Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
আদিগঙ্গার দূষণ

খাটাল মালিকদের বিরুদ্ধে পুর-নালিশ

আমজনতার চোখে চেতলার খাটালের সঙ্গে লেক গার্ডেন্সের খাটালের ফারাক নেই। ফারাক চোখে পড়ছে শুধু কলকাতা পুরসভার! তাই আদিগঙ্গার পাশে থাকা খাটাল উচ্ছেদে মরিয়া হয়ে মামলা ঠুকেছেন পুরকর্তারা। পুরসভা সূত্রে খবর, শীঘ্রই ওই খাটাল উচ্ছেদে অভিযানও হতে পারে।

শিবাজী দে সরকার
শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৬ ০১:৪১
Share: Save:

আমজনতার চোখে চেতলার খাটালের সঙ্গে লেক গার্ডেন্সের খাটালের ফারাক নেই। ফারাক চোখে পড়ছে শুধু কলকাতা পুরসভার! তাই আদিগঙ্গার পাশে থাকা খাটাল উচ্ছেদে মরিয়া হয়ে মামলা ঠুকেছেন পুরকর্তারা। পুরসভা সূত্রে খবর, শীঘ্রই ওই খাটাল উচ্ছেদে অভিযানও হতে পারে। কিন্তু লেক গার্ডেন্স-সহ শহরের বাকি খাটালগুলি চলছে রমরমিয়েই।

পুরসভা সূত্রে খবর, বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় আদিগঙ্গার পাড়ের সৌন্দর্যায়ন হচ্ছে। ওই কাজের অন্যতম শর্ত আদিগঙ্গার দূষণ রোধ। আর দূষণের পিছনে এই খাটাল ও শুয়োরের খামারের অবদান জাতীয় পরিবেশ আদালতের মামলায় উঠে এসেছে। তাই সেগুলি সরানোর কথা ভাবা হয়েছে। পরিবেশবিদদের একাংশ অবশ্য বলছেন, শহরের অন্য খাটালগুলিও তো দূষণ ছড়ায়। তাই প্রশ্ন উঠেছে, পুরসভার লক্ষ্য শহরের সামগ্রিক দূষণ বন্ধ করা, না কি বিশ্বব্যাঙ্কের শর্তপূরণ?

কলকাতায় খাটাল নিষিদ্ধ হয়েছে অন্তত ১৫ বছর আগে। গোড়ায় খাটাল উচ্ছেদ শুরু হলেও দীর্ঘদিন নড়াচড়া হয়নি। ফলে খাটাল থাকলেও তা ‘নজরে’ পড়ত না পুরকর্তাদের। কিন্তু আদিগঙ্গার দূষণ নিয়ে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করার পরে ফের খাটাল প্রসঙ্গ ওঠে। খাটাল সরানো নিয়ে পরিবেশ আদালতে একাধিক বার তিরস্কারও সহ্য করতে হয়েছে পুরসভাকে। খাটালের দূষণ ঠেকাতে বেশ কিছু নির্দেশও দেয় পরিবেশ আদালত।

কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, আদিগঙ্গার পাড় ধরে পাঁচটি থানা এলাকায় গোটা পঞ্চাশেক খাটাল রয়েছে। যাতে গরু-মোষের সংখ্যা ১২৫। জঞ্জাল অপসারণ দফতরের সহায়তায় গত জুন থেকে একাধিক বার ওই খাটাল মালিকদের নোটিস দিয়ে খাটাল ও শুয়োরের খামারগুলি সরাতে বলা হয়। কিন্তু তাঁরা মানেননি। এমনকী পরে ফের কিছুদিন সময় দিয়েও ফল হয়নি। জাতীয় পরিবেশ আদালত বারবার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও খাটাল সরাতে না পেরে চরম অস্বস্তিতে পুর-প্রশাসনও।

পুলিশ সূত্রে খবর, আদালতের ওই নির্দেশকে সামনে রেখেই খাটাল মালিকদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে পুরসভা। চার জন খাটাল মালিকের বিরুদ্ধে তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করে তদন্ত করছে চেতলা থানা। পুরসভা সূত্রের দাবি, বিধানসভা ভোটের আগেই খাটাল উচ্ছেদ নিয়ে পুলিশি সাহায্য চেয়ে লালবাজারের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুরসভা ও প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের কর্তারা। কিন্তু ওই সময় পুলিশ আইনশৃঙ্খলা-সহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকায় উচ্ছেদ অভিযান হয়নি। এর পরে আদিগঙ্গার দু’পাড়ের খাটাল কোথায় সরানো হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। বর্তমানে স্থির হয়েছে নদিয়ার কল্যাণী ও হরিণঘাটায় সরানো হবে ওই খাটাল। চেতলা ছাড়াও আদিগঙ্গা সংলগ্ন বাকি কয়েকটি থানায় খাটাল ও খামার সরানো নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

পুরসভা সূত্রে খবর, মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সব জানানো হয়েছে। তিনি শহর থেকে খাটাল সরাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। দু’এক দিনের মধ্যেই পুর-কমিশনারের নেতৃত্বে জরুরি বৈঠক হবে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট দফতরের মধ্যে। পুরসভার এক আমলা জানান, ২২ সেপ্টেম্বরের আগেই শহর থেকে খাটাল সরানোর চেষ্টা হচ্ছে। জাতীয় পরিবেশ আদালতের ভর্ৎসনার মুখে আর পড়তে চায় না পুর-প্রশাসন। কিছু দিনের মধ্যেই উচ্ছেদের কাজ শুরু হয়ে যাবে। তা শুরু হবে আদিগঙ্গার পাশ থেকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy