মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউট স্কুল। ফাইল চিত্র।
স্কুলের ছাদে ফাটল ধরিয়েছে বটগাছের শিকড়। সেই ফাটল চুঁইয়ে জল গিয়ে পড়ে দোতলার ক্লাসঘরে। ঘরের মেঝের অবস্থাও তথৈবচ। মেঝে এমন ভাবে ভেঙেছে যে, জল চুঁইয়ে পড়ে নীচের ক্লাসঘরে। একতলা ও দোতলার বেশিরভাগ ঘরই ভাঙাচোরা।
এমনই অবস্থা বড়বাজারের মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউট স্কুলের, যা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। এখানে শিক্ষকতাও করেছেন তিনি। স্কুলে বিদ্যাসাগরের ব্যবহৃত চেয়ারও রয়েছে। জানা গিয়েছে, ১৮৬৪ সালে শঙ্কর ঘোষ লেনের মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন (মেন) স্থাপিত হয়। তার কয়েক বছর পরেই বড়বাজারের প্রসন্নকুমার ঠাকুর স্ট্রিটে এই স্কুলের প্রতিষ্ঠা করেন বিদ্যাসাগর। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্কুলটি ভাল চললেও ছাত্রছাত্রীর অভাবে কয়েক বছর আগে বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি স্কুলশিক্ষা দফতরের উদ্যোগে ওই স্কুলের দু’টি ঘরে শুরু হয়েছে একটি প্রাথমিক স্কুল। ইংরেজি মাধ্যমে নার্সারি ও প্রথম শ্রেণির পঠনপাঠন হয় সেখানে। তবে স্কুলের বেহাল দশা কাটেনি।
বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজ্য জুড়ে শুরু হতে চলেছে নানা অনুষ্ঠান। সম্প্রতি বিদ্যাসাগর কলেজে তাঁর দু’টি নতুন মূর্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ওই কলেজে আর্থিক অনুদানের কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ফলে প্রশ্ন উঠছে, বিদ্যাসাগরের প্রতিষ্ঠিত ও স্মৃতিবিজড়িত এই স্কুলের এমন ভগ্নদশা থাকবে কেন। প্রাথমিক স্কুলটির দুই শিক্ষিকা জানাচ্ছেন, পড়ুয়াদের জন্য শৌচালয়ও নেই সেখানে। একটি শৌচালয় অর্ধেক তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। এক শিক্ষিকা বলেন, ‘‘এ বছর যারা প্রথম শ্রেণি, তারা পরের বছর দ্বিতীয় শ্রেণিতে যাবে। কিন্তু বসবে কোথায়? স্কুলের এতটাই ভগ্ন দশা যে, পড়ানোর মতো একটা ক্লাসঘর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’’
বিদ্যাসাগরের স্মৃতিবিজড়িত এই স্কুলটির যে অচিরেই সংস্কার প্রয়োজন, তা স্বীকার করেছেন শিক্ষা দফতরের কর্তারা। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্না বলেন, ‘‘শীঘ্রই ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে স্কুল ভবনের পরীক্ষা করানো হবে। ভবনটি সারানোর উপযুক্ত হলে তবেই কাজ করানো হবে। না হলে প্রাথমিক স্কুলটিকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় স্কুলটির সংস্কার করার চেষ্টা হচ্ছে।’’ স্থানীয় কাউন্সিলর ইলোরা সাহা বলেন, ‘‘স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এলাকার প্রচুর পড়ুয়াকে দূরের স্কুলে যেতে হয়। স্কুলের সংস্কার হলে এলাকার ছোটরা উপকৃত হবে।’’
মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন (মেন)-এর প্রাক্তন শিক্ষক নবকুমার কর্মকার বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগরের স্কুলের এই বেহাল দশা বড়ই লজ্জার।
স্কুলটিকে সংস্কার করে বাংলা মাধ্যম হিসেবে রক্ষা করতে হবে। তা হলে বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষার জন্য যে আন্দোলন করেছিলেন, তাকে সম্মান জানানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy