পাঁচশো এবং হাজার টাকার নোট বাতিলের কারণে পুরসভার পরিকাঠামো উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ থমকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, এর ফলে বিশেষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে নিকাশি, পাইপলাইনের কাজ, রাস্তা সারাই প্রভৃতি। বুধবার তিনি জানান, নোট সঙ্কট যে অবস্থায় পৌঁছেছে তাতে শ্রমিকদের মজুরি মেটানোর মতো পরিস্থিতি নেই। অনেক ঠিকাদারই সে সব সমস্যার কথা তাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন। এই অবস্থায় পুর পরিষেবার কাজও ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করছেন শোভনবাবু।
সমস্যা কোথায়?
শোভনবাবুর কথায়, ‘‘প্রথমে বর্ষা, পরে মাস দুয়েক ধরে পুজো-পর্ব সবে সারা হল। এখন থেকে আগামী মাস চারেক পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করার প্রকৃত সময়। কিন্তু নোট বাতিলের ঘটনা এ বার রাস্তাঘাট সারানো, মাটির নীচ থেকে পলিমাটি তোলার কাজ, নিকাশির পাইপ লাইন বসানোর মতো কিছু জরুরি কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’ মেয়র বলেন, প্রথমত, ঠিকাদারদের হাতে টাকা নেই। দ্বিতীয়ত, ওই সব কাজের জন্য প্রতিদিনই হাজার খানেক শ্রমিক কাজ করেন শহরজুড়ে। তাঁদের মজুরি দিতে হয় দিনের শেষে। কিন্তু নোট সঙ্কটের কারণে শ্রমিকদের পাওনা টাকা দেওয়ার মতো নোটের জোগান তাঁদের নেই। তাই কাজ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, এমনিতেই পুরসভার ভাঁড়ারে টান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারদের বিলও আটকে। বকেয়া বিলের দাবিতে প্রায়ই অর্থ দফতরের শরণাপন্ন হন তাঁরা। তা সত্ত্বেও পুরসভার বরাত পাওয়া কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। নিকাশি দফতরের এক ঠিকাদারের কথায়, পুরসভায় নিযুক্ত এমন ঠিকাদারও রয়েছে যাঁকে দৈনিক দেড় লক্ষ টাকারও বেশি মজুরি মেটাতে হয়। এখন নোট সঙ্কট হওয়ায় চরম ফাঁপড়ে পড়তে হয়েছে আমাদের।’’ এতে কাজ শেষ হতে দেরি তো হচ্ছেই, উল্টে খরচও বাড়ছে বলে জানান তিনি।
পুরসভার রাস্তা দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, প্রতি বছর নতুন রাস্তা বানানো, ম্যাস্টিক করা এবং খানাখন্দে ভরা রাস্তা সারানোর জন্য গড়ে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা খরচ করে পুরসভা। কাজ মূলত শুরু হয় বর্ষা এবং পুজোর পরে। মাটির নীচ থেকে পলি তোলার কাজে খরচ হয় ৩৫ কোটি টাকারও বেশি। ওই সব কাজ শুরু হতেই নোট বিপত্তি ঠিকাদারদের ভাবিয়ে তুলেছে। কী ভাবে সেই কাজ সময়ে তোলা যাবে তা নিয়ে চিন্তায় ঠিকাদার এবং পুর প্রশাসন।
তা হলে করণীয় কী?
মেয়রের কথায়, ‘‘আমরা অসহায়। কাজ আটকে যাচ্ছে জানি। তবুও কিছু করার নেই।’’ তিনি জানান, ঠিকাদারের টাকা জোগানোর দায় পুরসভার নয়। আবার পুর প্রশাসন সব কিছু জেনেশুনে ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য চাপ দিতে পারে না। এই অসহায় অবস্থার জন্য কার্যত কেন্দ্রীয় সরকারকেই দায়ী করছেন মেয়র। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে হচ্ছে সমাজের সব স্তরের মানুষজনকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy