সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। —ফাইল চিত্র।
‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের ইডি হেফাজতের মেয়াদ শেষে তাঁকে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে পেশ করা হয়। সুজয়কৃষ্ণকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখার আবেদন জানায় ইডি। অন্য দিকে জামিনের আর্জি জানান সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবী। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে নগর দায়রা আদালতের বিচারক সুজয়কে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার সুজয়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে আদালতে ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি জানান, হাওয়ালার মাধ্যমে বিভিন্ন সংস্থায় টাকা ঘুরেছে। ইডির অভিযোগ, একটি সংস্থার মাধ্যমে এক কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। হাওয়ালার মাধ্যমে বিভিন্ন খাতে ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। সুজয়কৃষ্ণ চারটি সংস্থা নিয়ন্ত্রণ করতেন বলেও আদালতে দাবি করেছে ইডি। হাওয়ালার টাকা আবাসন শিল্পে বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইডির আইনজীবী। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির দাবি, ১০০টিরও বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে।
অন্য দিকে, সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবী সেলিম রহমান এবং নাজমুল আলম সরকার তাঁদের মক্কেলেকে জামিনের আর্জি জানিয়ে ইডির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এর আগে সুজয়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে ইডি লিখেছিল যে, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত বহিষ্কৃত তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষের কাছ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। কিন্তু বুধবারের অভিযোগপত্রে প্রসঙ্গটির উল্লেখ না থাকায়, সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন যে, নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্যই কি আগে ওই দাবিটি করেছিল ইডি? সুজয়কৃষ্ণের আইনজীবীরা আরও জানান, কোনও আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। ইডির আইনজীবী পাল্টা সওয়ালে বলেন, “এটা মানি ট্রেল (আর্থিক লেনদেন)-এর ক্লাসিক কেস।”
সুজয়কৃষ্ণ-ঘনিষ্ঠ সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরাকে আগেই কয়েক বার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন ইডি আধিকারিকেরা। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছিল, সুজয়কৃষ্ণের নির্দেশেই রাহুল ফোন থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুছে দিয়েছিলেন। রাহুলকে সেই নির্দেশ নাকি দিয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণই। এই বিষয়ে বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণ ইডির হাতে এসেছে। সুজয় ফোন করে রাহুলকে তথ্য মোছার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বর পরীক্ষা করতে চাইছে ইডি। এই বিষয়ে আদালতের প্রয়োজনীয় অনুমতি মিলেছে। প্রয়োজনে ইডি আধিকারিকেরা সুজয়কৃষ্ণকে জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন। জেলে সিসি ক্যামেরা লাগানো থাকবে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তলের সূত্রেই ‘কালীঘাটের কাকু’র কথা প্রকাশ্যে এসেছিল। নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তাপস মণ্ডলও সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছিলেন, অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় কুন্তল নাকি আশ্বাস দিয়ে বলতেন, ‘‘কালীঘাটের কাকুর সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে। চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’ ইডি সূত্রে জানা গিয়েছিল, পরে গোপাল দলপতি এবং তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, কুন্তলের ওই ‘কালীঘাটের কাকু’ রাজ্যের এক প্রভাবশালী শীর্ষ নেতার সংস্থার চিফ এগ্জ়িকিউটিভ অফিসার (সিইও)। তার পর থেকেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ‘আতশকাচের তলায়’ সুজয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy