এক হাতে সংস্কার, অন্য হাতে রাজস্ব!
নদী, খাল সংস্কারে এই পদ্ধতিই নিয়েছে রাজ্য সেচ দফতর। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলায় এই কাজ চালুও করেছে তারা। এ বার শহরাঞ্চলেও সেই পথ বাছতে চাইছে সরকার। সেচ
দফতরের খবর, নদী, খাল থেকে পলি তোলার কাজে ঠিকাদার সংস্থাকে মাটি তোলার জন্য সরকারকে টাকা দিতে হবে। নদীগর্ভ থেকে ওঠা মাটি, বালি সেই সংস্থা বিক্রি করে আয় করতে পারবে।
রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের সেচ ব্যবস্থার জন্য প্রায় এক দশকের কাছাকাছি বিশেষ টাকা দেয়নি। তিনি বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশিত পথে ঘুরে দাঁড়ানোর পদ্ধতি হিসেবেই এ বার থেকে নদী-খালের সংস্কারের জন্য ঠিকাদারের থেকে রয়্যালটি নেওয়া হবে। সেই অর্থে রাজ্য সরকারের কোষাগার পুষ্ট হবে। প্রয়োজনে সেচ দফতরও সরকারের থেকে আর্থিক সাহায্য পাবে।’’
সেচ দফতর সূত্রের খবর, নদী সংস্কারের সময়ে ওঠা মোটা দানার বালি অন্যত্র ব্যবহারের জন্য সরকারের আলাদা প্রকল্প আছে। কিন্তু নদী-খাল থেকে উত্তোলিত মাটির পুনর্ব্যবহারের জন্য পরিকল্পনামাফিক কোনও ক্ষেত্র রাজ্যে এ পর্যন্ত নেই। বর্তমানে সেচ দফতর ঠিকাদার সংস্থাকে টাকা দিয়ে নদী কিংবা খাল কাটায়। তার পরে সে সব থেকে ওঠা পলি কিংবা মাটি যত্রতত্র পড়ে থাকে, কিছু অংশ মাটির সঙ্গে ধুয়ে ফের খালে কিংবা নদীতে ফিরে যায়। তাই নদীগর্ভ বা খাল সংস্কারের উদ্দেশ্যপূরণ হয় না।
সেচ দফতরের কর্তাদের মতে, কেলেঘাই, কপালেশ্বরী, ইছামতী-সহ বড় বড় নদী থেকে মাটির সঙ্গে যে সূক্ষ্ম সাদা বালি উঠে আসে, তার চাহিদা রয়েছে ইটভাটা-সহ নানা সরকারি প্রকল্পের কাজে। তাই ঠিকাদার সংস্থা নিজের গরজে সেই মাটি বিক্রি করে দেবে। তাতে নদী কিংবা খালের পাশে মাটি জমবে না। ইটভাটার জন্য যে ভাবে জমি থেকে মাটি কেটে
নেওয়ার অভিযোগ ওঠে, তাতেও রাশ টানা যেতে পারে। বাংলার বাড়ি প্রকল্পে যে ১২ লক্ষ ৩৬ হাজার বাড়ি তৈরি হওয়ার কথা, সেখানে মাটির বিপুল চাহিদা এ ভাবে পূরণ করা সম্ভব হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কেলেঘাই নদীতে ইতিমধ্যে ১৭ কিলোমিটার সংস্কারের কাজ এ ভাবে রয়্যালটি নিয়ে বরাত দিয়ে মাটি তোলার কাজ চালুও করা হয়েছে বলে সেচ দফতর জানিয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)