(উপরে) গ্রাফিতি আঁকা প্রায় শেষ বিদু (বাঁ দিকে) ও আরাত্রিকার। (নীচে) নেটফ্লিক্সের প্রকাশিত ভিডিয়োয় ওই গ্রাফিতি দেখছেন ‘টোকিয়ো’ উর্সুলা
বার বার দেখেও বিশ্বাস হচ্ছিল না। যাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে নিজেদের ক্যাম্পাসের দেওয়ালে তাঁরা গ্রাফিতি এঁকেছিলেন, বিশ্ববিখ্যাত ওয়েব সিরিজ় ‘মানি হাইস্ট’-এর চরিত্র, সেই টোকিয়ো স্বয়ং ওই গ্রাফিতির প্রশংসা করছেন! সোমবার সকালে ভিডিয়োয় তা দেখার পর থেকেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই পড়ুয়ার উচ্ছ্বাস বাঁধ মানছে না।
দর্শনে স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের আরাত্রিকা বসু এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে এ বছরই স্নাতকোত্তর পাশ করা বি চন্দ বিদু— দু’জনে মিলেই এ বছরের জানুয়ারিতে এঁকেছিলেন ওই গ্রাফিতি। শিল্পী সালভাদোর দালির মুখের আদলে একটি মুখোশের ওই ছবি ইতিমধ্যেই ওয়েব সিরিজ় মানি হাইস্টের দৌলতে সারা দুনিয়ায় সাড়া ফেলেছে। এ দিন সকালে ওই সিরিজ়ের পরিবেশক সংস্থা নেটফ্লিক্স একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ভারতে ওই সিরিজ়ের ভক্তদের নানা শিল্পকলার ছবি দেখছেন টোকিয়ো চরিত্রের অভিনেত্রী উর্সুলা করবেরো। তাতে ছিল যাদবপুরের ওই দালি-মুখোশের গ্রাফিতিও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পেন্টিং ক্লাবের সদস্য আরাত্রিকা বললেন, ‘‘সকালেই ক্লাবের গ্রুপে ওই ভিডিয়ো দেখি। এত খুশি হয়েছিলাম, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। স্বপ্নেও ভাবিনি, এমনটা হবে। আমাদের আঁকা টোকিয়োর কাছে পৌঁছে যাবে!’’ বিদুও বললেন, ‘‘আজ ক্যাম্পাসে পৌঁছনোর পর থেকেই অনেকে এসে ভিডিয়োটার কথা বলেছে।’’ সমাজমাধ্যমেও এ দিন যাদবপুরের প্রাক্তন ও বর্তমান বহু পড়ুয়া ওই ভিডিয়ো শেয়ার করেন।
ভিডিয়োটিতে শোনা যাচ্ছে, যাদবপুরের গ্রাফিতি দেখে উর্সুলা মুগ্ধ হয়ে বলে উঠলেন, ‘ওয়াও!’ সঙ্গে স্প্যানিশে বললেন, ‘‘প্রতিরোধ দীর্ঘজীবী হোক।’’ ‘লা রেসিস্ট্যান্সিয়া’, অর্থাৎ প্রতিরোধ। মানি হাইস্টে বার বারই এসেছে রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে এই প্রতিরোধের কথা। যাদবপুরের দালি-মুখোশের গ্রাফিতির নীচেও লেখা রয়েছে সে কথা। আরাত্রিকা বললেন, ‘‘অনেক ওয়েব সিরিজ়ই আমাদের প্রিয়। কিন্তু সব সিরিজ়ে তো এমন প্রতিরোধের কথা থাকে না। আবার যাদবপুরও রাজনৈতিক, সামাজিক যে কোনও অনুশাসনের বিরুদ্ধে বরাবর প্রতিরোধ করে এসেছে। তাই মনে হয়েছিল, এই ছবির জন্য যাদবপুরের দেওয়ালের চেয়ে উপযুক্ত ক্যানভাস আর কিছু হয় না।’’
বিদু জানালেন, একটা গোটা দিন লেগেছিল তাঁদের, ওই গ্রাফিতি করতে। সকাল থেকে শুরু করার পরে শেষ হতে বিকেল গড়িয়ে যায়। তাঁর কথায়, ‘‘দু’জনে মিলে পুরো কাজটা করেছি। তবে মূল কাজটা আরাত্রিকাই করেছে। ৭০ শতাংশ কৃতিত্ব ওরই।’’ এখন যাদবপুর ক্যাম্পাসে ওই গ্রাফিতি একটা দ্রষ্টব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। পড়ুয়াদের প্রায়ই দেখা যায়, সেটির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে। আরাত্রিকা বললেন, ‘‘ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে সে সব ছবি দেখে খুব ভাল লাগত। তবে আজকের প্রাপ্তি সে সব কিছুকে ছাড়িয়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy