আদালত চত্বরে মদন মিত্র। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
স্ট্রাইকার হওয়ার ইচ্ছে আর নেই। জামিনে ছাড়া পেলে মদন মিত্র এ বার পিছন দিক থেকে খেলতে চান! সতীর্থদের কাছ থেকে ছুরি খাওয়ার আতঙ্ক তাঁকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে যে!
ইদানীং প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন। শরীরে আগের মতো বল নেই। তবু মেসির মতো ‘খেলা’ ছাড়তে নারাজ মদন! শুধু পজিশনটা বদলে নিতে চান! সোমবার খোলাখুলিই বললেন, ‘‘আগে প্রথম সারিতে থাকার প্রবল ইচ্ছা ছিল। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলের পর আমার মনে হচ্ছে এক্কেবারে পিছনের সারিতে এক কোণায় গিয়ে বসা উচিত।’’
কেন? ব্যাখ্যা দিয়ে নিজেই বললেন, ‘‘আসলে সামনের দিকে বসলে পিছনের লোকজনদের দেখা যায় না তো! কখন ছুরি মারে বোঝাও যায় না!’’ এ বার বিধানসভা নির্বাচনে কামারহাটি থেকে হেরে গিয়েছেন মদন। ক’দিন আগেই দুঃখ করে কামারহাটির পুরপিতা গোপাল সাহাকে চিঠি লিখেছেন, ওয়ার্ড প্রতি ২০-২৫টা ভোট বেশি পেলেই জিতে যেতেন! দলের একাংশের অসহযোগিতাই যে তাঁকে জিততে দেয়নি, এই অভিমান মদনের মনে গেড়ে বসেছে। সে জন্যই এ দিন সতীর্থদের ভয় পাওয়ার কথা আর লুকোলেন না তিনি।
সারদা মামলায় গ্রেফতার হয়ে অনেক দিন ধরে জেলে রয়েছেন মদন। নয় নয় করে প্রায় আঠেরো মাস হয়ে গেল! সেই মামলাতেই সোমবার আলিপুর আদালতে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারকের এজলাসে হাজিরা ছিল তাঁর। সাংবাদিকদের কাছে সেখানেই মনের কথা পাড়েন মদন। এ দিন নিম্ন আদালত তাঁকে ফের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিলেও মদন এ বার উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টেও যেতে পারেন বলে জানালেন। অর্থাৎ খেলা ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নই নেই।
পরিবহণের সঙ্গে ক্রীড়া দফতরের দায়িত্বও এক কালে সামলেছেন মদন। খেলাধুলোর প্রতি তাঁর আগ্রহ অসীম। জেলে থাকলেও আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে মেসির অবসরের ঘোষণা কান এড়ায়নি তাঁর। আদালত চত্বরে বসে সেই প্রসঙ্গ টেনেই মদন বলেন, ‘‘উনি জীবনের সেরা ম্যাচ খেলে নিয়েছেন। তার পর অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু আমার এখনও অনেক খেলা রয়েছে। সেটা খেলতে হবে।’’
রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের মতে, এগুলো আসলে মদনের গভীর আফশোসের কথা! সারদা মামলায় এখনও কোনও আলো দেখা যাচ্ছে না। আবার ভোটে ‘পিছন থেকে ছুরি’ খাওয়ার যন্ত্রণাও ভুলতে পারছেন না। তার মধ্যেও মদন নিজস্ব বাকপটুতা হারাননি কিন্তু। বললেন, ‘‘১৮ মাস জেলে রয়েছি। বনবাস থেকে ফিরে ৪০ দিনে সীতার অগ্নিপরীক্ষা হয়েছিল। আমার অগ্নিপরীক্ষা নিক সিবিআই। আমি কেওড়াতলা শ্মশানে গিয়ে অগ্নিপরীক্ষা দিতে রাজি। দোষী প্রমাণিত হলে মেয়রকে বলব, ম্যানহোল খুলে দিন মাটির তলায় চলে যাই।’’
রোজভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডুর সঙ্গে তাঁর মোলাকাতের বিষয়টি নিয়েও কথা বললেন খোলাখুলি। জানালেন, ইএম বাইপাস সংলগ্ন একটি পাঁচতারা হোটেলে গৌতমের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সম্প্রচারকক্ষটি গৌতমবাবুর সংবাদ চ্যানেল দখল করে রেখেছিল। তা দখলমুক্ত করতেই গৌতমের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন বলে মদনের দাবি। তা-ও দশ মিনিটের জন্য। তাঁর কথায়, ‘‘আমি হোটেল ছাড়ার পর অনেকে খাওয়া-দাওয়া করেছিল। তার পর সব বিল করেছিল আমার নামে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy