে এই জীবিকা কেন্দ্র।
গত বছর রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী খড়্গপুরের মালঞ্চর সেনচকের কাছে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে গড়ে তোলা হয় জীবিকা কেন্দ্র।
সেনচকে একসময়ে স্বর্ণ রোজগার যোজনা প্রকল্পের অধীনে চলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিত্যক্ত ভবন মেরামতি করে তৈরি হয় এই কেন্দ্র। গত বছর ১৫ অগস্ট ঘটা করে কেন্দ্রের উদ্বোধনও হয়। তারপরে বেশ কয়েকদিন কেন্দ্রে মিস্ত্রিদের নাম নথিভুক্তকরণের কাজ হয়েছিল। ব্যস ওইটুকুই।
নিয়ম অনুযায়ী, রবিবার বাদে সপ্তাহের বাকি দিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্র খোলা রাখার কথা। যদিও সপ্তাহের অধিকাংশ দিনই ওই কেন্দ্র বন্ধ থাকে বলে অভিযোগ। ফলে নানা প্রয়োজনে এই কেন্দ্রে গিয়েও ফিরতে হচ্ছে শহরের বাসিন্দাদের।
শুধু কেন্দ্রই বন্ধ থাকে না, এই কেন্দ্রের ফোন নম্বরও অকেজো বলে অভিযোগ। সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিতে পুর জীবিকা কেন্দ্রের একটি টোল-ফ্রি নম্বর চালু হয়। এ ছাড়াও ওই কেন্দ্রের এক কর্মীর মোবাইল নম্বরও পুর জীবিকা কেন্দ্রের ভবনের গায়ে লেখা রয়েছে। যদিও শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, টোল ফ্রি নম্বর ও মোবাইল নম্বরে কোনওদিনই যোগাযোগ করা যায় না।
শহরের মালঞ্চর বাসিন্দা ননী চক্রবর্তী বলেন, “গত জানুয়ারি মাসে বাড়ি রং করব বলে মিস্ত্রির খোঁজে ওই কেন্দ্রে তিন দিন গিয়ে ফিরে এসেছি। তারপরে রঙের দোকানে যোগাযোগ করে মিস্ত্রি পেয়েছি। কোনও কাজেই না এলে এই কেন্দ্র খুলে লাভ কী?’’
শহরের এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘শুধু কেন্দ্র গড়েই দায় সেরেছে পুরসভা। প্রচার করার বালাই নেই। ফলে অনেক মিস্ত্রি এই কেন্দ্রের কথা জানতেই পারেননি।’’
বাস্তবে যে ছবিটা এ রকমই, তার উদাহরণ মিলল শহরের চার নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রং মিস্ত্রি শেখ মইদুলের বক্তব্যে। তিনি বলেন, “এমন কোনও কেন্দ্র শহরে খোলা হয়েছে বলে তো শুনিনি। আমাদের কাউন্সিলরও কিছু জানাননি। সঠিকভাবে এই কেন্দ্র চালানো হলে আমাদের কাজের সুযোগ বাড়বে।”
পুর উদাসীনতা নিয়ে শাসকদলকে বিঁধছে বিরোধীরাও। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা কংগ্রেস নেতা দেবাশিস ঘোষ বলেন, “আমাদের ওয়ার্ডে এই কেন্দ্র তৈরি হওয়ায় খুশি হয়েছিলাম। পরে ওই কেন্দ্রে অন্য ওয়ার্ডের একজনকে কর্মী হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হল। এখন অধিকাংশ দিনই এই কেন্দ্র বন্ধ থাকে। প্রচারও নেই। পুরসভা উদাসীন।”
যদিও এই গাফিলতির বিষয় অজানা বলে দাবি করছেন খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার। তিনি বলছেন, ‘‘সপ্তাহের ছ’দিন কাজের সময়ে ওই কেন্দ্র খোলা থাকার কথা। কেন্দ্রটি বন্ধ থাকে বলে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy