Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Firhad Hakim

Firhad Hakim: পুকুর সংরক্ষণ নীতি নিয়ে মেয়রের মন্তব্যে বিতর্ক

পুকুর সংরক্ষণ নিয়ে মেয়রের এই বক্তব্যকে ‘অবৈজ্ঞানিক’ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:২৮
Share: Save:

রাজ্যের পুকুর সংরক্ষণ নীতি নিয়ে ‘ক্ষোভ’ প্রকাশ করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। যা নিয়ে পরিবেশ মহলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কারণ, পুকুর সংরক্ষণে রাজ্য পরিবেশ দফতরের নীতি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন মেয়র।

গত শনিবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে পুকুর সংরক্ষণ নিয়ে এক নাগরিকের অভিযোগ শোনার সময়ে মেয়র কিছুটা বিরক্তির সুরেই বলেন, ‘‘এক দিকে পরিবেশ দফতর বলছে, পুকুর রাখো। অন্য দিকে, তারা পুকুরের পাড় বাঁধাতে দেবে না। কী করব?’’ একটু থেমে তিনি এ-ও যোগ করেন, শুধুমাত্র বল্লা পাইলিংয়ের কারণে পুকুরের পাড় বাঁধানোর ফলে কয়েক বছর অন্তর তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, শালবল্লা পাইলিং হল পুকুরপাড়ের মাটির ক্ষয় রোধে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। শালগাছের গুঁড়ি পাড়ের চার পাশ দিয়ে পুঁতে দেওয়া হয়। যা মাটির ক্ষয় রোধ করার পাশাপাশি আশপাশের আবর্জনা পুকুরের জলে পড়া থেকেও আটকায়।

অথচ, পুকুর সংরক্ষণ নিয়ে মেয়রের এই বক্তব্যকে ‘অবৈজ্ঞানিক’ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের মতে, পুকুরের নিজস্ব বাস্তুতন্ত্র রক্ষার কারণেই পুকুরপাড় সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো উচিত নয়। বাঁধালে তা শুধু পুকুর সংলগ্ন ‘ইকোটোন জ়োনে’র (দু’টি বাস্তুতন্ত্রের মধ্যবর্তী জায়গা, টেরেস্ট্রিয়াল ও অ্যাকোয়াটিক জ়োনের মধ্যবর্তী অংশ) ভারসাম্য নষ্ট করে তা-ই নয়, বরং এর ফলে জীববৈচিত্র ধ্বংস হয়ে যায়। রাজ্য পরিবেশ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘পুকুরের ধারেই জলজ প্রাণী, উদ্ভিদ থাকে। সিমেন্ট দিয়ে বাঁধালে তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ে।’’

সে দিনের ‘টক টু মেয়র’-এ আরও একটি অভিযোগ উঠেছিল। তা হল, পুকুরের আবর্জনা পরিষ্কার করে অনেক সময়েই তা পুকুরের পাশে রেখে দেন পুর সাফাইকর্মীরা। যে কারণে কিছু দিন পরে সেই জঞ্জাল ফের পুকুরের জলেই গিয়ে মেশে। পুর প্রশাসনের বক্তব্য, সিমেন্ট দিয়ে পাড় বাঁধালে জঞ্জাল পুকুরে গিয়ে ফের মেশাও আটকানো যাবে। যার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, নিজেদের কাজের ‘ব্যর্থতা’ ঢাকতে পুরসভা ভুল যুক্তি দিচ্ছে। এক পরিবেশবিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘প্রথম কথা, জঞ্জাল পরিষ্কার করে কেন তা পুকুরের পাশেই রাখা হবে? সেটা তো রাখার কথা নয়। আর সেটা আটকানোর জন্য পুকুরের পাড় বাঁধাতে হবে, এটা কোনও যুক্তি হতে পারে না।’’

পরিবেশবিজ্ঞানী তপন সাহা জানাচ্ছেন, সার্বিক জীববৈচিত্র ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষার জন্য শালবল্লা দিয়ে পুকুরের পাড় বাঁধানো ছাড়া অন্য কোনও বিকল্প নেই। কারণ, ইকোটোন জ়োনে গাছপালা বেশি থাকে। তাঁর কথায়, ‘‘তা ছাড়া পুকুরের ধারে শতাধিক প্রজাতি থাকে। পাড় বাঁধালে সেই প্রজাতি, জলজ প্রাণী, পোকামাকড়, উদ্ভিদ-সহ সার্বিক জীববৈচিত্র ধ্বংস তো হবেই, সেই সঙ্গে তা পুকুরের ক্ষেত্রেও বিপর্যয় ডেকে আনবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Firhad Hakim Mayor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy