বিপত্তি: জলে ভরে গিয়েছে কারখানা চত্বর। বুধবার, পানিহাটিতে। নিজস্ব চিত্র
বর্ষা এখনও আসেনি। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে অকাল বর্ষণ হয়েছে মঙ্গলবার। তার জেরেই পানিহাটি এলাকায় ফিরল জল জমার চেনা ছবি। পরিস্থিতি এমন দাঁড়াল যে, বুধবার দিনভর কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হল আগরপাড়ায় রেলের ইঞ্জিন এবং কামরা তৈরির সংস্থা টেক্সম্যাকো। জলমগ্ন হয়ে রইল পানিহাটির বিভিন্ন আবাসিক এলাকাও।
আগরপাড়ার কারখানায় জমে থাকা জলের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি টেক্সম্যাকো কর্তৃপক্ষ। তবে সংস্থার কর্মীদের একাংশ জানান, সকালে কিছু ক্ষণের জন্য কাজ শুরু করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু কারখানার ভিতরে জল জমে থাকায় বহু যন্ত্রাংশ জলে ডুবে যায়। ভিতরে ঢুকে কাজ করার মতো পরিস্থিতি ছিল না। শেষে কর্মী-সংগঠনের তরফে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়, এ দিন ছুটি দিয়ে দিতে। তার বদলে কর্মীরা আগামী রবিবার কাজ করার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব দেন।
সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রতি বছরই এই ভোগান্তি হয়। কারখানার ভিতরে বৃষ্টির জল জমে থাকার কারণে গত বছর সাত দিন কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও এই সমস্যার কথা জানিয়েছিলাম। স্থানীয় এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ভীষণ খারাপ। যে নিকাশি নালাগুলি রয়েছে, সেগুলির গভীরতা কম। ভারী বৃষ্টি হলেই জল উপচে যায়। তা নামতেও অনেক সময় লাগে।’’
যদিও টেক্সম্যাকো কর্তৃপক্ষ জানান, বুধবার রাতে আর বৃষ্টি না হলে আজ, বৃহস্পতিবার কাজ চালু হতে পারে। সংস্থার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এই রাজ্যে এখনও যে কয়েকটি বড় কারখানা চালু রয়েছে, টেক্সম্যাকো তাদের মধ্যে একটি। এক দিন কাজ বন্ধ থাকা মানে প্রচুর ক্ষতি। সরকারের উচিত, সামগ্রিক সমস্যা খতিয়ে দেখে পরিকল্পনামাফিক নিকাশির প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করা।’’
টেক্সম্যাকোর ওই কারখানাটি পানিহাটি ও কামারহাটি পুরসভার সংযোগস্থলে। সংস্থার দাবি, স্থানীয় শালপাতা বাগান এলাকার লকগেট খুলে দিলে জল জমার সমস্যা কমে। তাতে পানিহাটির জল জমার সমস্যারও সমাধান হতে পারে। কিন্তু, নিজেদের এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় ভারী বৃষ্টিতে ওই লকগেট খুলতে দিতে রাজি নন স্থানীয় মানুষ। এই জটিলতার জেরে জল জমার সমস্যায় ভুগছে পানিহাটির অনেক এলাকা। সমস্যার সমাধানে অতীতে দুই পুরসভা যৌথ ভাবে ব্যবস্থা নিতে চাইলেও জট কাটেনি।
পানিহাটির বাসিন্দাদের অভিযোগ, মঙ্গলবারের বৃষ্টির পরে বুধবারও জলে ডুবে থেকেছে আগরপাড়া অঞ্চলের ঊষুমপুর বটতলা, মহাজাতি নগরের মতো একাধিক এলাকা। জল দাঁড়িয়ে থাকার অভিযোগ এসেছে সোদপুর, ঘোলা, এইচবি টাউন, তীর্থভারতী, মুরলীধর পল্লির মতো এলাকাগুলি থেকে।
রাজ্যের নতুন পুরমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের দাবি, নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে স্থানীয় পুরসভাগুলি নিজেদের মতো করে কাজ করতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘‘পানিহাটি পুরসভাকে এ দিন থেকে কার্যকর করা হয়েছে। এলাকায় জল জমার সমস্যা খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুর কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy