Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

সঙ্কল্পপত্র নিয়ে বিভ্রান্তি, কোলাঘাটে বিক্ষোভ

ভোটদানে উৎসাহ বাড়াতে স্কুল পড়ুয়াদের মাধ্যমে অভিভাবকদের কাছে ‘সঙ্কল্পপত্র’ পাঠানো শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্কল্পপত্র জমা নেওয়া ঘিরেই বৃহস্পতিবার সকালে অশান্তি বাধল কোলাঘাটের বৃন্দাবনচক কালাচাঁদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ক্ষুদ্ধ অভিভাবকেরা শিক্ষকদের দীর্ঘক্ষণ স্কুলের মধ্যে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন। শেষমেশ পাঁশকুড়া থানার পুলিশ গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক ও এগরা শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৪ ০২:০৯
Share: Save:

ভোটদানে উৎসাহ দিতে সঙ্কল্পপত্র। —নিজস্ব চিত্র। সবিস্তার...

ভোটদানে উৎসাহ বাড়াতে স্কুল পড়ুয়াদের মাধ্যমে অভিভাবকদের কাছে ‘সঙ্কল্পপত্র’ পাঠানো শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্কল্পপত্র জমা নেওয়া ঘিরেই বৃহস্পতিবার সকালে অশান্তি বাধল কোলাঘাটের বৃন্দাবনচক কালাচাঁদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ক্ষুদ্ধ অভিভাবকেরা শিক্ষকদের দীর্ঘক্ষণ স্কুলের মধ্যে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন। শেষমেশ পাঁশকুড়া থানার পুলিশ গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভোটদানের হার বাড়াতে নির্বাচন কমিশনের তরফে প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের মাধ্যমে বাবা-মায়ের কাছে ‘সঙ্কল্পপত্র’ নামে ছাপানো আবেদনপত্র পাঠানো হচ্ছে। সেখানে ভোট দেওয়ার অঙ্গীকার করে সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রের নম্বর ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করার কথা অভিভাবকদের। ওই সঙ্কল্পপত্র নিয়েই এ দিন কোলাঘাটের ওই প্রাথমিক স্কুলে গোলমাল বাধে। স্কুল সূত্রের খবর, এ দিন সকালে টিফিনের সময় স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কৌশিক দাস জনা তিরিশেক ছাত্র-ছাত্রীকে ‘সঙ্কল্পপত্র’ দেন। ওই পড়ুয়ারা টিফিনে বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের তা দেন। সঙ্কল্পপত্র হাতে পেয়েই বেশ কিছু অভিভাবক স্কুলে এসে জানতে চান, আবেদনপত্রে কেন নির্বাচন কমিশনের নাম বা লোগো নেই। অভিভাবকদের সচেতন করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেই বা কেন ব্যবহার করা হবে, সেই প্রশ্নও তোলা হয়। এই নিয়ে বিবাদের জেরে অভিভাবক ও গ্রামবাসীরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কৌশিকবাবু ও সহ-শিক্ষক জয়দেব মল্লিককে একটি ঘরে ঢুকিয়ে তালা মেরে দেন বলে অভিযোগ। সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাঁদের আটকে রাখা হয়। পরে বিডিওর হস্তক্ষেপে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ এসে তালা খুলে শিক্ষকদের বের করে।

কৌশিকবাবুর কথায়, “সঙ্কল্পপত্রে নির্বাচন কমিশনের নাম বা চিহ্ন না থাকার ক্ষেত্রে যে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই, তা অভিভাবকদের বোঝাতে পারিনি। তার উপর সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রের নম্বর ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করতে বলায় অভিভাবকরা পরিচয় গোপন রাখতে পারবেন না, এই আশঙ্কায় ভুগছেন। এ নিয়ে আগাম প্রচার না করায় অভিভাবকদের হাতে আমাদের হেনস্থা হতে হয়েছে।” কোলাঘাটের বিডিও জ্যোতিপ্রকাশ হালদার ঘটনার কথা মেনে নিয়ে বলেন, “সঙ্কল্পপত্র নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।”

জেলার এগরা মহকুমাতেও সঙ্কল্পপত্র ঘিরে অভিভাবকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। বীরকুমার মাইতি, কালিপদ শীট, রমণী দাসরা বলেন, “ওই ফর্ম কে দিয়েছে, তা লেখা নেই। অথচ নাম, ফোন নম্বর ও এপিক নম্বর দিতে বলা হয়েছে। আমরা ভয় পাচ্ছি এই ফোন নম্বর নিয়ে যদি অন্য কেউ ভয় দেখায়!”

সমস্যার কথা মানছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি গোপাল সাহুও। তিনি বলেন, “ওই সঙ্কল্পপত্রে নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত কোনও কিছুর উল্লেখ না থাকায় প্রধান শিক্ষকদের এমন সমস্যায় পড়তে হবে আশঙ্কা

করে আমি আগেই জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছিলাম।” জেলাশাসক অন্তরা আচার্য জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনেই সঙ্কল্পপত্র অভিভাবকের দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে তা পূরণ করে জমা দেওয়ার বিষয়টি অভিভাবকদের কাছে বাধ্যতামূলক নয়, স্বেচ্ছাধীন। তবে এ নিয়ে ভবিষ্যতে যাতে কোনও বিভ্রান্তি না হয়, সে দিকে নজর রাখা হবে বলে জেলাশাসক জানিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

kolaghat agitation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy