— প্রতীকী ছবি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় বুধবারই আরও ছ’জন পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা মহম্মদ আরিফও। যে আরিফ মৃত পড়ুয়ার পড়ে যাওয়ার মুহূর্তে তাঁর হাত ধরে ফেলেছিলেন কিন্তু তা ফস্কে যায় বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন ছাত্ররা। তা হলে কেন গ্রেফতার করা হল? অসমর্থিত একটি সূত্রের দাবি, যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়ার পরেই গ্রেফতারির সিদ্ধান্ত নেয় কলকাতা পুলিশ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া আরিফ গ্রেফতার হয়েছেন পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে। স্থানীয় সূত্রের খবর, যাদবপুরের প্রধান ছাত্রাবাসে আরিফ যেখানে থাকতেন, তার নীচের তলেই থাকতে এসেছিলেন মৃত পড়ুয়া। পুলিশের কাছে যাদবপুরের ছাত্রদের একাংশ দাবি করেছিলেন, ঘটনার দিন রাতে নীচ থেকে চিৎকার, চেঁচামেচি শুনে আরিফ নামেন। ছাত্রদের একাংশের দাবি, সেই সময় অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন মৃত ছাত্র। তিনিও ওই পড়ুয়াকে শান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হন। পড়ুয়াদের একাংশ পুলিশের কাছে এ-ও বয়ান দিয়েছিলেন যে, ওই পড়ুয়া যখন ছাত্রাবাসের বারান্দা থেকে নীচে পড়ে যান তখন আরিফই তাঁর হাত ধরে ফেলেছিলেন। কিন্তু ঘর্মাক্ত হাত কোনও ভাবে ফস্কে যায় এবং ওই পড়ুয়া সোজা নীচে এসে পড়েন। ছাত্রদের একটি অংশ পুলিশের কাছে আরও জানিয়েছিলেন, পড়ে যাওয়ার মুহূর্তে আরিফ যখন ওই পড়ুয়ার হাত ধরে ফেলেছিলেন, তখন বারান্দায় জামাকাপড় শুকোতে দেওয়ার দড়ি তাঁর কপালে ঘষে যায়। এখানে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল, পুলিশ যে ছাত্রদের সঙ্গে আগেই কথা বলেছিল, সেই তালিকায় ছিলেন আরিফও।
পুলিশ সূত্রে খবর, আরিফ-সহ যাদবপুরের ছাত্ররা বয়ানে দাবি করেছিলেন, চিৎকারের আওয়াজ শুনে উপরের তল থেকে নীচে নেমেছিলেন আরিফ। কিন্তু তদন্তে উঠে এসেছে, চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে নয়, ঘটনার আগে এবং পরে সেখানেই উপস্থিত ছিলেন আরিফ। পুলিশ জানতে পেরেছে, হস্টেলের তিন তলা থেকে পড়ার সময় যে ১২-১৩ জন আবাসিক এবং পড়ুয়ারা সেই তলে উপস্থিত ছিলেন, তাঁদেরই অন্যতম আরিফ।
ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এ নিয়ে মোট ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পড়ুয়াদের পাশাপাশি রয়েছেন কয়েক জন প্রাক্তনীও। পুলিশ জানতে পেরেছে, যাদবপুরের প্রধান ছাত্রাবাসে অন্তত ২০ জন ছাত্র এমন থাকেন, যাঁরা আর ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই নন।
বুধবারই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এবং ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে তলব করেছে লালবাজার। দুপুর ৩টেয় তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম)। সেই বিকেলেই রাজ্যপাল, যিনি পদাধিকারবলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সিভি আনন্দ বোস বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসছেন। প্রসঙ্গত, বুধবার গভীর রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচ থেকে নগ্ন ও অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া যায় বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে। বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তার পর থেকেই ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছে দেশের অন্যতম সেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy