আইএনটিটিইউসির পতাকা হাতে চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয় সংস্থাকে তেল পরিবহণের বরাত না দিয়ে হলদিয়ায় ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড (বিপিসিএল) তা দিয়েছে মুম্বইয়ের ছ’টি পরিবহণ সংস্থাকে। এর প্রতিবাদে সোমবার দিনভর অবস্থান-বিক্ষোভ করলেন আইএনটিটিইউসির সমর্থক ট্যাঙ্কার চালক ও খালাসিরা। দেশের নানা প্রান্তে তেল পৌঁছে দেওয়া জন্য কয়েক মাস আগে ওই বরাত পেয়েছিল সংস্থাগুলি। কিন্তু, শ্রমিক সংগঠনের বিক্ষোভে সেই কাজ শুরুই হল না এ দিন। বিক্ষোভকে স্বতঃস্ফূর্ত দাবি করে আইএনটিটিইউসি নেতা মলয় করণ বলেন, “সংগঠন এর সঙ্গে যুক্ত নয়। নিজেদের দাবি দাওয়া জানিয়েছেন ট্যাঙ্কার চালক ও খালাসিরা।” যদিও এ দিন সংগঠনেরই পতাকা নিয়ে আন্দোলন করেন চালক-খালাসিরা।
পরিবহণের বরাতপ্রাপ্ত সংস্থাগুলির তরফে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানানো হয়, স্থানীয় ভাবে তাদের পরিবহণ শুরু করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ওই অভিযোগে নির্দিষ্ট কারোর নাম না থাকায় পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারেনি। বিপিসিএল কর্তৃপক্ষ ও ক্ষমতাসীন শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনাতেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় পরিবহণ সংস্থাগুলি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তখন সংস্থাগুলির কাজে প্রয়োজনীয় পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে আদালতের তরফে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মতো সোমবার বিপিসিএলের গেটে যায় পুলিশ। আগাম এই খবর পেয়ে চালক ও খালাসিরা গেটের সামনে মিছিলের পাশাপাশি অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। সার দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় ট্যাঙ্কারগুলিকে।
অভিযোগকারী একটি সংস্থার তরফে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তা বলেন, “আমাদের প্রস্তুতি থাকলেও পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা এ দিন পরিবহণের কাজে যেতে পারিনি। পরের কোনও দিন স্থির করে পুলিশকে জানানো হবে।” জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হলদিয়া) অমিতাভ মাইতি সংস্থাগুলির তরফে এ দিন কেউ আসেননি বলে জানিয়েছেন। বারবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি বিপিসিএলের হলদিয়া শাখার জেনারেল ম্যানেজার কমলেশ চৌধুরি।
বিপিসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ের সংস্থাগুলি বরাত পাওয়ার আগে এখানে তেল পরিবহণের কাজ করত স্থানীয় প্রায় পনেরোটি সংস্থা। তারা এই কাজ করছে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। এমনই একটি সংস্থার মালিক গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “২০১৩ সালে বিপিসিএল কর্তৃপক্ষ বরাতের জন্য যে দর দেন, তা হলদিয়ার অন্য তেল সংস্থাগুলির থেকেও অনেক কম ছিল। তা ছাড়া দেড়শো জন ট্যাঙ্কার মালিক ও তিনশো শ্রমিক পরিবার এর উপর নির্ভরশীল। দর নিয়ে আমাদের আপত্তি থাকা সত্বেও কর্তৃপক্ষ ঘুরপথে মুম্বইয়ের সংস্থাগুলিকে দরপত্র দেন। কিন্তু তাঁরা কাজ না করায় আমাদের কাজের মেয়াদ দফায় দফায় বাড়ানো হয়। বারবার আশ্বাস দিলেও আমাদের নতুন করে দরপত্র দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।”
তাঁদের দাবি, মুম্বইয়ের সংস্থাগুলি কাজ শুরু না করলেও নিয়ম অনুযায়ী বরাত বাতিল করা হয়নি। এ দিকে স্থানীয় সংস্থাগুলির বর্ধিত মেয়াদ শেষ হয়েছে রবিবার। তাই তারা এদিন কাজ করেননি। এক লরি চালক শেখ জাহির বলেন, “আমরা বরাবর এখানে কাজ করছি। কাজ গেলে খাব কী?” বিপিসিএল কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির জন্য এই অবস্থা বলে জাহিরের অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy